অনলাইন
সিলেটের বানভাসিদের কথা
নতুন করে আশ্রয়হীন মানুষ খাদ্য সঙ্কটে
ওয়েছ খছরু, সিলেট থেকে
(৩ দিন আগে) ২২ জুন ২০২২, বুধবার, ৮:১৫ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১০:১৫ পূর্বাহ্ন

সিলেটের বন্যায় নতুন করে আশ্রয়হীন মানুষ পড়েছেন খাদ্য সঙ্কটে। গত তিনদিন ধরে অনেক এলাকায় মানুষ অভুক্ত অবস্থায় দিন যাপন করছেন। আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে চলছে হাহাকার। বাড়িতে পানি। জীবন বাঁচাতে সবকিছু রেখে চলে এসেছেন। কেউ আশ্রয়কেন্দ্রে, কেউ রাস্তার পাশে। আবার কেউ অবস্থান নিয়েছেন রেললাইনে। অনাহারে, অর্ধাহারে কাটছে তাদের দিন। পথ চেয়ে থাকেন খাবারের। আর নৌকা ভিড়লে দৌড়ে যান।
বিজ্ঞাপন
বুধবার সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ, বালাগঞ্জ ও ওসমানীনগরের পরিস্থিতি ছিলো ভয়াবহ। উজানের ঢলে পানি বাড়ছে প্রতিনিয়ত। কুশিয়ারা নদীর সবক’টি পয়েন্টে পানি বিপদসীমার অনেক উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে করে লাখো মানুষ হয়ে পড়ছেন আশ্রয়হীন। বালাগঞ্জের গালিমপুর এলাকার মিনতি রানী জানিয়েছেন- প্রবল ঢলে তাদের বাড়িঘর তলিয়ে যায়। তাদের এলাকায় মানুষজন রাতেই আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নেন।
সাদিপুর এলাকার আব্দুস সালাম জানিয়েছেন- সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত তাদের এলাকার শ’ শ' মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদে অবস্থান নিয়েছেন। কারো ঘরে কোমরপানি, কারো বুক সমান পানি। বাড়িঘরছাড়া মানুষজন তীব্র খাদ্য সঙ্কটে পড়েছেন। এই মুহূর্তে সবার জন্য শুকনো অথবা রান্না করা খাবার প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন তিনি।
গোয়ালাবাজারের সাবেক ইউপি সদস্য আতাউর রহমান মানিক জানিয়েছেন- অনেক মানুষ ঘরবাড়ি ছাড়া। আমাদের পক্ষ থেকে কিছু কিছু এলাকায় রান্না করা খাবার দেওয়া হচ্ছে। এরপরও অনেক এলাকায় এখনো যাওয়া সম্ভব হয়নি। তিনি জানান- মানুষ তো বাড়িঘরে সব রেখে এসেছে। কেউ কেউ এক কাপড়ে এসে উঠেছেন। বিশুদ্ধ পানিরও সঙ্কট রয়েছে এলাকায়।
ফেঞ্চুগঞ্জের কোথা কোথাও চালের উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। নিচু এলাকার মানুষজন ঘরবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। যারা আশ্রয়কেন্দ্রে এসেছেন তারা খাবার পাচ্ছেন। আর যারা বাড়িতে আছেন তাদের কাছে খাবার পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। নৌকার সঙ্কট দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন এলাকার বাসিন্দা সোহেল আহমদ। তিনি জানান- ফেঞ্চুগঞ্জ বাজারেও পানি। এ কারণে দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। অনেক এলাকার মানুষ বন্যার ঢল থেকে রক্ষা পেতে রেললাইনে এসে আশ্রয় নিয়েছেন।
এদিকে- আগামী কয়েক দিন সিলেটে মুষলধারে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন সিলেট আবহাওয়া অফিসের প্রধান আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী। তিনি মানবজমিনকে জানিয়েছেন- সিলেটের উজানে ভারতের মেঘালয়ে বৃষ্টিপাত দেখছি না। তবে- এক মাস আগের বন্যা, এই বন্যা মিলে অতিরিক্ত প্লাবন হওয়ার কারণে এবার পানি ধীর গতিতে নামছে। নিম্নাঞ্চলে বন্যা স্থায়ী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান তিনি। সিলেট জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসিফ আহমদ জানিয়েছেন- এরই মধ্যে সুরমা, সারি, ধলাই নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। আগামী ২-৩ দিনের মধ্যে কুশিয়ারাতে উন্নতি হতে পারে। তবে- জুলাইয়ের মাঝামাঝি কিংবা শেষ দিকে সিলেটে আবারো বন্যা হতে পারে।
পাঠকের মতামত
China rescued hundread thousands of people and relocated safe place but a Role Model country in disaster management failed to provide food and shelter thousands of flood affected people.