খেলা
‘আমাদের লালিত স্বপ্ন পূরণ হলো’ পদ্মা সেতু নিয়ে আবেগাপ্লুত মুশফিক
স্পোর্টস ডেস্ক
(১ বছর আগে) ২৫ জুন ২০২২, শনিবার, ১১:৪৫ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ২:৩৪ অপরাহ্ন
স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধন হচ্ছে আজ। দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ঘরে ঘরে যেন উৎসবের আমেজ। বলার অপেক্ষা রাখে না পদ্মা সেতুর কল্যাণে শরীয়তপুর, মাদারীপুর, ফরিপুর, রাজবাড়ী ও গোপালগঞ্জ সহ আশপাশের জেলাগুলোর উন্নতির জোয়ার বইবে। পাল্টে যাবে দেশের অর্থনীতির গতি। সমগ্র দেশই উপকৃত হবে এই সেতু থেকে। বাংলাদেশের সকল স্তরের মানুষের কাছে পদ্মা বহুমুখী সেতু তাই ভালোবাসার আরেক নাম। ক্রিকেটাররাও আবেগাপ্লুত।
জাতীয় দলের উইকেটরক্ষক-ব্যাটার মুশফিকুর রহীম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আমাদের দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন অবশেষে বাস্তব। নিজেদের তৈরি পদ্মা সেতু নিয়ে খুব গর্ব হচ্ছে। মাশা আল্লাহ।’
টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের স্ট্যাটাস, ‘স্বপ্নের পদ্মা সেতু, আমাদের গর্বের পদ্মা সেতু। অসংখ্য ধন্যবাদ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করার জন্য।’
ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবাল ফেসবুকে লিখেন, ‘পদ্মা সেতু, আজ সকল বাংলাদেশির অসীম সাহসের আরেক নাম।
নিজেদের টাকায় এতো বড় বাজেটের প্রকল্প বাস্তবায়ন করে, আমরা বিশ্বকে আরো একবার অর্থনৈতিক বিজয় ও প্রবল মনোবলের প্রমাণ দিলাম- বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র দৃঢ় নেতৃত্বে।’
এর আগে জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা পদ্মা সেতুর গুরুত্ব তুলে ধরে লিখেছিলেন, ‘দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের জন্য পদ্মা সেতু কতটা জরুরি, ওই পথে চলাচলের অভিজ্ঞতা ছাড়া তা আসলে বোঝা খুবই কঠিন। দুটি ঈদের কথা উল্লেখ না-ই করলাম, তখন তো গোটা দেশের মানুষই নিউজে দেখতে পায় কতটা কষ্ট করে মানুষ নদী পার হয়। কিন্তু শীতকালে যে কী অবস্থা হয়, সেটা কেবল তারাই বোঝে, যাদের এই অভিজ্ঞতা হয়। তার ওপর নানা সময়ে নিম্নচাপ বা প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলে তো কথাই নেই, সারা রাত ফেরি বন্ধ।
বছরজুড়ে নানা সময়ে গাড়ির সিরিয়াল যখন শুরু হয়, বিকেল থেকে পরদিন সকাল পর্যন্ত ঘাটে বসে থাকতে হয় অনেক ক্ষেত্রে। শতশত মালবাহী ট্রাক থাকে অপেক্ষায়, কাঁচামাল তো ঘাটেই পঁচে যায়, এসব মোটামুটি নিয়মিত চিত্র। এরপর যদি নদীর স্রোতে ঘাট ভেঙে যায়, যন্ত্রণা তখন আরও বেড়ে যায়।
সবচেয়ে বেদনাদায়ক ব্যাপার হয়, যখন কোনো মুমূর্ষু রোগী নদী পার হওয়ার জন্য অপেক্ষায় থাকে। প্রতিটি মিনিট তখন মনে হয় অনন্তকাল। ওই পরিবার তখন কতটা অসহায় থাকে, কেউ ওই অবস্থায় না পড়লে বোঝা দায়। ঘাটেই রোগী মারা গেছে, ঢাকায় এনে চিকিৎসা করানো যায়নি, এরকম নজির আছে অনেক। প্লেনে বা হেলিকপ্টারে রোগী আনার সামর্থ্য কজনেরই বা আছে!
এছাড়াও আরও কত যে সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়, এই পথের নিয়মিত যাত্রীরাই কেবল বোঝে। সেই যন্ত্রণাময় দিনগুলি শেষ হতে চলেছে। অনেক প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে, অনেক প্রতিকূলতা মোকাবেলা করে পদ্মা সেতু এখন উদ্বোধনের অপেক্ষায়। কোটি কোটি মানুষের কাছে এটা স্বপ্নের চেয়েও বড় কিছু। অনেকে কখনও কল্পনাও করতে পারেননি, জীবদ্দশায় পদ্মার ওপর সেতু দেখতে পাবেন। এটা স্রেফ ইট-সিমেন্টের সেতু নয়, এই অঞ্চলের মানুষের কাছে এটা অনেক আবেগ-অনুভূতির প্রতিশব্দ।
যুগ যুগ ধরে চলে আসা এসব সমস্যার সমাধান তো এখন হবেই, এই অঞ্চলে এখন শিল্প কারখানা গড়ে উঠবে, বেকারত্ব দূরীকরণে তা ভূমিকা রাখবে, গোটা দক্ষিণাঞ্চলের চেহারা বদলে যাবে।
ধন্যবাদ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। পদ্মা সেতুর জন্য আপনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে আমার রাজনৈতিক পরিচয়ের প্রয়োজন পড়ে না। সমস্ত রাজনীতির উর্ধ্বে গিয়ে সবার থেকেই একটি ধন্যবাদ অন্তত আপনার প্রাপ্য।’