শেষের পাতা
পুলিশি বাধায় গণঅধিকারের কফিন মিছিল পণ্ড
স্টাফ রিপোর্টার
৩১ ডিসেম্বর ২০২৩, রবিবার
ভোটাধিকার হরণ ও নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংসের প্রতিবাদে পূর্ব ঘোষিত সমাবেশ ও কফিন মিছিল ছিল গণঅধিকার পরিষদের। শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় বিজয়নগর পানির ট্যাংকির মোড়ে সমাবেশ শুরু হয়। সমাবেশ শেষে কফিন মিছিল করতে গেলে পুলিশ মারমুখী ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়। কফিন মিছিল বন্ধ না করলে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর ও সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খানের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে পুলিশ এবং কয়েকদফা ধাক্কা দিয়ে আটকের হুমকি দেয়। একপর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে দলটির নেতাদের ধস্তাধস্তি ও পরে কফিন লাথি দিয়ে ভেঙে ফেলে পুলিশ। পুলিশি বাধা, মারমুখী ভূমিকা ও ধস্তাধস্তিতে শীর্ষ নেতৃবৃন্দসহ অনেকে নিচে পড়ে গিয়ে আহত হন।
মিছিল শুরু হওয়ার পূর্বে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, ২০১৮ সালের ৩০শে ডিসেম্বর মধ্যরাতে ৬০% ভোট কেটে জনগণের ভোটাধিকার হরণ করে নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করা হয়েছে। জনগণের ভোটাধিকার হরণ ও নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংসের প্রতিবাদে আজকে আমাদের এই কফিন মিছিল। গণতন্ত্র এখন কফিনে, আমরা গণতন্ত্রের পুনর্জাগরণ করতে চাই। মারামারি, হানাহানি, হত্যার রাজনীতির অবসান চাই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বলতে চাই নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন দিন। ২১শে আগস্টের মতো গ্রেনেড হামলার মতো ভয় থাকলে আমরা কথা দিচ্ছি আপনার পাশে থাকবো। আমরা তো বলছি প্রয়োজনে ২/১ বছরের জন্য জাতীয় সরকার হোক। জাতীয় ঐক্য ও সংহতি প্রতিষ্ঠা করে দেশকে এগিয়ে নিতে চাই। তিনি বলেন, ভারতীয় মদতে একতরফা নির্বাচন করে দেশ ধ্বংস করবেন না। ৭ই জানুয়ারি ফেলানি হত্যা দিবসে কেন ভোটের তারিখ ঠিক করা হলো? কারণ ভারত আওয়ামী লীগকে ব্যবহার করে ফেলানি হত্যাসহ সকল সীমান্ত হত্যার ঘটনা ভুলিয়ে দিতে চায়। তাই ভারতের প্রেসক্রিপশনে ৭ই জানুয়ারি নির্বাচনের তারিখ ঠিক করেছে। টাকা-পয়সা দিয়ে অনেককে নির্বাচনে প্রচারণা-গণসংযোগ করাচ্ছে। তাই জনগণকে আমাদের সতর্ক ও সচেতন করতে হবে। এক-দেড় কিংবা ৫ হাজার টাকার জন্য দেশের ক্ষতি করা যাবে না। গতকাল দেখেছেন বরিশালে প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় স্বতন্ত্র প্রার্থী পঙ্কজ নাথ ও দলীয় প্রার্থী শাম্মী আক্তারের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে ১ জন নিহত হয়েছে। ওরা এমপি, মন্ত্রী হতে ক্ষমতায় থাকতে লাশের রাজনীতি করছে। তাই আমরা সকলকে ৭ তারিখের ভোট বর্জন করার আহ্বান জানাচ্ছি।
কফিন মিছিলে পুলিশি বাধা ও কফিন ভাঙচুরের পর নুরুল হক নুর বলেন, আপনারা দেখেছেন আমরা দুই-আড়াইশ’ লোক শান্তিপূর্ণ ভাবে মিছিল করতে চেয়েছিলাম। সেখানে পুলিশ বাধা দিয়েছে, গুণ্ডা-মাস্তানদের মতো লাথি দিয়ে আমাদের কফিনটি ভেঙে ফেললো। এটি কি পুলিশ করতে পারে? কোন আইনে তারা এসব করতে পারে? আমাদের চেয়ে পুলিশের সংখ্যা বেশি, তাদের অনেকের হাতে ইলেকট্রিক শক লাঠি, টিপ ছুরির মতো জিনিস ছিল। ভিড়ের মাঝে কাউকে ছুরিকাঘাত করা বা পুলিশেরই কোনো সদস্যকে ছুরিকাঘাত করে আমাদের ওপর দায় চাপাতো। যেভাবে ২৮শে অক্টোবর ছাত্রলীগ, যুবলীগকে দিয়ে পুলিশ হত্যা করে মির্জা ফখরুলদের আসামি করেছে।
গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের সদস্য শাকিল উজ্জামানের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন দলটির সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান, উচ্চতর পরিষদের সদস্য আবু হানিফ, আব্দুজ জাহের, সিনি. যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মামুন, যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোর্শেদ মামুন, ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান, শ্রমিক অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা সম্পদ, গণঅধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক নুরুল করিম শাকিল প্রমুখ।