অনলাইন
জেলেনস্কির সঙ্গে শেখ হাসিনার বৈঠক পশ্চিমাদের উদ্যোগে: রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত
কূটনৈতিক রিপোর্টার
(১ বছর আগে) ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ২:১৬ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:০৪ পূর্বাহ্ন

জার্মানির মিউনিখে নিরাপত্তা সম্মেলনের সাইড লাইনে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈঠক পশ্চিমাদের উদ্যোগে হচ্ছে বলে মনে করেন ঢাকায় নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার মন্টিটস্কি। বৃহস্পতিবার সকালে কূটনৈতিক সংবাদদাতা সমিতি (ডিকাব)-এর সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে এক প্রশ্নের জবাবে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে জার্মানিতে ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কিই বৈঠক করতে চেয়েছেন। ওই বৈঠকে নিজের ফর্মুলা নয় বরং জেলেনস্কি পশ্চিমা ফর্মুলা দেবেন। যা তার ভন্ডামি ছাড়া আর কিছু নয়। এ সময় রুশ রাষ্ট্রদূত আরও বলেন মিয়ানমারে অশান্ত পরিস্থিতি তৈরিতে অনেকের ভূমিকা আছে। চীন ও ভারত অস্ত্র বিক্রি করছে সেখানে। মন্টিটস্কি বলেন, পরিতাপের বিষয় হলেও সত্য, কোন কোন পশ্চিমা রাষ্ট্র বাংলাদেশের স্বপ্নের প্রকল্প রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রকেও প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টা করছে।

ডিকাব টক অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব এবং সঞ্চালনা করে সংগঠনের সভাপতি নুরুল ইসলাম হাসিব। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান অপু। অনুষ্ঠানে পশ্চিমাদের কড়া সমালোচনা করে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত বলেন, তারা ইউক্রেন নিয়ে কথা বলে। কিন্তু পশ্চিমারা গাজা প্রশ্নে নিশ্চুপ। এটি তাদের দ্বৈতনীতির প্রকাশ। বাংলাদেশের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক-বোঝাপড়ার বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে মস্কোর প্রতিনিধি বলেন, বাংলাদেশকে ভারতের চোখে দেখে না রাশিয়া। ঢাকা নিয়ে মস্কোর নিজস্ব লিখিত নীতিমালা আছে। ঠিকমতো সমঝোতা করতে পারলে ভারতের মত বাংলাদেশেও কম দামে তেল গ্যাস সরবরাহ করবে রাশিয়া। তবে এ নিয়ে এখনো আগ্রহ দেখায়নি ঢাকা। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়ে আলেকজান্ডার মন্টিটস্কি বলেন, আমাদের অবস্থান খুব স্পষ্ট। আমরা দ্রুত প্রত্যাবাসনের পক্ষে। কিন্তু মিয়ানমারের যে ভয়াবহ পরিস্থিতি বিরাজমান তাতে প্রত্যাবাসন কবে শুরু হবে তা ধারণা করাই মুশকিল হয়ে পড়েছে। ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়’ বঙ্গবন্ধু প্রণীত বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতিকে সব সময়ে রাশিয়া সমর্থন করে বলেও জানান রাষ্ট্রদূত।
উল্লেখ্য, পশ্চিমা দুনিয়ার অবজারভেশনের মধ্যে রাশিয়া, বেইজিং ও দিল্লির সর্বাত্মক সমর্থনে অনুষ্ঠিত বহুল আলোচিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে গঠিত নতুন সরকারের প্রধান হিসেবে প্রথম বিদেশ সফরে এখন জার্মানীর পথে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চারদিনের ওই সফরের দ্বিতীয় দিন অর্থাৎ শনিবার তিনি মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনের সাইড লাইনে (কনফারেন্স ভেন্যুর মিটিং রুমে) ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকে বসছেন। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শুরুর পর এটি দুই নেতার প্রথম বৈঠক।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী যুদ্ধ বন্ধের তাগিদ দিবেন বলে বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। জেলোনস্কির সঙ্গে বৈঠক রাশিয়া-বাংলাদেশ ঐতিহাসিক সম্পর্কে কোনো প্রভাব ফেলবে না বলেও মনে করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। অভিন্ন অভিমত ব্যক্ত করেন রুশ রাষ্ট্রদূত মন্টিটস্কি। তবে তিনি বিষয়টি ব্যাখ্যা করেন নিজের মতো করেন।
স্মরণ করা যায়, কেবল ইউক্রেন প্রেসিডেন্টই নয়, জার্মান চ্যান্সেলর এবং ডেনমার্ক ও ডাচ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে পৃথক বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাছাড়া ভারত ও বৃটেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জার্মানীতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।
পাঠকের মতামত
কেউ কারো বন্ধু হয়না একটা দেশের বেলায়। সব চলে হিসেব নিকেশে।
রাশিয়া বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু । পশ্চিমারা কখনও বন্ধু হয় না .
কাজি সাহেব সত্য বলছেন কিন্তু বর্তমানে রাশিয়া আমাদের সাথে ব্যবসা ছাড়া অন্যকিছু করে না।রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়া আমেরিকা আমাদের পক্ষ থাকলেও রাশিয়া, ভারত, চীন তাদের স্বার্থ দেখছে।
রাশিয়া বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু । পশ্চিমারা কখনও বন্ধু হয় না। মুক্তিযুদ্ধের সময় আমেরিকা বাঙালী হত্যার মদদ দিতে সপ্তম নৌবহর পাঠিয়েছিল। তখনই রাশিয়া বাঙালীকে রক্ষার জন্য অষ্টম নৌবহর পাঠিয়েছিল। রাশিয়াকে বাদ দিয়ে বা তাদের ক্ষতি হয় এমন কিছুই আমেরিকার বা পশ্চিমাদের অনুরোধে করা থেকেও বিরত থাকতে হবে । মানবিক সাহায্য করার দরকার হলে করা যেতে পারে । অথবা যুদ্ধ বন্ধের জন্য সংলাপ করা যেতে পারে । যুদ্ধ সবার জন্য ক্ষতিকর। এই যুদ্ধের প্রভাবে সারা বিশ্বের ক্ষতি হয়েছে এবং হবে।