অনলাইন
মাওয়া ঘাটে সুনসান নীরবতা
নূরে আলম জিকু, মাওয়া থেকে
(১ বছর আগে) ২৬ জুন ২০২২, রবিবার, ১০:৫৪ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৪:৫৩ অপরাহ্ন
সকাল ১০টা। অন্যান্য দিনের মতো মুন্সীগঞ্জের মাওয়া ঘাটে আজ আর হাঁকডাক নেই। নেই কোন কোলাহল। কিংবা ব্যস্ততা। নেই কোন যাত্রী। নদীর পাড়েই সারি সারি কিছু সংখ্যক বাস পার্কিং করে রাখা। সেখানে নেই চালক ও তাদের সহযোগীরা। ঘাটেই বাঁধা রয়েছে পন্টুন। নদীর তীরে স্পিডবোট, ফেরি, লঞ্চ নোঙর করে রাখা। এসবে পারাপারে নেই কোন যাত্রী কিংবা যান।
সেখানে খুলেছে খাবারের দোকান। তবে ক্রেতা নেই। অধিকাংশ দোকানের স্টাফরা দোকানের ভেতরে বাইরে বসে গল্প করছেন। তাদের মুখে চিন্তার ছাপ। অনেকে কর্ম হারানোর ভয়ে আছেন। অথচ ২ দিন আগেও মাওয়া ফেরিঘাটে দিনরাত ছিল কোলাহলপূর্ণ। নামী দামি বাহারি খাবারের জন্য রেস্টুরেন্টগুলোতে ভিড় লেগে থাকতো।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, পদ্ম সেতু উদ্বোধনে একদিকে যেমন খুশি, তেমনি একই কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তারা। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধের আশঙ্কা করছেন অনেকেই।
ফিরোজ নামের এক স্পিডবোট চালক বলেন, এই ঘাটে জড়িয়ে আছে নানা স্মৃতি। বিগত ১৫ বছরের বেশি সময় এই ঘাটে আছি। স্পিডবোটের উপর নির্ভর করেই সংসার চালাতাম। এখন কর্মহীন হয়ে যাবো। এখন আর কোন যাত্রী নেই আমাদের। সামনের দিনগুলো কিভাবে কাটাবো, সেই চিন্তা করছি। এই ঘাটে আমার মতো হাজার হাজার মানুষ বেকার হয়ে যাবে।
রুটি কলা বিক্রেতা মো. আল আমিন জানান, আগের দিন নাই রাত নাই সব সময় এখানে কলা, রুটি বিক্রি করতাম। আজ দুদিন হলো কোন বিক্রি নেই। মানুষ নেই। মনে হচ্ছে ঘাট এলাকা অন্ধকার হয়ে গেছে। স্থায়ী দোকানগুলোও বন্ধ। আগে যারা ঘাট হয়ে যেত, তারা এখন পদ্মা সেতুতে যায়।
এদিকে গতকাল শনিবার সকালে উদ্বোধন হয় স্বপ্নের পদ্মা সেতুর। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যেসব মানুষ মাওয়া ফেরিঘাট রুটে যাতায়াত করতো, তারা আজ রোববার সকাল থেকেই বিভিন্ন যানবাহনে করে পদ্মা সেতু পাড়ি দিচ্ছেন। যার কারণে পদ্মার পাড়ের মাওয়া ঘাটে আগের মতো হাঁকডাক নেই।