বিশ্বজমিন
নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ তুলে পদত্যাগ করলেন রাওয়ালপিন্ডির কমিশনার, গ্রেপ্তার
মানবজমিন ডেস্ক
(১ বছর আগে) ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, শনিবার, ৪:৪৭ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৭:২৬ অপরাহ্ন

নির্বাচনে অনিয়মের প্রতিবাদে পদত্যাগ করেছেন পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডি বিভাগের কমিশনার লিয়াকত আলি চাথা। শনিবার তিনি পদত্যাগ করার পর পরই পুরো পাকিস্তানে এ নিয়ে তোলপাড় হয়। এক পর্যায়ে রাওয়ালপিন্ডি সিটি পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন জিও নিউজ। শনিবার রাওয়ালপিন্ডি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এক সংবাদ সম্মেলনে পদত্যাগের ঘোষণা দেন লিয়াকত আলি। তিনি বলেন, রাওয়ালপিন্ডি বিভাগে ৮ই ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে জালিয়াতি হয়েছে এবং তিনি এর দায় স্বীকার করেন। বলেন, পরাজিতের ভোট নিয়ে বিজয়ী প্রার্থীকে ৫০ হাজার ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী করেছি আমরা। রাওয়ালপিন্ডি বিভাগের মানুষদের সঙ্গে আমি অবিচার করেছি। সংবাদ সম্মেলনের পর তিনি পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন। তার আগে তিনি বলেন, আমার বিভাগের রিটার্নিং অফিসারদের কাছে ক্ষমা চাই। তাদেরকে আমি যা করার নির্দেশনা দিয়েছিলাম, তার জন্য অধীনস্তরা কান্না করেছেন। তিনি দাবি করেন, এখনও নির্বাচনের স্টাফরা ব্যালট পেপারের ওপর ভুয়া স্ট্যাম্প লাগিয়ে দিচ্ছে। তার ভাষায়- রাওয়ালপিন্ডির কাচেহরিচকে যা করেছি, তার মধ্য দিয়ে আমরা দেশের সঙ্গে অন্যায় করেছি। জোর দিয়ে তিনি দাবি করেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং বিদেশে অবস্থানরত পাকিস্তানের চাপে ছিলেন। এমনকি এদিন সকালে তিনি আত্মহত্যারও উদ্যোগ নিয়েছিলেন।
গুরুতর এই অভিযোগ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) নেতা শেরি রেহমান। তিনি বলেন, নির্বাচনের ১০ দিন পরে রাওয়ালপিন্ডির কমিশনারের চেতনা ফিরেছে। তার ভিতর প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। কমিশনার বলেছেন তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং বিদেশে থাকা পাকিস্তানিদের চাপে ছিলেন। এর ফলে পুরো অঞ্চলের নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন সৃষ্টি হয়েছে তার এই অভিযোগ। অভিযোগের বিষয়ে কমিশনারের উচিত তথ্যপ্রমাণ দেয়া । তিনি এর জন্য প্রধান বিচারপতিকে দায়ী করেছেন। নির্বাচন কমিশনেরও উচিত ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দেয়া।
ওদিকে লিয়াকত আলির উত্থাপিত অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে পাকিস্তান নির্বাচন কমিশন। সিনিয়র এই কর্মকর্তার ভোট জালিয়াতির এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে পাঞ্জাব সরকারও। জিও নিউজকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের তথ্যমন্ত্রী আমির মীর বলেন, এটা কোনো অপরাধের মুখোশ উন্মোচন বা স্বীকারোক্তি নয়। এটা হলো একটি বিশ্বাসযোগ্যতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করার মতো কথা। লিয়াকত আলি যে অভিযোগ করেছেন দৃঢ়তার সঙ্গে তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি বলেন, যে ব্যক্তি আত্মহত্যার কথা বলেন তিনি একজন ‘সাইকোপ্যাথ’। আগামী ১৩ই মার্চ তার অবসরে যাওয়ার কথা। অবসরে যাওয়ার কয়েক সপ্তাহ আগে তিনি রাজনৈতিক ভাওতাবাজি করছেন। আমার মনে হয় তিনি রাজনৈতিক ক্যারিয়ার গড়তে চান। তার ভাষায়- কোনো সুস্থ মানুষ কি এ রকম অভিযোগ করতে পারেন? বিশেষ করে একজন ব্যক্তি, যাকে কমিশনারের পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। নির্বাচনের দিন যখন এসব হচ্ছিল, তিনি সেদিন কেন কথা বলেননি? কেন তিনি নির্বাচনের ১০ দিন পরে এসে মুখ খুললেন? এ বিষয়ে অবশ্যই তদন্ত হবে। প্রথমেই তার মানসিক স্বাস্থ্যের পরীক্ষা হবে। তদন্ত করে দেখা উচিত কীভাবে এত গুরুত্বপূর্ণ পদে এজাতীয় মানুষকে দায়িত্ব দেয়া হয়।
লিয়াকত আলির অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন পাঞ্জাবের তত্ত্বাবধায়ক মুখ্যমন্ত্রী মোহসিন নাকভি। তদন্তের জন্য একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এক্ষেত্রে একটি নিরপেক্ষ তদন্ত করা হবে।
পাঠকের মতামত
The February 8 elections were rigged and he accepted responsibility. If it is true, he is a hero and better than other commissioners.
I don't see any heroism in this repenting issurs, he is a national betrayed of Pakistan and he should be punished as well.
That's the difference Between "Bangladesh Election Commission" and "Pakistan Election Commission". (Shameless & Patriotism).
এমন মানুষ বাংলাদেশে থাকলে গর্ব করা যেত