ঢাকা, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

অনলাইন

বন্যা কেড়ে নিলো মৎস্য খামারি হাবিবুরের স্বপ্ন

এম.এ রাজ্জাক, তাহিরপুর (সুনামগঞ্জ) থেকে

(১ বছর আগে) ২৯ জুন ২০২২, বুধবার, ২:৩৮ অপরাহ্ন

mzamin

তাহিরপুরে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় কেড়ে নিলো মৎস্য ও পোল্টি খামারি হাবিবুর রহমানের স্বপ্ন। উপজেলার উত্তর বড়দল ইউনিয়নের বোরখাড়া গ্রামের মৃত চাঁন মিয়ার ছেলে তিনি। অনেক স্বপ্ন নিয়ে এক একর ৬১ শতাংশ জায়গায় একটি পুকুর করেন তিনি। কয়েক দফায় পুকুরের মধ্যে বিভিন্ন প্রকার মাছও চাষ করেন। একই সঙ্গে পুকুরের মাচার উপর পোল্ট্রি মুরগির খামার এবং পুকুর পাড়ে বাচ্চার ফার্ম গড়ে তুলেন তিনি। কয়েক দফা বাদাঘাট কৃষি ব্যাংক থেকে এসএমই লোনও নেন। কিন্তু তার স্বপ্ন বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। সর্বনাশা বন্যায় শেষ করে দিয়েছে তাকে। মৎস্য ও পোল্ট্রি খামারি হাবিবুর এখন কিভাবে ব্যাংকের লোন পরিশোধ করবেন এই ভেবে চোখে মুখে অন্ধকার দেখছেন। শুধু হাবিবুর রহমান নন এ চিত্র পুরো উপজেলার মাছ চাষি ও পোল্ট্রি ফার্ম খামারিদের।

উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, এ উপজেলায় সরকারি হিসেবে ছোট বড় ৪৩৫টি পুকুর রয়েছে।

বিজ্ঞাপন
সব পুকুরই বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। গেল মাসের ১৪ই জুন বৃহস্পতিবার রাতের বয়াল বন্যায় পুকুর তলিয়ে এবং ভেসে প্রায় ২ কোটি ৭২ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। 

সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার উত্তর বড়দল ইউনিয়নের বোরখাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সম্মুখে রাস্তার পাশে এক একর ৬১ শতাংশ জমির মধ্যে হাবিবুর রহমান ও পোল্ট্রি ফার্ম নামে একটি খামার গড়ে তুলেন হাবিবুর রহমান। চলতি বন্যার পানিতে পুকুরটির পাড় বিভিন্ন স্থানে ভেঙে গেছে এবং পোল্ট্রি খামারের মাচাটি পুকুরের মধ্যে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। 

পুকুর পাড়ে হাবিবুর রহমান জানান, ২০১৯ সালে বাদাঘাট কৃষি ব্যাংক থেকে প্রথমে এসএমই লোন নেন দুই লাখ টাকা। এই টাকা দিয়েই পুকুর ও পোল্টি ফার্ম এক সঙ্গে গড়ে তুলেন তিনি। ব্যবসাও ভাল হচ্ছিল। ২০২০-২১ সালে পুরাতন টাকা ব্যাংকে জমা দিয়ে নবায়ন করে পুনরায় তিন লাখ টাকা লোন নেন তিনি। এই লোনের টাকা দিয়েই পুকুরে ২ লাখ টাকার বিভিন্ন পোনা মাছ ও এক হাজার পোল্ট্রি মোরগ দিয়ে ফার্ম করেন তিনি। বডিং ফার্ম থেকে ছোট ছোট বাচ্চা বড় হয়ে দুই হাজারে পরিণত হয় তার। পুকুরের মাছগুলোও বড় হয়েছিল। আশা ছিল কিছুদিনের মধ্যে পুকুর থেকে মাছ বিক্রি এবং মুরগি বিক্রি করে লাভবান হয়ে ব্যাংক লোন পরিষদ করবেন। কিন্তু চলতি বন্যায় সব শেষ করে দিয়েছে। হাবিবুর জানান, তার পুকুর থেকে ৫ লাখ টাকার মাছ এবং ৩ লাখ টাকার পোল্ট্রি মোরগ সহ ৮ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এখন তিনি কিভাবে ব্যাংকের লোন পরিশোধ করবেন এই ভেবে রাতদিন কাটছে না। তিনি এখন ৫ মেয়ে ও তিন ছেলে নিয়ে বেকায়দায় পড়েছেন।

তাহিরপুর উপজেলা মৎস্য অফিসার সারোয়ার হোসেন জানান, এবারের বন্যায় উপজেলার ছোট বড় প্রায় ৪৩৫টি পুকুর পানিতে তলিয়ে এবং ভেঙ্গে ২ কোটি ৭২ লাখ টাকার মাছ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মাঠের সচিত্র প্রতিবেদন তুলে ধরে আমরা সরকারের কাছে তথ্য পাটিয়েছি।

তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রায়হান কবির বলেন, মৎস্য খামারি হাবিবুরের মতো উপজেলার অনেকেই চলতি বন্যায় পুকুর, পোল্ট্রি মুরগি হারিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ক্ষয়ক্ষতির প্রতিবেদন আমরা উপর মহলে পাঠাচ্ছি। সরকারের পক্ষ থেকে সময়সাপেক্ষে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন করা হবে।

 

 

অনলাইন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

অনলাইন সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status