খেলা
গোলকধাঁধা ভেদ করার চ্যালেঞ্জ সাকিবদের
স্পোর্টস রিপোর্টার
২৪ জুন ২০২২, শুক্রবার
দেশের মাটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্ট সিরিজে বাজেভাবে হেরে যায় টাইগাররা। বলা হচ্ছিল করোনার প্রভাবেই এমনটা হয়েছে। সেবছর এপ্রিলে শ্রীলঙ্কা সফরে টেস্ট সিরিজে দারুণ এক ড্র । কিন্তু পরের ম্যাচেই আবার হার। এরপর জিম্বাবুয়ে সফরে একমাত্র টেস্টে দারুণ জয়। সেখান থেকে ফিরে দেশের মাটিতে আবারো পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ। এর পরপরই অবশ্য নিউজিল্যান্ডের মাটিতে প্রথম টেস্ট ম্যাচ জিতে ইতিহাস গড়ে বাংলাদেশ। এ জয়ের পর ধারণা করা হচ্ছিল সাদা পোশাকে মনে হয় ফিরছে সুদিন। কিন্তু টাইগারদের ক্রিকেটে হার জয়-পরাজয় যেন এক দুর্ভেদ্য গোলক ধাঁধায় পরিণত হয়েছে। টানা পাঁচ ম্যাচ হেরেছে টাইগাররা।
বিশেষ করে দলের ফর্মহীন ব্যাটারদের নিয়ে। তবে এই ম্যাচে ব্যাটিং বিভাগে ব্যর্থ নাজমুল হোসেন শান্তর পরিবর্তে ৮ বছর পর একাদশে ফিরছেন এনামুল হক বিজয়। লম্বা বিরতির পর মাঠে ফিরতে মুখিয়ে এই ব্যাটার। অন্যদিকে ব্যাট হাতে টানা ব্যর্থ সাবেক অধিনায়ক মুমিনুল হককে আরো একটি সুযোগ দিতে যাচ্ছে টিম ম্যানেজম্যান্ট। দেশের টেস্ট ক্রিকেটের সর্বাধিক সেঞ্চুরির মালিক মুমিনুলের এটি শেষ সুযোগও বলা যেতে পারে। ৮ বছর পর টেস্ট দলে ফেরা ২৯ বছর বয়সী বিজয় ক্যারিয়ারের সবশেষ টেস্ট খেলেছিলেন ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে, এই সেন্ট লুসিয়াতেই! তখন ভেন্যুর নাম ছিল বোশেজো স্টেডিয়াম। এখন নাম পরিবর্তন করে রাখা হয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দুটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ে নেতৃত্ব দেয়া সেন্ট লুসিয়ার সন্তান ড্যারেন স্যামির নামে। বিদেশের মাটিতে যেখানে শেষ করেছিলেন ঠিক সেখান থেকেই শুরু করতে যাচ্ছেন এনামুল । তিনি বলেন, ‘যখন সুযোগ পাবো, আমি অবশ্যই প্রমাণের চেষ্টা করবো। যেহেতু ৮ বছর পর ডাক পেয়েছি টেস্টে, এটা আমার জন্য বড় সুযোগ। এখন প্রমাণ করতে হবে যে টেস্ট খেলাটা আমি আসলে অনেক পছন্দ করি, আসলেই ভালোবাসি।’ আজ বাংলাদেশ দলে আরেকটি পরিবর্তনের সম্ভাবনা। সিরিজের প্রথম টেস্টে খেলা পেসার মোস্তাফিজুর রহমানকেকে বিশ্রাম দেয়া হতে পারে আসন্ন টি-টোয়েন্টি ও ওয়ানডে সিরিজের জন্য।
আজ তার পরিবর্তে দলে জায়গা হতে পারে ইনজুরি কাটিয়ে মাঠে ফেরা তরুণ পেসার শরিফুল ইসলামের। তামিম ইকবালের সঙ্গে যথারীতি আজও ওপেনিংয়ে সুযোগ পাচ্ছেন আরেক তরুণ মাহমুদুল হাসান জয়। এই টেস্টেও দলের সবচেয়ে বড় চিন্তার নাম ব্যাটিং। প্রথম ম্যাচে ব্যাট করতে নেমে টাইগাররা আউট হয়েছিল ১০৩ রানে। ম্যাচের দ্বিতীয় ইনিংসেও ১০৯ রানে ৬ষ্ঠ উইকেট হারিয়ে লজ্জার মুখে ছিল টাইগাররা। পরে অধিনায়ক সাকিব ও উইকেটরক্ষক-ব্যাটার নুরুল হাসান সোহানের ফিফটিতে ভর করে ইনিংস হারের মুখ থেকে দল রক্ষা পায়। তবে দল হেরে যায় ৭ উইকেটে। শান্তকে বাদ দিয়ে তাই বিজয়ের ওপর ভারসা রাখা হচ্ছে। যদিও বিজয়ের খেলা ৪ টেস্টে নেই কোনো ফিফটিও। আট ইনিংসে সাকুল্যে সংগ্রহ ৭৩ রান। অবশ্য প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ১০৫ ম্যাচে তার রান ৭ হাজার ৪৭৯। ব্যাট হাতে ২২ সেঞ্চুরির পাশাপাশি ৩৮টি হাফসেঞ্চুরি আছে তার। এটিই তাকে করেছে আত্মবিশ্বাসী। বিজয় বলেন, ‘সত্যিই আমি রোমাঞ্চিত। প্রসেসের দিকে ফলো করবো। যেভাবে আমি প্রথম শ্রেণি এতদিন ধরে খেলে আসছি। নতুন করে কিছু পরিবর্তন করতে চাই না।’ সবশেষ দেশের মাটিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টে প্রথম ইনিংসে ৩৪ রানে ৪ উইকেট হারিয়েছিল বাংলাদেশ।
এমনকি পরের ইনিংসে ২৩ রানে হারায় ৪ উইকেট। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেও প্রথম ইনিংসে ৪১ রানে চার উইকেট হারায় দল। আর দ্বিতীয় ইনিংসে ৭৫ রানে হারায় ৪ উইকেট। বলার অপেক্ষা রাখে না টপ অর্ডারের ব্যর্থতাই দলকে ডোবাচ্ছে। বিজয় সুযোগ পেলে খেলবেন শান্তর পরিবর্তে তিনে। তাই এই স্থানে ধ্বস ঠেকানোর চ্যালেঞ্জটাও তার সামনে। তিনি বলেন, ‘কে খেলছে সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে ওখানে (টপ অর্ডারে) আর্লি উইকেট থামানো, ওই পজিশনটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আসলে আমি ভাবছি, যদি সুযোগ পাই, সেরাটা দিয়ে চেষ্টা করবো যেন ভালো একটা সংগ্রহ স্কোরবোর্ডে দিতে পারি। এখানে গুরুত্বপূর্ণ হলো, শুরুতে ভালো স্কোর দাঁড় করানো। যে-ই খেলি না কেন।’