সরাইলে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। ইতিমধ্যে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে উপজেলার ৪ শতাধিক পরিবার। নিচু এলাকার সকল বসতবাড়িতে প্রবেশ করেছে পানি। চরম বিপাকে পড়েছেন খামারিরা। পানির জন্য বন্ধ হয়ে গেছে উপজেলার ১৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। তলিয়ে গেছে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। ফলে উপজেলার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন ২ ইউনিয়নের বাসিন্দারা। সরজমিনে জানা যায়, গত ৭-৮ দিনের প্রবল বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পানির তোড়ে সরাইলের তিতাস মেঘনা নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের নিচু এলাকার বসতবাড়িগুলো পানিতে ভাসছে। সরাইল-অরূয়াইল সড়কটি তলিয়ে যাওয়ায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে সরাইল উপজেলার সঙ্গে সড়কপথে পাকশিমুল ও অরূয়াইল ইউনিয়নের যোগাযোগ।
খুবই কষ্ট করে বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসা করছে শিক্ষার্থীরা। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় আতঙ্কে আছেন উপজেলার মৎস্যচাষিরা। অরূয়াইল ইউনিয়নের রাজাপুর, কাকরিয়া, রাণিদিয়া, ধামাউড়া, দুবাজাইল, পাকশিমুল ইউনিয়নের জয়ধরকান্দি, তেলিকান্দি, হরিপুর, ষাটবাড়িয়া, বড়ুইছাড়া, ফতেহপুর, পরমানন্দপুর, শাহজাদাপুর ইউনিয়নের নিয়ামতপুর, ধাউরিয়া, চুন্টা ইউনিয়নের লোপাড়া, নতুনহাটি তারাখোলা দেওবাড়িয়া, বড়বুল্লা ও নরসিংহপুর, শাহবাজপুর ইউনিয়নের ক্ষমতাপুর ও পানিশ্বর ইউনিয়নসহ উপজেলার ৪ শতাধিক পরিবার হয়ে পড়েছে পানিবন্দি। সেখানকার কিন্ডারগার্টেন, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে উল্লেখযোগ্য হারে কমে গেছে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি। ইতিমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে কালিকচ্ছ উত্তর মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ। প্রাথমিক শিক্ষা অফিস জানায়, বন্যার পানি প্রবেশ করায় পাঠদান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে- ক্ষমতাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ধাউরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, অরূয়াইলের ষোলাকান্দি মহিম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দুবাজাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পাকশিমুলের কালিশিমুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, তেলিকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ভূঁইশ্বর পাতারহাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চুন্টার লোপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আজবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ঘাগরাজোড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চুন্টা পূর্ব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রসুলপুর পূর্ব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পানিশ্বরের টিঘর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কালিকচ্ছ উত্তর মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল আজীজ বলেন, মাঠে ও শ্রেণিকক্ষে পানি প্রবেশ করায় অপারগ হয়ে আপাতত ১৪টি স্কুল বন্ধ দিয়েছি। অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সহিদ খালিদ জামিল খান বলেন, এখনো কোনো মাধ্যমিক বিদ্যালয় বন্ধ দেয়নি। তবে যেকোনো সময় বন্ধ দিতে হতে পারে। শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ৭০-৮০ ভাগ কমে গেছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফুল হক মৃদুল বলেন, উপজেলার ৩শ’ পানিবন্দি পরিবারের জন্য জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে অর্থ ও চাল বরাদ্দ পাওয়া গেছে। প্রয়োজনে সেই বরাদ্দের পরিমাণ আরও বৃদ্ধি করা হবে।