ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

ঈদ আনন্দ ২০২৩

যে দেশের রাজধানীতে রাতে দোকানের শাটার বন্ধ হয় না

কাজল ঘোষ, মালদ্বীপ থেকে ফিরে

(১ বছর আগে) ২১ এপ্রিল ২০২৩, শুক্রবার, ৯:১৮ অপরাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ৯:৩৫ পূর্বাহ্ন

mzamin

অবাক করা বিষয়। ছয় কিলোমিটার দীর্ঘ একটি শহর। চারধারে সাগরের নীল জলে বন্দি। এর মধ্যেই রয়েছে পঁয়ত্রিশ তলা ভবন। ভবনটি একটি হাসপাতাল। শহরের অপরপ্রান্ত থেকে মনে হবে যেন ভাসমান ফেরি। রাতের বর্ণিল আলো শীতল বাতাসে অপরূপ মনে হয়। এ-গলি, ও-গলি করে বাইক নিয়ে ঘুরে দেখতে আধ ঘণ্টা লাগবে। তিন দিনের মালদ্বীপ ভ্রমণে প্রতি রাতই ঘুরে বেরিয়েছি হেঁটে হেঁটে। মনে হয়েছে চিরচেনা। 
রাজধানী শহর মালের কথা বলছি।

বিজ্ঞাপন
শহরের যে পাশ দিয়েই গিয়েছি নীল সাগরের চাদর জড়িয়ে রেখেছে। পৃথিবীর সবচেয়ে ছোট দেশের তালিকায় দেশটির অবস্থান দশে। দেশটি যেকোনো সময় বিলুপ্ত হয়ে যাবে- এমন কথা শোনা যাচ্ছে ফি দশক ধরেই। কিন্তু দেশটিতে বাসরত মানুষের মধ্যে এমন কোনো শঙ্কা দেখিনি। প্রায় বারো শত দ্বীপের সমষ্টি মালদ্বীপ। তার মধ্যে কমবেশি ২৫০টি দ্বীপ ব্যবহারযোগ্য। ২৯৮ বর্গকিলোমিটার স্থলভাগ দেশটির। আর চারধারে ভারত মহাসাগরবেষ্টিত। 
মালদ্বীপের স্থানীয় ভাষায় মাগু মানে সড়ক। মালদ্বীপের ভেলানা ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে নেমে দশ মিনিটের দূরত্বে মালের ঠিক উল্টোদিকে নতুন গড়ে ওঠা শহর হোলেমালেতে থ্রি ইন গেস্ট হাউজে ওঠি। লাগেজ রিসিপশনে রেখেই বাইরে বেরিয়ে চোখে পড়ে ইংরেজিতে যেকোনো নামের সঙ্গেই মাগু শব্দটি। সঙ্গে থাকা মালদ্বীপ প্রবাসী সাংবাদিক বন্ধুদের জিজ্ঞেস করতেই বলে মাগু শব্দের অর্থ হচ্ছে রোড। আমরা ওঠেছিলাম নিরুল্লু মাগু এলাকায়। 
রাতের মালে ঘুরে দেখতে গিয়েও এমন বেশকিছু রোডের দেখা মিলেছে। মাজেদী মাগু, ফারিদী মাগু, অর্কিড মাগু, ইস্কন্দার মাগু, বাইংজিদ মাগু, বদ্দুপানু মাগু, সোসান মাগু। মধ্যরাতে যখন আড্ডা দিচ্ছি তখন বাংলাদেশ সময় রাত দুটো। অবাক হয়ে লক্ষ্য করি রাস্তার পাশে বাইক লাইন করে রাখা। কোনো নিরাপত্তারক্ষী নেই। ফুটপাথ ধরে এগুতে এগুতে খেয়াল করি সব দোকানের ভেতর কি কি পণ্য আছে তা দেখা যাচ্ছে। বাইরে থেকে দরোজা লক করা, এই যা। পুরো মালেতে একই চিত্র। এখানে কোনো দোকানেই শাটার বন্ধ করা হয় না। কারণ এখানে চুরির কোনো ঘটনাই ঘটে না। আর পুরো চলতি পথে কোথাও পুলিশ বা নিরাপত্তারক্ষী চোখে পড়েনি। অবাক হয়ে প্রবাসী বাঙালি শ্রমিক বন্ধুদের কাছে জানতে চাইলে বললো, এখানে নিয়মটাই সবাই মেনে চলে। নিয়মের বাইরে কেউ কিছু করবে না। 
মালে থেকে হোলেমালেতে ফেরার জন্য যখন এমরান আমাকে বাইকে নিয়ে রওয়ানা হলো তখন বললো, হেলমেট পরে নিতে। কিন্তু যখনই হোলেমালে শহরে প্রবেশ করলো তখন আবার তা খুলে ফেলতে বললো। বললাম, ঘটনা কি? জানালো যখন বড় রাস্তা দিয়ে বাইক চালাতে হবে তখন হেলমেট বাধ্যতামূলক। কিন্তু এলাকার ভেতরে সে নিয়ম নেই। মালে থেকে হোলেমালেতে যাওয়ার সময় খেয়াল করলাম একটিই মাত্র সিগন্যাল। রেড লাইট জ¦লে ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই বাইক নিয়ে দাঁড়িয়ে গেল এমরান। আশেপাশে কোনো গাড়ি চোখে পড়লো না। তাকাতেই বললো, দাদা, এটাই এখানকার নিয়ম। সবাই নিয়ম মেনে চলে, এর ব্যত্যয় হয় না।

ঈদ আনন্দ ২০২৩ থেকে আরও পড়ুন

   

ঈদ আনন্দ ২০২৩ সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status