শেষের পাতা
রওশনের কাউন্সিলে ফিরোজ রশীদ-বাবলা
স্টাফ রিপোর্টার
১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, সোমবারজাতীয় পার্টিতে নাটকীয়তা অব্যাহত। এবার রওশন এরশাদের পাশে দাঁড়ালেন জাতীয় পার্টির প্রভাবশালী নেতা কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদ ও সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা। গতকাল রওশন এরশাদ নিজ বাসায় সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন। এ সময় প্রথমবার রওশন এরশাদের সঙ্গে দেখা যায় কাজী ফিরোজ রশীদকে। এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন আরেক কো-চেয়ারম্যান বাবলা। এ সময় রওশন এরশাদ পূর্ব ঘোষিত কাউন্সিলের (৯ই মার্চ) আহ্বায়ক কমিটি গঠন করেন। যদিও রওশনের কমিটি গঠনকে আমলে নিতে চান না জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু। তিনি বলেন, কেউ জাতীয় পার্টির নামে ব্র্যাকেটবন্দি আরেকটা দল করতেই পারেন। সেখানে আমরা বাধা দিতে পারি না। অন্যদিকে রওশনের সংবাদ সম্মেলনে যোগ দেয়ায় বহিষ্কার করা হয়েছে আবু হোসেন বাবলাকে।
জাতীয় পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান বেগম রওশন এরশাদ দশম জাতীয় সম্মেলন কমিটি ঘোষণা করেন। এতে আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন কাজী ফিরোজ রশীদ, কো-আহ্বায়ক সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, যুগ্ম আহ্বায়ক গোলাম সারোয়ার মিলন, সদস্য সচিব শফিকুল ইসলাম সেন্টু এবং কোষাধ্যক্ষ’র দায়িত্ব পালন করবেন এডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে রওশন এরশাদ বলেন, আগামী ৯ই মার্চ দশম জাতীয় কাউন্সিল আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছি। এতে কাজী ফিরোজ রশীদ এবং আবু হোসেন বাবলাসহ প্রতিষ্ঠাকালীন নেতৃবৃন্দ এবং এরশাদভক্ত অগণিত নেতাকর্মী আমার পাশে দাঁড়িয়েছেন। আমরা সবাই মিলে সুন্দর একটি জাতীয় সম্মেলন উপহার দিয়ে জাতীয় পার্টিতে আবার প্রাণশক্তি ফিরিয়ে আনতে চাই। কারণ দেশ ও জাতির জন্য রাজনীতি অঙ্গনে জাতীয় পার্টির প্রয়োজনীয়তা এখন অপরিহার্য।
সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা বলেন, যে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল তাদের (কাদের-চুন্নু) সেই দায়িত্ব থেকে তারা অনেক দূরে। গণতন্ত্রকে সুসংগঠিত করার লক্ষ্যে আগামী কাউন্সিলে যে সম্মেলন হবে তাতে প্রতিটি জেলা উপজেলা থেকে নেতাকর্মীরা যোগ দেবেন। আগামীতে আমরা জাতীয় পার্টিকে সুসংগঠিত করবো বেগম রওশন এরশাদের নেতৃত্বে। জিএম কাদেরকে উদ্দেশ্য করে বাবলা বলেন, তিনি দল চালান, দেশের থেকে দল বড় আর দলের থেকে বউ বড়। দলের থেকে স্ত্রী বড় হলে সেই দল চলতে পারে না।
কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, সংসদে কারা সরকারি দল, বিরোধী দল বোঝা যায় না। জাতীয় পার্টির এখন যে অবস্থা এমন বিপর্যয় আগে কখনো আসে নাই। বছরের পর বছর আমরা বললাম ডানে যাবো। যখন ডানে রাস্তা খালি তখন বামে রওয়ানা দিলাম। এটা রাজনীতি নয়। দলের ডুবুডুবু অবস্থায় হাল ধরলেন বেগম রওশন এরশাদ। আগামী ৯ই মার্চের কাউন্সিল হলে দলের টার্নিং পয়েন্ট। যারা নীরব হয়েছিল তারা সবাই আবার জাতীয় পার্টিতে ফিরে আসবে।
রওশনপন্থিদের মহাসচিব কাজী মামুনুর রশীদ বলেন, তারা (কাদের-চুন্নু) দলের যে অবস্থা করেছেন তাতে তাদের জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত। যারা পরীক্ষিত নেতা তারা রওশন এরশাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। আগামী ৯ই মার্চ বিপ্লব হবে। গোটা দেশ প্রস্তুত রওশন এরশাদের হাত শক্তিশালী করতে।
এই সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম সেন্টু, প্রেসিডিয়াম সদস্য গোলাম সারোয়ার মিলন, সুনীল শুভ রায় প্রমুখ।
রওশনপন্থি অংশের কাউন্সিলের বিষয়ে জাপা মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বনানীস্থ চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, আমরা কোনো কাউন্সিল ডাকিনি। বাইরে কে কাউন্সিল ডাকলো বা না ডাকলো, এরসঙ্গে আমাদের সম্পর্ক নেই। জাতীয় পার্টির নামে ৪-৫টা দল আছে। জাতীয় পার্টি মঞ্জু গ্রুপ, জাতীয় পার্টি কাঁঠাল গ্রুপ, সাইকেল মার্কা, মই মার্কা, এমন অনেক গ্রুপ আছে। আরেকটা হতেই পারে। সবার স্বাধীনতা আছে। কেউ জাতীয় পার্টির নামে ব্র্যাকেটবন্দি আরেকটা দল করতেই পারেন। সেখানে আমরা বাধা দিতে পারি না।
সংবাদ সম্মেলনে কাজী ফিরোজ রশীদ ও সৈয়দ আবু হোসেন বাবলার উপস্থিতি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে চুন্নু বলেন, ফিরোজ রশীদকে আগেই অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। বাবলাকে অব্যাহতি দেয়া হয় নাই। উনি যদি মূল দলের সঙ্গে থাকতে না চান, তাহলে আমার মনে হয় উনার পদত্যাগ করা দরকার ছিল। কেন করেন নাই, আমি জানি না। যেহেতু তিনি অন্য দলে গেছেন, সেখানে বক্তব্য রেখেছেন, এটা দলীয় শৃঙ্খলাবিরোধী। এ বিষয়ে চেয়ারম্যান সিদ্ধান্ত নেবেন।
এই কথা বলার ঘণ্টা দুয়েকের মাথায় বহিষ্কার করা হয় বাবলাকে। জাপার যুগ্ম দপ্তর সম্পাদক মাহমুদ আলম স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের দলীয় গঠনতন্ত্রে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সৈয়দ আবু হোসেন বাবলাকে পার্টির কো-চেয়ারম্যান পদসহ দলীয় সকল পদ-পদবি থেকে অব্যাহতি প্রদান করেছেন।
Mr G.M.Kader should decide which comes to him first , party or his wife.
জাতীয় পার্টির রাজনিতীতে হালে পানি পাবে না যতদিন না আদর্শ রাজনিতীতে ফিরে আসবে ।