ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

শেষের পাতা

রপ্তানি আয়ে ৫০ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক

অর্থনৈতিক রিপোর্টার
২৯ জুন ২০২২, বুধবার
mzamin

চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসেই (জুলাই-মে) দেশ থেকে পণ্য রপ্তানি হয়েছে ৪৭ বিলিয়ন (৪ হাজার ৭০০ কোটি) ডলারেরও বেশি মূল্যের। অর্থবছরের (জুন মাস) শেষ হতে বাকি আর মাত্র একদিন। এদিকে চলতি মাসের প্রথম ২৫ দিনে শুধু পোশাক রপ্তানিই হয়েছে ৩২০ কোটি ডলারের। সে হিসাবে চলতি অর্থবছরেই ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ৫০ বিলিয়ন (৫ হাজার কোটি) ডলারের মাইলফলক অর্জন করছে বাংলাদেশের রপ্তানি আয়। করোনা মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের বাধা অতিক্রম করে এই লক্ষ্যে পৌঁছলো বাংলাদেশ। সংশ্লিষ্টরা বলেন, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের বছরেই দেশের রপ্তানি প্রথমবারের মতো ৫০ বিলিয়ন ডলার ছাড়ানোর বিষয়টি একটি প্রতীকী ঘটনা, যা উদীয়মান রপ্তানি কেন্দ্র হিসেবে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান নিয়ে বিশেষ বার্তা বহন করছে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্যমতে, ২০২১-২২ অর্থবছরের জুলাই থেকে মে পর্যন্ত বিশ্ববাজারে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি হয়েছে ৪ হাজার ৭১৭ কোটি ৪৬ লাখ ৩০ হাজার ডলারের পণ্য। যার মধ্যে তৈরি পোশাক পণ্য রপ্তানির অর্থমূল্য ছিল ৩ হাজার ৮৫২ কোটি ১১ লাখ ৬০ হাজার ডলার। 

এ হিসেবে রপ্তানি হওয়া পণ্যের প্রায় ৮২ শতাংশই তৈরি পোশাক।  বিজিএমই’র হিসাব অনুযায়ী, চলতি মাসের প্রথম ২৫ দিনে পোশাক রপ্তানি হয়েছে ৩২০ কোটি ডলারের। এ পরিসংখ্যান বিবেচনায় নিলে এরইমধ্যে চলতি অর্থবছরের মোট রপ্তানি ৫ হাজার কোটি ডলার অতিক্রম করেছে।

বিজ্ঞাপন
সার্বিক পরিসংখ্যান বিবেচনায় নিলে এ অঙ্ক আরও বাড়বে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন খাতসংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, রপ্তানি প্রবৃদ্ধির এই ধারা অব্যাহত থাকবে।  রপ্তানি ৫০ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক অর্জনকে বাংলাদেশের জন্য বড় প্রাপ্তি হিসেবেই দেখছেন নীতিনির্ধারক, ব্যবসায়ী ও অর্থনীতিবিদরা। একইসঙ্গে এ অগ্রযাত্রা টেকসই করতে সরকার ও ব্যক্তি খাতকে আরও নিবিড়ভাবে কাজ করে যেতে হবে বলে মত দিয়েছেন তারা। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান এএইচএম আহসান বলেন, গত এক দশকে রপ্তানির প্রবৃদ্ধি অনেক আশাব্যঞ্জক। 

মাঝে করোনার কারণে দুই বছরের সংকট না হলে এতদিনে রপ্তানি ৮০ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি চলে যেতো। সে হিসেবে বাংলাদেশের রপ্তানি খাত এ পর্যন্ত যথেষ্ট ভালো করেছে। এখন আমাদের মূল চ্যালেঞ্জ হলো রপ্তানিতে বৈচিত্র্য আনা। এ চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করা যাবে।  এদিকে আগামী অর্থবছরের রপ্তানি লক্ষ্য নির্ধারণে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে প্রাথমিকভাবে লক্ষ্য নির্ধারণ হয়েছে, আগামী অর্থবছরে শুধু পোশাক খাতের রপ্তানি হবে ৫০ বিলিয়ন ডলারের। সভার আলোচনায় উঠে আসে, চলতি অর্থবছরে পণ্য ও সেবা মিলিয়ে মোট ৫ হাজার ১০০ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানির লক্ষ্য ধরা হয়েছিল, যা এরইমধ্যে ৫ হাজার ৮০০ কোটি ডলার হয়েছে। ন্যূনতম ১০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ধরে আগামী অর্থবছর রপ্তানি ৬ হাজার ৫০০ কোটি ডলারে দাঁড়াতে পারে। সে হিসেবে আগামী অর্থবছরের জন্য এর কাছাকাছি পরিমাণে লক্ষ্য নির্ধারণ হবে।  তৈরি পোশাক খাতের সংগঠন বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, পোশাক খাতের মাধ্যমেই রপ্তানি ৫০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাওয়া অনেক বড় অর্জন। পণ্যে বৈচিত্র্য আনার পাশাপাশি রপ্তানি বাজার সম্প্রসারণ এবং শিল্পকে একটি টেকসই অবস্থানে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমরা প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছি।  

অর্থমূল্য বিবেচনায় বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি হওয়া শীর্ষ তিন পণ্য- পোশাক, পাট ও পাটজাত এবং চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য। ২০২০-২১ অর্থবছরে দেশের মোট রপ্তানির ৮৬.৫ শতাংশজুড়েই ছিল পণ্য তিনটি। এ আধিপত্য বজায় রয়েছে চলতি অর্থবছরেও। তবে মোট রপ্তানিতে বড় অবদান রাখা পণ্যের তালিকায় যুক্ত হয়েছে হোম টেক্সটাইল। চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম ১১ মাস শেষে পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ৩৪.৮৭ শতাংশ, হোম টেক্সটাইল ৪১.৩ এবং চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানিও বেড়েছে ৩১.৮৪ শতাংশ। পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি কমেছে ৩.১৯ শতাংশ।

শেষের পাতা থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

শেষের পাতা সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status