অর্থ-বাণিজ্য
বিজিএমইএ নির্বাচন: ভোটার তালিকা নিয়ে আপত্তি
অর্থনৈতিক রিপোর্টার
(৮ মাস আগে) ৩০ জানুয়ারি ২০২৪, মঙ্গলবার, ১১:৫৮ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:৩০ পূর্বাহ্ন
বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) দ্বি-বার্ষিক নির্বাচনের ভোটার তালিকা নিয়ে আপত্তি তুলেছেন সংগঠনটির আসন্ন নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ফয়সাল সামাদ। বলেছেন, বিজিএমইএতে ভুয়া সদস্য তৈরি করা হয়েছে, যাদের বৈধ ব্যবসা নেই।
মঙ্গলবার ঢাকা ক্লাবে আয়োজিত মিট দ্য প্রেসে তিনি এ অভিযোগ করেন। ফয়সাল সামাদ নির্বাচনকেন্দ্রিক জোট 'ফোরাম' প্যানেলের প্রার্থী। অনুষ্ঠানে পোশাক শিল্পের চলমান কঠিন বাস্তবতার চিত্র তুলে ধরেন এ ব্যবসায়ী।
তালিকায় ‘কয়েকশ ভুয়া ভোটার’ যুক্ত করা হয়েছে অভিযোগ তুলে ফোরামের দলনেতা ফয়সাল সামাদ বলেন, ভুয়া ভোটারদের তালিকা থেকে বাদ দিতে তারা সবরকম আইনি ব্যবস্থা নেবেন।
এবারে নির্বাচনে ফোরাম ও সম্মিলিত পরিষদের ব্যানারে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। ভোটাররা নতুন পরিচালনা পর্ষদের জন্য ৩৫ জন পরিচালক নির্বাচিত করবেন। তাদের মধ্য থেকে সংগঠনের সভাপতি ও অন্যান্য অফিস বেয়ারার ঠিক করা হবে।
গত ১৯শে ডিসেম্বর তফসিল ঘোষণার মধ্য দিয়ে বিজিএমইএ'র দ্বি-বার্ষিক নির্বাচনের (২০২৪-২৫) আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। ইতিমধ্যে ভোটার তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে, মোট ভোটার সংখ্যা ধরা হয়েছে ২ হাজার ৪৯৬ জন। তফসিল অনুযায়ী, আগামী ৯ই মার্চ ভোটগ্রহণ হবে। নির্বাচনে অংশ নেয়ার জন্য ফেব্রুয়ারির ৩রা তারিখের মধ্যে মনোনয়নপত্র দাখিল, ৭ই ফেব্রুয়ারির মধ্যে মনোনয়ন প্রত্যাহারের তারিখ ঠিক করা হয়েছে।
ফোরামের দলনেতা ও সুরমা গার্মেন্টেসের পরিচালক ফয়সাল সামাদ অভিযোগ করেন, কোভিড, রাশিয়া ইউক্রেইন যুদ্ধসহ নানা কারণে গত দুই-তিন বছরে অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। অথচ এরই মধ্যে আরও ৪ শতাধিক ব্যক্তিকে বিজিএমইএর সদস্য করা হয়েছে।
আমরা মনে করি নির্বাচনকে প্রভাবিত করার জন্য বর্তমান পর্ষদ নিজেদের লোকদের বেআইনিভাবে এখানে সদস্য করেছে। এভাবে চললে তো নির্বাচনে প্রকৃত শিল্প মালিকদের মতামতের প্রতিফলন ঘটবে না। এত বিপুল সংখ্যক ভুয়া ভোটার থাকলে সেখানে সঠিক নির্বাচন কীভাবে সম্ভব।
ফয়সাল সামাদ বলেন, যাদের ভোটার হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে তাদের অনেকের টিআইএন নাম্বারও ঠিক নেই বলে আমরা দেখতে পেলাম। তাহলে এসবের উদ্দেশ্য কী? আমরা ৪ শতাধিক ভোটারের ক্ষেত্রে অসঙ্গতি দেখে অভিযোগ করেছিলাম। সেখানে চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় মাত্র ৬৭ জনের নাম বাদ দেয়া হয়েছে। এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে এই ৬৭ জন কীভাবে ভোটার হলেন। তাদের বাদ যাওয়া থেকেই প্রমাণ হয়, এখানে অনেক ভুয়া ভোটার যুক্ত করা হয়েছিল।
এ পরিস্থিতিতে কী করবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা যথারীতি আপিল করে ন্যায়বিচার চাইবো। ন্যায় বিচারের জন্য যা যা করা দরকার তা অবশ্যই আমরা করবো।
গত ১৮ই জানুয়ারি আসন্ন নির্বাচনের প্রাথমিক ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছিল নির্বাচন পরিচালনা বোর্ড। সেখানে ঢাকা অঞ্চলে ২০৫১ জন ও চট্টগ্রাম অঞ্চলে ৫১২ জন ভোটার তালিকায় স্থান পায়। মোট ভোটার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৫৬৩ জন।
৩০শে জানুয়ারি মঙ্গলবার প্রকাশিত চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় ঢাকা অঞ্চলে ২ হাজার ৩২ জন এবং চট্টগ্রাম অঞ্চলে ৪৬৪ জন ভোটারের নাম দেখা যায়। অর্থাৎ চূড়ান্ত তালিকায় বাদ গেছে মোট ৬৭ জন (ঢাকায় ১৯ ও চট্টগ্রামে ৪৮ জন)।
ফয়সাল সামাদ বলেন, ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধির পরও পোশাকের কোনো মূল্য বাড়ায়নি ক্রেতারা। গত ডিসেম্বরে ৬৬ জন শিল্প মালিকের মধ্যে চালানো এক জরিপে এমন মতামত দিয়েছেন প্রায় ৮০ শতাংশ উদ্যোক্তা। বিপরীতে এক বছর আগের তুলনায় কাস্টমস ও বন্ড সংক্রান্ত খরচ বেড়েছে ৪৭.৮৫ শতাংশ।
জরিপের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ক্রয়াদেশ না থাকায় সক্ষমতার ২৭.৫ শতাংশ কাজে লাগাতে পারেনি উদ্যোক্তারা। এমনকি আগামী ৪ মাসের ক্রয়াদেশেও ৩৭.৭৯ শতাংশ ফাঁকা থাকছে তাদের কারখানা।