ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

প্রথম পাতা

লোডশেডিং মূল্যস্ফীতির কারণে দেশের মানুষ ভুগছে

স্টাফ রিপোর্টার
৫ জুন ২০২৩, সোমবার
mzamin

মূল্যস্ফীতি ও লোডশেডিংয়ের কারণে দেশের মানুষ ভুগছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকার শতভাগ বিদ্যুৎ দেয়ার অঙ্গীকার করেছিল এবং প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছে। কিন্তু আজ সারা বিশ্বে গ্যাস-তেল-কয়লার দাম বাড়ায় বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। টাকা দিয়েও এখন আর তা কেনা সম্ভব হচ্ছে না। যার কারণে মুদ্রাস্ফীতির পাশাপাশি দেশের মানুষ লোডশেডিংয়েও ভুগছে। গতকাল গণভবন থেকে এক ভার্চ্যুয়াল অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। 

চিলাহাটি-ঢাকা-চিলাহাটি রুটে নতুন আন্তঃনগর ট্রেন ‘চিলাহাটি এক্সপ্রেস’ এর উদ্বোধনী উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ৮০০ যাত্রী ধারণক্ষমতা সম্পন্ন আন্তঃনগর ট্রেন ‘চিলাহাটি এক্সপ্রেস’ উদ্বোধন করেন- যা সপ্তাহে ছয় দিন এই রুটে চলাচল করবে। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব এম তোফাজ্জেল হোসেন মিয়ার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন রেলওয়ে সচিব ড. মো. হুমায়ন কবির। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন রেলমন্ত্রী মো. নুরুল ইসলাম সুজন। 

শেখ হাসিনা বলেন, কোভিড-১৯ মহামারি, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ এবং নিষেধাজ্ঞা-পাল্টা নিষেধাজ্ঞার কারণে বিশ্বজুড়ে প্রতিটি পণ্যের দাম বাড়ানো হয়েছে। বাংলাদেশ অন্য দেশ থেকে জ্বালানি তেল, গ্যাস, খাদ্যসামগ্রী, গম, চিনিসহ যা কিছু আমদানি করছে, তার দাম বৃদ্ধির পাশাপাশি পরিবহন খরচও বৃদ্ধি পেয়েছে। যা দেশের অর্থনীতির ওপর চাপ সৃষ্টি করছে। 

তিনি বলেন, আমরা পরিস্থিতি সামাল দিতে কিছু উদ্যোগ নিয়েছি।

বিজ্ঞাপন
যদি যুদ্ধ না হতো এবং এর কারণে নিষেধাজ্ঞা না থাকতো- তাহলে দেশ এ ধরনের কোনো অসুবিধার সম্মুখীন হতো না। আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারতাম। কিন্তু যুদ্ধের কারণে বিশ্বের প্রতিটি দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তবে বাংলাদেশ এখনো কোনো সংকটের মধ্যে পড়েনি জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ইনশাআল্লাহ- দেশ সংকটময় পরিস্থিতিতে পড়বে না। প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার জাতীয় বাজেট বাস্তবায়ন করতে সক্ষম। কারণ, তারা তাদের সক্ষমতা আগেই দেখিয়েছেন। 

আমরা দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় আকারের বাজেট দিয়েছি এবং আমরা এই বাজেট বাস্তবায়ন করতে দৃঢ়-প্রতিজ্ঞ। তিনি বলেন, অনেকেই অনেক কথা বলবে কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার দেশ ও দেশের মানুষের মঙ্গল কিসে- তা জানে। সরকারপ্রধান বলেন, একদল লোক দেশে পর্যাপ্ত সংখ্যক টেলিভিশন চ্যানেল থাকায় এর অপব্যবহার  করছে। আওয়ামী সরকারই বেসরকারি খাতে এগুলোর লাইসেন্স দিয়েছে। সরকার যাই করুক না কেন, তারা এসি রুমে বসে সরকারের সব কাজের সমালোচনা করে ও ‘কিন্তু’ (ত্রুটি) খুঁজে বেড়ায়। তারা দেশের জনগণকে হতাশ করার জন্য এবং বিদেশিদের সামনে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কিছু কথাও ছড়িয়ে দেয়। তারা এ থেকে কী পায়- আমি জানি না। তারা সম্ভবত কিছু হাদিয়া (টাকা) সংগ্রহ করে থাকতে পারে- আমি আসলে বলতে পারবো না। তবে তারা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কথা বলে তৃপ্তি পায়। 

তিনি বলেন, আমি এই ধরনের লোকদের বলতে চাই- অনুগ্রহ করে মনে রাখবেন, আপনি গত বছর কী বলেছিলেন এবং আজকের বাংলাদেশ কোথা থেকে কোথায় এসে দাঁড়িয়েছে। অনুগ্রহ করে হিসাব করুন ও তুলনা করুন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, দেশের জনগণকে একটা কাজ করতে হবে। আমি বারবার বলছি যে- আমাদের যত অনাবাদি জমি আছে তার সব চাষ করতে হবে। উৎপাদন বাড়াতে হবে। আমাদের যত জলাশয় আছে সেখানে মাছ চাষ করতে হবে। 

এ সময় দেশের উত্তরাঞ্চলের উন্নয়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ অঞ্চলে চা উৎপাদন না হলেও আওয়ামী লীগ সরকার তার উদ্যোগে সেখানে চা চাষ শুরু করে। এখন পঞ্চগড় থেকে কুঁড়িগ্রাম পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকা চা চাষের আওতায় আনা হয়েছে। সরকার উত্তরাঞ্চলের মানুষের জন্য বহুবিধ কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, চিলাহাটি-ঢাকা-চিলাহাটি রুটে এই ‘চিলাহাটি এক্সপ্রেস’ চালু হওয়ার মধ্যদিয়ে উত্তরাঞ্চল, বিশেষ করে নীলফামারীতে ব্যবসা-বাণিজ্যের ভালো সুযোগ তৈরি হবে। এটি কেবল জনগণের যাতায়াতের সুবিধাই নিয়ে আসবে না, বরং ব্যবসা-বাণিজ্যের সুযোগও বাড়াবে। 

তিনি বলেন, সরকার সারা দেশে রেল নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ করছে এবং পদ্মা সেতুতে রেল চালুর পর ভাঙ্গা থেকে বরিশালের রেল যোগাযোগ চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে। বরিশাল থেকে পায়রা বন্দর পর্যন্ত রেল যোগাযোগ স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে। শেখ হাসিনা বলেন, সরকার যাত্রীসেবা ও পণ্য সরবরাহের জন্য ৪৬টি নতুন ব্রড-গেজ লোকোমোটিভ, ৪৬০টি নতুন ব্রড-গেজ যাত্রীবাহী গাড়ি, ১৫০টি নতুন মিটারগেজ যাত্রীবাহী গাড়ি, ১২৫টি আধুনিক লাগেজ ভ্যান ও ১ হাজার ৩১০টি নতুন ওয়াগন সংগ্রহের উদ্যোগ নিয়েছে। মানুষ এর সুফল পাবে ও ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধি পাবে।

 

প্রথম পাতা থেকে আরও পড়ুন

   

প্রথম পাতা সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status