ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

শরীর ও মন

চুলের সঠিক পরিচর্যা

ডা. এসএম বখতিয়ার কামাল
১০ জুন ২০২২, শুক্রবার
mzamin

কেন চুল পড়তে পারে?
চুল পড়ার সঠিক বা নির্দিষ্ট কারণ এখনো জানা যায়নি। তবে বিভিন্ন গবেষণা ও পর্যবেক্ষণে কিছু বিষয়কে চুলপড়ার জন্য দায়ী করা হয়। এ কারণগুলো চিহ্নিত করে সঠিক পরিচর্যা করলে চুল ঝলমলে ও সতেজ থাকবে।

সাধারণত চুলপড়ার জন্য কারণগুলো হলো- আবহাওয়ায় তারতম্য, পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম, চুল টাইট করে বেঁধে রাখলে বা চুলের প্রতি অবিচার, বংশগত কারণ, হঠাৎ ওজন কমে যাওয়া, মেনোপজ, বায়ুদূষণ, বয়স, স্ট্রেস, স্মোকিং, পুষ্টির অভাব, হরমোনাল ইমব্যালেন্স, জেনেটিক কারণ, স্কাল্প ইনফেকশন, হেয়ার প্রোডাক্টের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার, বেশকিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, অটোইমিউন ডিজিজ, অ্যানিমিয়া প্রভৃতি।

প্রতিরোধ/ উপায়সমূহ: 
প্রতিদিন কিছু চুল ঝরে পড়া একটি স্বাভাবিক বিষয়, এতে দুশ্চিন্তার কিছু নেই। ন্যাচারেলি চুল পড়ার সঙ্গে সঙ্গে আবার মাথায় নতুন চুল গজাবে। তবে লক্ষ্য রাখতে হবে বেশি পরিমাণে পড়ছে কিনা। যদি দেখেন চুল পড়ার হার স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি, তখনই টাকা পড়া শুরু হয় এক্ষেত্রে পরিত্রাণ পেতে টেনশনমুক্ত থাকতে হবে, পর্যাপ্ত ঘুমাতে হবে, খাদ্যাভ্যাস ঠিক রাখতে হবে এবং সর্বোপরি চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। 

১. প্রোটিন চুল গঠনে সহায়ক। এর অভাবে চুলের বৃদ্ধি থেমে যায়, চুল পড়ে যায় এমনকি চুলের রঙেও আসতে পারে পরিবর্তন। মাছ-মাংস, ডিম, দুধ, ডাল এবং শিমজাতীয় খাবার থেকে প্রোটিন পাওয়া যায়। 
২. ডাল, পালং শাক ও আয়রণ সমৃদ্ধ খাবার খেয়ে আয়রণের অভাব পূরণ করতে পারি। যা চুল পড়া প্রতিরোধে সহায়ক। 
৩. স্ট্রেসের মাত্রা বেড়ে গেলে চুল পড়তে পারে। তাই স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণ করুন। 
৪. চুলে হেয়ার স্ট্রেইটেনিং কেমিক্যাল এবং জেলি ইত্যাদির ব্যবহার পরিহার করুন। 
৫. থাইরয়েডে কোনো সমস্যা হলে শরীরে দেখা দিতে পারে অস্বাভাবিকতা।

বিজ্ঞাপন
এ কারণে অস্বাভাবিক পরিমাণে চুল পড়ার পাশাপাশি থাইরয়েড সমস্যার অন্যান্য উপসর্গ দেখতে পেলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। 
৬. চুলে আঁটসাঁট স্টাইল করলে শক্ত টানের ফলে চুলের গোড়া ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং চুল পড়া শুরু হয়। তাছাড়া  চুলের গ্রন্থি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ফলে সেখানে আর চুল গজায় না। তাই এটি বাদ দিতে হবে।
৭. চুলের বৃদ্ধির জন্য আমিষ খুবই প্রয়োজনীয়। তবে অবশ্যই চর্বিহীন আমিষ খাদ্য গ্রহণ করতে হবে। মাছে প্রচুর পরিমাণ চর্বিহীন আমিষ থাকে। তাছাড়া চর্বিহীন মাংস মানবদেহের আমিষের চাহিদা পূরণ করে থাকে। বাদাম পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের ভোজ্য বীজে প্রচুর ভিটামিন ই এবং স্বাস্থ্যকর স্নেহজাতীয় পদার্থ থাকে যা চুলে পর্যাপ্ত আর্দ্রতা ও পুষ্টি জোগায়।
৮. শরীরে পর্যাপ্ত পানির অভাব দেখা দিলে চুলের গ্রন্থিগুলো দুর্বল হয়ে যায়। এতে চুলের ঘনত্ব কমে যায় এবং চুল পড়া শুরু হয়।
৯. অতিরিক্ত দুশ্চিন্তার ফলে টেলোজেন এফ্লুভিয়াম (যার ফলে মাথা থেকে আপনা আপনি চুল ঝরে যায়), ট্রিকোটেলোমেনিয়া (যার ফলে বারবার চুল টানার ইচ্ছা জাগে ফলে মাথা থেকে প্রচুর পরিমাণে চুল পড়ে যায়)  এছাড়া অ্যালোপেসিয়া একটি অন্যতম কারণ। 

চুলপড়া প্রতিরোধের জন্য বিভিন্ন ধরনের ওষুধ ও থেরাপি রয়েছে। মিনোক্সিডিল এর মধ্যে বেশ জনপ্রিয়। ইহা চুল পড়া প্রতিরোধ এবং পুনরায় চুল গজানোর জন্য বেশ কার্যকরী ওষুধ। আরেকটি কার্যকরী ওষুধ হচ্ছে, ফিনাস্টেরাইড যা মুখে খাওয়ার উপযোগী। পিআরপি থেরাপি বর্তমানে চুলপড়া প্রতিরোধ ও নতুন চুল গজানোর জন্য খুবই জনপ্রিয় পদ্ধতি। এটি কোনো নামকরা বা প্রতিষ্ঠিত সেন্টার থেকে নিতে পারেন।

লেখক: সহকারী অধ্যাপক চর্ম, যৌন ও অ্যালার্জি রোগ বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল 
কামাল হেয়ার অ্যান্ড স্কিন সেন্টার, ফার্মগেট, ঢাকা। 
প্রয়োজনে-০১৭১১৪৪০৫৫৮।
 

শরীর ও মন থেকে আরও পড়ুন

   

শরীর ও মন সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status