দেশ বিদেশ
পদ্মায় ঐতিহ্যর নৌকাবাইচ
নদী পাড়ে লাখ লাখ মানুষের ভিড়
স্টাফ রিপোর্টার
২৬ জুন ২০২২, রবিবারহেহইয়ো রে হেইয়ো, টান দে রে টান দে, জোরসে টানো- এমন সব ধ্বনি আর বৈঠার তালে তালে পদ্মায় অনুষ্ঠিত হলো ঐতিহ্যর নৌ-র্যালি ও নৌকাবাইচ। স্বপ্নের পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের দিনকে স্মরণীয় করে রাখতে নানা আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) আয়োজন করে গ্রাম-বাংলার চিরচেনা আর ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ ও নৌ-র্যালির। শনিবার বেলা ১১টায় মাদারীপুরের শিবচরে অনুষ্ঠিত হয় এ নৌকাবাইচ।
সরজমিন দেখা যায়, ভোর ৬টার দিকে মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া পয়েন্ট থেকে মাদারীপুরের শিবচরের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে ৬টি ঘাসী নৌকা। ট্রলারের সঙ্গে শক্ত করে বাঁধা হয় নৌকাগুলো। তুমুল স্রোত পদ্মায়। একটু এদিক-সেদিক হলেই দুর্ঘটনা। তবুও নৌকায় থাকা মাল্লাদের চোখে-মুখে দেখা যায়নি কোনো ভয়ের চিহ্ন। মামা-ভাগ্নে বাইচের নৌকার মাল্লা হৃদয় হোসেন মানবজমিনকে বলেন, এর আগে আমি একবার ট্রলারে পদ্মা পাড়ি দিয়েছিলাম। তখন আমি প্রচ- ভয় পেয়েছি।
বাইচে অংশ নেয়া নৌকাগুলো হচ্ছে- বলধারার ঐতিহ্য, সোনার তরী, হাতনীর রাজ, মামা-ভাগ্নে, লিটন এক্সপ্রেস ও সোনার বাংলা। কথা হয় ষাটোর্র্ধ্ব রহমান বেপারী নামের এক দর্শকের সঙ্গে। তিনি বলেন- স্বাধীনতার পরে এত সুন্দর নৌ-র্যালি আমি দেখিনি। আমাদের দেশে সাধারণত নৌকাবাইচ দেখে আমরা অভ্যস্ত। কিন্তু আজকের আয়োজন ছিল ভিন্ন। নৌকাবাইচ ঐতিহ্য রক্ষা কমিটির সভাপতি মাসুদ মোল্লা বলেন, পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী দিনে গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য নৌকাবাইচ ও নৌ-র্যালির আয়োজন করায় ধন্যবাদ জানাই আয়োজক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষকে (বিআইডব্লিউটিএ)। ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে থাকলাম আমরা নৌকার মালিক, মাঝি-মাল্লারা। তাদের মতো অন্যরাও এগিয়ে আসুক। দেশের প্রতিটি উপজেলায় সরকারি উদ্যোগে আয়োজন করা হোক নৌকাবাইচ- এমন প্রত্যাশা আমাদের।
মানিকগঞ্জের সিংগাইর থেকে আসা বলধারার ঐতিহ্য নৌকার সুরুজ মাঝি মানবজমিনকে বলেন, আমাদের এই নৌকায় ৬০ জন মাঝি নিয়ে এসেছি। আমরা এমন আয়োজনে খুবই আনন্দিত।