শেষের পাতা
বাসায় ফিরেছেন খালেদা জিয়া
স্টাফ রিপোর্টার
২৫ জুন ২০২২, শনিবাররাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। গতকাল সন্ধ্যায় ৬টা ৫ মিনিটে গুলশানের বাসা ফিরোজায় ফেরেন তিনি। করোনা প্রাদুর্ভাবের কথা চিন্তা করে বিএনপি চেয়ারপারসনকে বাসায় নেয়ার পরামর্শ দেন মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা। এদিন বিকালে এভারকেয়ার হাসপাতালের হলরুমে এক সংবাদ সম্মেলন এ কথা জানান খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা। বিএনপি চেয়ারপারসনের সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
খালেদা জিয়া এখনো সুস্থ হননি জানিয়ে মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা বলেছেন, হার্টের যে ঝুঁকি নিয়ে খালেদা জিয়া হাসপাতালে এসেছিলেন, সেটা এখন স্থিতিশীল আছে। কিন্তু তিনি এখনো সুস্থ হননি। তবে দেশে নতুন করে করোনাভাইরাসের ঝুঁকি বেড়ে যাওয়ায় হাসপাতালে তাকে রাখা ঝুঁকিপূর্ণ। তাই তাকে বাসায় রেখে চিকিৎসা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মেডিকেল বোর্ড।
মেডিকেল বোর্ডের প্রধান হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. শাহবুদ্দিন তালুকদার বলেন, সি ইজ ডুয়িং ফাইন। কিন্তু এই মুহূর্তে তিনি কোভিডে আক্রান্ত হলে ক্রিটিক্যাল পজিশনে চলে যেতে পারেন। তাই তাকে আমরা বাসায় রেখে চিকিৎসা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
প্রয়োজন হলে আবারো হাসপাতালে ভর্তি করানো হবে বলে জানান তিনি।
বলেন, খালেদা জিয়ার খাদ্যনালীর যে সমস্যা ছিল, সেটি এখন কী অবস্থায় আছে তা দেখা সম্ভব হয়নি।
খালেদা জিয়ার মেডিকেল বোর্ডের আরেক চিকিৎসক ডা. এফ এম সিদ্দিক বলেন, ফুসফুসে পানি চলে এসেছিল। পরে বিশেষ ইনজেকশন দিয়ে সেই পানি সরানো হয়। এখন তার হার্টে পানি নেই।
তিনি বলেন, আমরা রোগীকে এক থেকে দুই ঘণ্টার মধ্যে বাসা থেকে হাসপাতালে স্থানান্তর করতে পারছি। আর বাসায় প্রতিদিনই আমাদের মেডিকেল বোর্ডের একজন চিকিৎসক তাকে মনিটরিং করেন। সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে তিনি সুস্থ না হওয়ার পরও কোভিডের কারণে তাকে বাসায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এফ এম সিদ্দিকী বলেন, খালেদা জিয়া এখনো ঝুঁকিতে আছেন। তাকে চিকিৎসার জন্য বাইরে নেয়ার সুযোগ এখন মোটামুটিভাবে আছে। এখন পর্যন্ত বিমানে ভ্রমণ করার শারীরিক সক্ষমতা আছে। ওনার সবগুলো জটিলতার চিকিৎসা করতে হলে বা সুস্থ করতে হলে যা করা দরকার তা দেশে আমরা পুরোপুরি করতে পারছি না। সেই সক্ষমতা, মেডিকেল সেটআপ আমাদের এখানে নেই। তার সুষ্ঠু চিকিৎসা বাংলাদেশে সম্ভব নয়। এজন্য আমরা আগেও বলেছি, এখনো বলছি তার সুষ্ঠু চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে উন্নত চিকিৎসা কেন্দ্রে নেয়ার পরামর্শ দিয়েছি।
তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের ধরন ওমিক্রন ভয়াবহ না হলেও খালেদা জিয়ার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। তার আগের যে লিভার সিরোসিস, ফুসফুসের সমস্যা, সেটি এখনো আছে। তার কোনো চিকিৎসা হয়নি। আমরা যে তার শারীরিক রক্তক্ষরণ বন্ধ করে রেখেছিলাম, সেটা এখন কী অবস্থায় আছে তা জানি না। কারণ গত ছয় মাসে সেটার ফলোআপ করতে পারিনি। এখনো তার হৃদরোগের সমস্যার কারণে এন্ডোস্কোপি করা সম্ভব হয়নি।
সংবাদ সম্মেলন শেষে খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, ম্যাডাম (খালেদা জিয়া) তার চিকিৎসকদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তার জন্য দোয়া করতে দেশবাসীকেও ধন্যবাদ দিয়েছেন।
বেশি অসুস্থ বোধ করায় গত ১০ই জুন মধ্যরাতে খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালের ভর্তি করা হয়। পরদিন ১১ই জুন এনজিওগ্রাম করা হলে তার হার্টে ৩টি ব্লক ধরা পড়ে। তার মধ্যে একটি ব্লক ছিল ৯৫ শতাংশ। পরে সেটিতে রিং পরানো হয়।