প্রথম পাতা
অন্যরকম অনুভূতি
নূরে আলম জিকু, মাওয়া থেকে ফিরে
২৭ জুন ২০২২, সোমবারছবি: জীবন আহমেদ
কাকডাকা ভোর। তখনো সূর্যোদয় হয়নি। শীতল বাতাস বইছে। ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে ধরে ছুটে চলছে মোটরবাইক, প্রাইভেট কার, জিপ, বাস, ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান। থামছে মাওয়া প্রান্তে। ক্রমেই বাড়ছে যানবাহনের সংখ্যা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন নিয়ন্ত্রণ করছেন যান। এক্সপ্রেসওয়ের একপাশে যানবাহনের দীর্ঘ লাইন। প্রায় ২ কিলোমিটার সড়ক পুরোটা দখল হয়ে গেছে। কিছু সংখ্যক বাস, ট্রাকে চলছে পদ্মা জয়ের গান।
এতে গাড়ির চাপ বাড়তে থাকে। সরজমিন দেখা যায়, সেতু উদ্বোধনের পর গতকাল সকালে খুলে দেয়া হয় পদ্মা সেতু। প্রথম দিনে পদ্মা সেতু পাড়ি দিতে সেতুর টোলপ্লাজায় ভিড় করেছেন উৎসুক জনতা। মাওয়া প্রান্তে টোলপ্লাজার ৬টি বুথ দিয়ে সেতুতে প্রবেশ করে যানবাহন। এতে উচ্ছ্বসিত চালক ও যাত্রীরা। অনেকে সেতুতে উঠে মাঝপথে গাড়ি কিংবা বাইক থামিয়ে ছবি তুলছেন, ভিডিও করছেন। কেউ কেউ টিকটক ভিডিওসহ নাচানাচি করছেন। তাদের অনেকেই কয়েক কিলোমিটার পর্যন্ত পায়ে হেঁটে স্বপ্নের পদ্মা সেতুতে উচ্ছ্বাস করছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কিছু সময় পরপর তাদেরকে সরিয়ে দিয়ে গেলে ফের নতুন করে সেতুর উপর ভিড় করেন অন্যরা। এদিন সেতুতে চলাচলকারী যাত্রীবাহী বাসও প্রমত্তা পদ্মার বুকে দাঁড়িয়ে থাকা ব্রিজের উপর থামতে দেখা গেছে। বেশ কয়েকটি বাসের যাত্রীরা বাস থেকে নেমে ছবি তুলছেন। এ ছাড়া বাসযাত্রীদের বেশির ভাগ মানুষ সেতু পার হওয়ার সময় বাসের জানালা দিয়ে ছবি ও ভিডিও করতে দেখা গেছে।
এদিন বেশির ভাগ মানুষই ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে আসেন। কোনো কাজ না থাকলেও দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে সেতু দেখতে আসেন তারা। সেতুতে ওঠার জন্য টোল পরিশোধও করছেন। তাদের অনেকেই বলছেন- টোল নয় আনন্দ কিনছি। দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ করছি। মিরপুর থেকে আসা শাকিল আহমেদ বলেন, আমার ইচ্ছা ছিল প্রথম দিন পদ্মা সেতুতে মোটরবাইক চালাবো। আজ স্বপ্ন পূরণ হলো। আমার স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে আসলাম। দুজনেই বেশ উপভোগ করছি। এমন সময় হয়তো আর পাবো না। কোনো প্রয়োজন ছাড়াই আসা। টোল দিয়েছি। এতে কোনো কষ্ট নেই। আমরা যে আনন্দ পেয়েছি এটা টাকা পয়সা দিয়ে কেনা যায় না। নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা মোখলেসুর রহমান বলেন, সেতু খুলে দেয়ার প্রথমদিনে পরিবার-পরিজন নিয়ে গ্রামের বাড়ি বরিশাল যাওয়ার ইচ্ছা ছিল। এখন খুশি লাগছে। ছেলেমেয়ে নিয়ে পদ্মা সেতু পার হয়ে বাড়ি যাচ্ছি। রাতে আবার এই সেতু দিয়েই ঢাকায় আসবো। পদ্মা সেতু খুলে দেয়ার প্রথমদিনের স্মৃতি ধরে রাখতে অনেকেই সেতু পাড়ি দিয়ে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলায় যাতায়াত করেছেন। মো. সাদেক নামে মল্লিক বাসের একযাত্রী বলেন, আগে ফেরিতে করে যাতায়াত করতাম। ঘাটের ভোগান্তিসহ ফেরির জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হতো।
যাতায়াতে ভোগান্তির কথা চিন্তা করে বাড়িতে যেতে মন চাইতো না। সেতু আমাদের যাতায়াতে সবচেয়ে বড় সুবিধা হয়েছে। আগেই পরিকল্পনা করে রেখেছিলাম, সেতু খুলে দেয়ার প্রথমদিন বাড়ি যাবো। আজ আমার ইচ্ছা পূরণ হয়েছে। সড়ক পথে বাড়ি যাচ্ছি। এখন ইচ্ছা করলেই দিনরাত সব সময় আসা-যাওয়া করতে পারবো। শরীয়তপুরের নড়িয়ার ৫০ বছর বয়সী মিলন মাতব্বর। সেতুর উপর পরিবার পরিজন নিয়ে ছবি তুলছেন। তিনি বলেন, একটা সেতুর অভাবে আমার বাবাকে ঢাকায় চিকিৎসা করাতে পারিনি। বাবা বিনা চিকিৎসায় মারা গেছে। এম্বুলেন্সে করে নেয়ার পথে ফেরিতে মারা যায়। এখন আর কাউকে ফেরির জন্য দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হবে না। ভোগান্তি সহ্য করতে হবে না। আজ আমরা খুশি। তাই পুরো পরিবার নিয়ে সেতু দেখতে আসলাম। এদিকে সেতু খুলে দেয়ার পর সুফল পেতে শুরু করেছে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ। গতকাল কোনো ধরনের ভোগান্তি ছাড়াই কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই নিজ নিজ গন্তব্যে পৌঁছান যাত্রীরা।
অনেকেই জানিয়েছেন ঢাকা থেকে বরিশাল পৌঁছাতে সময় লেগেছে সাড়ে চার ঘণ্টা। যদিও এর আগে একই রুটে সময় লাগতো ৮/৯ ঘণ্টা। অন্যদিকে বিভিন্ন জেলা থেকে ঢাকায় আসছেন অনেকে। গতকাল দুপুর ১২টার দিকে কলকাতা থেকে আসা কয়েকটি ট্রাক জাজিরা প্রান্তে টোল দিয়ে পদ্মা সেতু পার হতে দেখা গেছে। শনিবার ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর গতকাল জনসাধারণের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয় সেতু। অনেকেই রাত থেকে সেতু পারাপারের জন্য অপেক্ষা করেন। কার আগে কে সেতু পাড়ি দিবেন তা নিয়ে চলে রীতিমতো প্রতিযোগিতা। সেতুর মাওয়া প্রান্তে সবার আগে ঢাকা মেট্রো-ল-১৯-৮৩৫৮ নম্বরধারী মোটরসাইকেল নিয়ে পদ্মা পাড়ি দেন জসিম উদ্দিন নামের একজন। শরীয়তপুর যাবো। এ জন্য সবার আগে রাতেই মাওয়া চলে আসি। সেতু খুলে দেয়ার পর আমি প্রথম বাইকার হিসেবে যাত্রা করলাম। এতে আমি খুব খুশি। এটা একটা রেকর্ড। ঢাকা মেট্রো-ট-১৮-৭২২২ নম্বরে ট্রাক নিয়ে সবার আগে পদ্মা পাড়ি দেন শিপু নামের এক চালক। ট্রাক চালকদের মধ্যে আমিও প্রথম টোল দিয়ে পদ্মা সেতু পাড়ি দিলাম। এম্বুলেন্সের মধ্যে প্রথমে টোল দেয় ঢাকা মেট্রো-ছ-৭১-১৩০৯ নম্বরের এম্বুলেন্সটি।
চালক আশিক বলেন, ভালো লাগছে। অল্প সময়ে রোগী নিয়ে যাতায়াত করতে পারবো। ঢাকা মেট্রো- ট-১৪-৫৪২৩ নম্বরের কাভার্ডভ্যান নিয়ে প্রথম টোল দেন চালক ফেরদৌস। তিনি বলেন, আমি বুঝি নাই যে, প্রথমে আমি কাভার্ডভ্যান নিয়ে ব্রিজ পার হতে পারবো। আমি মাল নিয়ে যাবো মাদারীপুর। গত তিন দিন ধইরা ঘাটে বইসা ছিলাম। পরে মালিক বললো ব্রিজ দিয়া পার হইয়া যাইতে। এই জন্য আসলাম। আমার খুব খুশি লাগতাছে; আমার কাভার্ড ভ্যান প্রথম ব্রিজে উঠলো। ঢাকা মেট্রো-গ- ১৪-৪৭৭১ নম্বরের প্রাইভেট কার নিয়ে টোল দেয় রাজু নামের এক চালক। প্রথম পিকআপভ্যান নিয়ে টোল দেয় ঢাকা মেট্রো-ন-১৮-১৬০৪ নম্বরের চালক রাশেদুল। বাসের মধ্যে ঢাকা মেট্রো-ব-১৫-৪৬২৪ নম্বরের এনা বাস। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাসটির চালক মো. বাবুল বলেন, আমার বাস প্রথম ব্রিজ দিয়া যাবে এটা আমার ভাগ্য। অনেক স্বপ্ন ছিল। পূরণ হয়েছে। সকালে পদ্মা সেতু খুলে দেয়ার পর যাত্রীবাহী প্রথম বাস হিসেবে মূল সেতুতে প্রবেশ করে। বাসটিকে বিভিন্ন রংয়ের ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। জানা যায়, এ বাসের প্রথম যাত্রীরা হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকভিত্তিক বাসপ্রেমীদের সংগঠন বিডি বাস লাভার-এর সদস্য। রাজধানীর শাহবাগ থেকে বাসটি ফরিদপুরের ভাঙ্গা এলাকার উদ্দেশ্যে যায়।
পদ্মা সেতুতে ওঠার পর উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন বাসের যাত্রীরা। শুধু এনা নয়, সকাল থেকে চলাচল করা সকল বাসেই এমন চিত্র দেখা গেছে। এদিকে সেতুর ওপর দাঁড়ানো ও ছবি তোলা নিষেধ থাকলেও মানছেন না অনেকেই। সেতুর মাঝামাঝি প্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে সারি সারি মোটরসাইকেল। সেখানে ছবি ও সেলফি তুলছেন উৎসুক জনতা। তবে তারা বলছেন, প্রথমদিনে যানবাহনের সংখ্যা কম। সেই সুযোগেই সেতুতে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন তারা। এদিকে পদ্মা সেতু খুলে দেয়ার পর প্রথমদিনে প্রথম ৮ ঘণ্টায় সেতুর দুই প্রান্ত দিয়ে ১৫ হাজার ২০০টি যানবাহন চলাচল করেছে। এতে টোল আদায় হয়েছে ৮২ লাখ ১৯ হাজার ৫০ টাকা। বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবুল হোসেন গণমাধ্যমকে এই তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানান, মাওয়া প্রান্তে আট ঘণ্টায় আট হাজার ৪৩৮টি গাড়ি টোল পরিশোধ করে সেতুতে প্রবেশ করেছে। এতে আয় হয়েছে ৪৬ লাখ ৮৯ হাজার ৫৫০ টাকা। অন্যদিকে জাজিরা প্রান্তে ছয় হাজার ৭৬২টি গাড়ি টোল দিয়ে পদ্মা সেতু পাড়ি দিয়েছে। এতে আয় হয়েছে ৩৫ লাখ ২৯ হাজার ৫০০ টাকা। এর মধ্যে ৬০ শতাংশই মোটরসাইকেল। ২৪ ঘণ্টায় সেতু থেকে দুই কোটি টাকা টোল আদায়ের প্রত্যাশা করছে কর্তৃপক্ষ। আবুল হোসেন বলেন, আমরা সেতুতে তিনটি শিফট করেছি।
প্রথম শিফট কাজ করে সকাল ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত। দ্বিতীয় শিফট কাজ করে ২টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত এবং তৃতীয় শিফট রাত ১০টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত। প্রথমদিনের কাজের অংশ হিসেবে আমাদের আট ঘণ্টায় ৮২ লাখ ১৯ হাজার ৫০ টাকা টোল আদায় হয়েছে। আমরা তিনটি শিফট দেখে বলতে পারবো কতো টোল আদায় হচ্ছে। এদিকে রোববার সকাল ১০টায় মুন্সীগঞ্জের মাওয়া ফেরিঘাটে দেখা যায় অন্যান্য দিনের মতো আর হাঁকডাক নেই। নেই কোনো কোলাহল। কিংবা ব্যস্ততা। নেই কোনো যাত্রী। নদীর পাড়েই সারি সারি কিছু সংখ্যক বাস পার্কিং করে রাখা। সেখানে নেই চালক ও তাদের সহযোগীরা। ঘাটেই বাঁধা রয়েছে পন্টুন। নদীর তীরে স্পিডবোট, ফেরি, লঞ্চ নোঙর করে রাখা। এসবে পারাপারে নেই কোনো যাত্রী কিংবা যান। নেই হকারদের উৎপাতও। সেখানে খুলেছে খাবারের দোকান। তবে ক্রেতা নেই। অধিকাংশ দোকানের স্টাফরা দোকানের ভেতরে বাইরে বসে গল্প করছেন। তাদের মুখে চিন্তার ছাপ। অনেকে কর্ম হারানোর ভয়ে আছেন। অথচ ২ দিন আগেও মাওয়া ফেরিঘাটে দিনরাত ছিল কোলাহলপূর্ণ। নামিদামি বাহারি খাবারের জন্য রেস্টুরেন্টগুলোতে ভিড় লেগে থাকতো। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, পদ্ম সেতু উদ্বোধনে একদিকে যেমন খুশি, তেমনি একই কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তারা।
ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধের আশঙ্কা করছেন অনেকেই। ফিরোজ নামের এক স্পিডবোট চালক বলেন, এই ঘাটে জড়িয়ে আছে নানা স্মৃতি। বিগত ১৫ বছরের বেশি সময় এই ঘাটে আছি। স্পিডবোটের ওপর নির্ভর করেই সংসার চালাতাম। এখন কর্মহীন হয়ে যাবো। এখন আর কোনো যাত্রী নেই আমাদের। সামনের দিনগুলো কীভাবে কাটাবো, সেই চিন্তা করছি। এই ঘাটে আমার মতো হাজার হাজার মানুষ বেকার হয়ে যাবে। রুটি কলা বিক্রেতা মো. আল আমিন জানান, আগের দিন নাই- রাত নাই দিন নাই সব সময় এখানে কলা, রুটি বিক্রি করতাম। আজ দু’দিন হলো কোনো বিক্রি নেই। মানুষ নেই। মনে হচ্ছে ঘাট এলাকা অন্ধকার হয়ে গেছে। পদ্মা সেতুতে হাঁটা-ছবি তোলায় নিষেধাজ্ঞা: পদ্মা সেতুতে গাড়ি থামিয়ে ছবি তোলা বারণ থাকলেও প্রথম দিনে মানুষের উচ্ছ্বাসে ভেসে গিয়েছিল এসব বিধিনিষেধ। অনেকেই দ্রুতগতির যানবাহন থামিয়ে ছবি তুলেন, ভিডিও করেন, এমনকি টিকটকে বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গির ভিডিও আপলোড করা হয়। অনেকে লাইভও করছিলেন।
আবার বাস থামিয়েও নেমে পড়ে যাত্রীরা।এতে বিব্রত সেতু কর্তৃপক্ষ। বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে পদ্মা সেতুর উপর যানবাহন থামানো, হেঁটে চলাচল ও ছবি তোলায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সরকার। গতকাল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জারি করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ নির্দেশনা দেয়া হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পদ্মা সেতুর উপর যানবাহন থামানো নিষেধ। সকল নাগরিককে পদ্মা সেতু পারাপারের জন্য সরকার নির্ধারিত হারে টোল প্রদান করতে হবে। সর্বসাধারণকে টোল প্রদান করে সেতু পার হওয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হয়। এ ছাড়া, পদ্মা সেতুর উপর সকল ধরনের যানবাহন থামানো, হেঁটে চলাচল ও ছবি তোলা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ এবং আইনগতভাবে দণ্ডনীয় অপরাধ। এই নিষেধাজ্ঞা মেনে চলার জন্য সর্বসাধারণকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।