বিশ্বজমিন
সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারালেন ম্যাক্রন
মানবজমিন ডেস্ক
(৫ দিন আগে) ২০ জুন ২০২২, সোমবার, ১২:০৩ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৫:৪১ অপরাহ্ন

ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি নির্বাচনে জিততে পারলো না ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রনের জোট। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার দুই মাসেরও কম সময়ের মধ্যে পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারালেন ম্যাক্রন। সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য তাদের প্রয়োজন ছিল ২৮৯ আসন। কিন্তু মাক্রনের জোট পেয়েছে ২৪৫টি আসন। নির্বাচনে রীতিমতো চমক দেখিয়েছে দেশটির ডানপন্থীরা।
বিবিসি জানিয়েছে, ম্যাক্রন ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন যাতে পার্লামেন্টে তার সংখ্যাগরিষ্ঠতা আরও শক্ত হয়। কিন্তু তার মধ্যপন্থী জোট কয়েক ডজন আসনে পরাজিত হয়েছে। ফলে ফরাসি রাজনীতি নতুন সংকটে পড়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি। নতুন নিয়োগ হওয়া প্রধানমন্ত্রী এলিজাবেথ বোর্ন জানান, এমন ঘটনা আগে কেউ দেখেনি। তিনি প্রেসিডেন্টের বাসভবনে দীর্ঘ এই বৈঠক শেষে বলেন, এই অবস্থা আমাদের দেশকে ঝুঁকিতে ফেলেছে। আমরা আভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিকভাবে নানা হুমকিতে রয়েছি। আমরা এখন একটি কার্যকরি সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিশ্চিতের লক্ষ্যে কাজ করবো।
জার্মান গণমাধ্যম ডয়চে ভেলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইমানুয়েল ম্যাক্রনের জোটের নাম হলো এনসেম্বল। এই মধ্যপন্থি জোটই আগে ক্ষমতায় ছিল। পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য তাদের প্রয়োজন ছিল ২৮৯ আসন। কিন্তু ম্যাক্রনের জোট আসন পেয়েছে ২৪৫টি। অপরদিকে জ্যঁ লুক মেলাঞ্চের নেতৃত্বে জোট বেঁধেছে সমাজবাদী, বামপন্থি ও গ্রিন পার্টি। তাদের বলা হচ্ছে নুপেস জোট। তারা ১৩১টি আসনে জিতেছেন। মেলাঞ্চ বলেছেন, এই ফলাফল দেখিয়ে দিচ্ছে, প্রেসিডেন্ট ব্যর্থ। এদিকে, কট্টর দক্ষিণপন্থি লা পেন ছিলেন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ম্যাক্রনের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী। তার নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল রেলি পার্টি ৮৯টি আসনে জিতেছে। আগের পার্লামেন্টে পেনের দল পেয়েছিল আটটি আসন। ফলে আসনপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে তারা বিপুল সাফল্য পেয়েছে এবং তৃতীয় স্থানে আছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই নির্বাচনী ফলাফল ফ্রান্সের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে জটিল করে দিয়েছে। এখন একটি ঝুলন্ত পার্লামেন্ট হয়েছে, কেউই চূড়ান্ত সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাননি। ফলে রাজনৈতিক দিক থেকে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এখন দল ও জোটগুলো ক্ষমতা ভাগাভাগি করতে পারে। সাবেক ফরাসি প্রেসিডেন্ট মিতেরঁর আমলে ১৯৮৮ থেকে ১৯৯১ পর্যন্ত এমনই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল। অন্যদিকে, দ্বিতীয় বিকল্প হলো, রাজনৈতিক অচলাবস্থা এবং আবার নির্বাচন। গত এপ্রিলেই ম্যাক্রন দ্বিতীয়বারের জন্য ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন। কিন্তু কয়েক মাস পরেই পার্লামেন্ট নির্বাচনে সেই ম্যাক্রনই নিজের জোটকে জেতাতে পারলেন না। জানা গেছে, রক্ষণশীল দল এলআর ৬১টি আসন পেয়েছে। তারাই এখন কিং-মেকারের ভূমিকা নিতে পারে। এছাড়া পার্লামেন্টে নিজের জোট ক্ষমতায় না এলে ম্যাক্রন তার সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে পারবেন না। অবসরের বয়স বাড়াতে পারবেন না। ফলে অনেক ক্ষেত্রেই তাকে বাধার মুখে পড়তে হবে।