বিশ্বজমিন
ইউক্রেনীয় শিশুদের কল্যাণে নোবেল পদক নিলামে তুললেন রুশ সাংবাদিক
মানবজমিন ডেস্ক
(৪ দিন আগে) ২১ জুন ২০২২, মঙ্গলবার, ১০:৩৭ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ২:২২ অপরাহ্ন

ইউক্রেনের শিশুদের কল্যাণের জন্য নিজের নোবেল পদক নিলামে তুললেন রুশ সাংবাদিক দিমিত্রি মুরাটভ। যুদ্ধে যেসব শিশু তাদের বাবা-মা’কে হারিয়েছে, তাদের নিরাপদ ভবিষ্যত নিশ্চিতের জন্য এই অর্থ ব্যয় করা হবে বলে জানান তিনি। একইসঙ্গে তিনি দাবি করেছেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান বেশিরভাগ রুশ নাগরিকই সমর্থন করেন না।
ডয়চে ভেলের খবরে জানানো হয়েছে, মুরাটভ প্রথম থেকেই রুশ সরকারের চরম সমালোচক হিসেবে পরিচিত। তিনি সরকারবিরোধী ‘নোভায়া গাজেটা' গণমাধ্যমের সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং সম্পাদক। ১৯৯৩ সালে সাবেক রুশ প্রেসিডেন্ট মিখাইল গর্বাচভের নোবেল শান্তি পুরস্কারের অর্থ দিয়ে এটি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল৷ বছরের পর বছর ধরে কঠোর নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কাজ চালিয়ে গিয়েছে নোভায়া। কিন্তু এ বছরের মার্চ মাসে এটি শেষ পর্যন্ত তার কার্যক্রম বন্ধে বাধ্য হয়। রাশিয়ায় ভুয়া খবর প্রচারের শাস্তি ঘোষণা করা হয় সর্বোচ্চ ১৫ বছরের কারাদণ্ড। এরপরই নিরাপত্তার কথা বিবেচনায় বন্ধ করে দেয়া হয় নোভায়া গাজেটা।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে মুরাটভ বলেন, রাশিয়া ইউক্রেনকে আক্রমণ করেছে। সেখানে এখন এক কোটি ৫৫ লাখ শরণার্থী রয়েছে। আমরা কী করতে পারি তা নিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে ভেবেছি।
রাশিয়ার আক্রমণের পর প্রায় ৬৮ লাখ ইউক্রেনীয় দেশ ছেড়েছেন। জাতিসংঘের হিসেবে, তাদের প্রায় ৩০ লাখ প্রতিবেশী দেশগুলো ছাড়িয়ে অন্যান্য দেশেও আশ্রয় নিয়েছেন। জার্মানিতে সাত লাখেরও বেশি ইউক্রেনীয় আশ্রয় নিয়েছেন। আরো ৭৭ লাখ দেশের ভেতরেই ঘরছাড়া হয়েছেন। তাদের সাহায্য করতে ২০শে জুন বিশ্ব শরণার্থী দিবসে মুরাটভের পদক নিলামে তোলা হয়। ফিলিপাইনের মারিয়া রেসা ও রাশিয়ার দিমিত্রি মুরাটভকে ২০২১ সালের শান্তি পুরস্কারের জন্য বেছে নিয়েছিল নোবেল কমিটি। বিশ্বের যে সাংবাদিকরা প্রতিকুল পরিস্থিতিতেও নৈতিক সাংবাদিকতার চর্চা করছেন, তাদের প্রতিনিধি হিসাবে রেসা ও মুরাটভের এই স্বীকৃতি বলে ঘোষণা করা হয় কমিটির তরফ থেকে।
মুরাটভের দাবি, আধুনিক রাশিয়ায় স্বাধীন সাংবাদিকতা অসম্ভব। তবে কন্টেন্ট দেয়া সম্ভব–যেমন, ইউটিউব প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে। এছাড়া ভিপিএন পরিষেবার মাধ্যমে কিছু করা সম্ভব। কিন্তু প্রতিদিন আরো কঠিন হচ্ছে এগুলি। মুরাটভ বলেন, যারা বিশ্বাস করেন যে রাশিয়ার ক্ষমতাসীনদের মধ্যে বিভক্তির ফলে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে সরানো সম্ভব হবে তারা ভুল করেছেন। তাছাড়া রুশরা পুতিনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার সম্ভাবনা নিয়েও আশাবাদী নন তিনি। মুরাটভ জানান, রাশিয়া এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে যেখানে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসেবে পুতিন যতদিন ক্ষমতায় থাকবেন, যতক্ষণ তিনি নিজেকে উপযুক্ত মনে করেন। তিনি মনে করেন, এটি রাশিয়ার মঙ্গলের জন্য। তিনি প্রেসিডেন্ট হবেন নাকি কোনো রাজা হবেন, আমি জানি না। কিন্তু স্বৈরাচারী হওয়ার দিকে তার ঝোঁক একেবারে স্পষ্ট।