প্রথম পাতা
সমৃদ্ধ দেশ গড়ার শপথ
স্টাফ রিপোর্টার, ঢাকা ও সাভার
২৭ মার্চ ২০২৩, সোমবারমহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে বিনম্র শ্রদ্ধায় স্মরণ করা হয়েছে বীর শহীদদের। দিকে দিকে উচ্চারিত হয়েছে শোষণমুক্ত, বৈষম্যহীন সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার শপথ। দিবসটি উপলক্ষে গতকাল সারা দেশে পালিত হয়েছে নানা কর্মসূচি।
ভোরে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করে দিবসের কর্মসূচির সূচনা করেন প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান লাখো মানুষ। ওদিকে দিবসটি উপলক্ষে আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচি পালন করে। মহান স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এ সময় রাজধানীর ধানমণ্ডির ৩২ নম্বর বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে ও তার আশপাশের সড়কগুলোতে দলীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের উপস্থিতিতে উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়। সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে তার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির সামনে কিছুক্ষণ সময় নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। এ সময় সেনাবাহিনীর একটি সুসজ্জিত চৌকস দল অভিবাদন জানায়।
জাতীয় স্মৃতিসৌধে লাখো জনতার ঢল: মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে বীর শহীদদের প্রতি লাখো জনতার শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় ফুলে ফুলে ভরে ওঠে জাতীয় স্মৃতিসৌধ। সকাল থেকে হাতে লাল সবুজের পতাকা আর রঙ-বেরঙের ফুল নিয়ে দূর-দুরান্ত থেকে জাতীয় স্মৃতিসৌধে আসেন সাধারণ মানুষ। তাদের হৃদয়ের ভালোবাসা দিয়ে স্মরণ করেন স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদ সূর্য সন্তানদের। মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে রোবরার সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, প্রধান বিচারপতি, জাতীয় সংসদের স্পিকার। এরপর নানা কর্মসূচির মাধ্যমে স্বাধীনতার ৫২তম দিবসের উদ্যাপন ও মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের স্মরণ করেন জাতি। ভোরে প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বীর সেনানিদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। তিন বাহিনীর একটি চৌকস দল এ সময় শহীদদের প্রতি সালাম জানায়। বিউগলে বাজানো হয় করুণ সুর। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে কিছুটা সময় নীরবে দাঁড়িয়ে বীর সন্তানদের স্মরণ করেন প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী। পরে আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসাবে দলের পক্ষে নেতৃবৃন্দদেরকে নিয়ে আবারো স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান শেখ হাসিনা। এরপর বিচারপতিগণ, তিন বাহিনীর প্রধান ও কূটনীতিকরা শহীদ বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। স্মৃতিসৌধে ভিআইপিদের শ্রদ্ধা জানানোর পর সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেয়া হয়।
সকালে বিএনপির পক্ষ থেকেও স্মৃতিসেধে শ্রদ্ধা জানানো হয়। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ড. মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর বীর উত্তম, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, আব্দুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দীন খোকন, খায়রুল কবির খোকন, হাবীন-উন-নবী খান সোহেল, ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু আশফাক, সাধারণ সম্পাদক নিপুণ রায় চৌধুরী, কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী সদস্য নাজিম উদ্দীন আলম, ঢাকা উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
পর্যায়ক্রমে জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, গণবিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (বিপিএটিসি), সাভার জাসদ, সিপিবি, ওয়ার্কার্স পার্টি, বাসদ, সাম্যবাদী দল, গণতন্ত্রী পার্টি, যুবলীগ, যুব ইউনিয়ন, ছাত্রলীগ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট, মহিলা পরিষদ, যুবদল, ছাত্রদল, মহিলা দল, স্বেচ্ছাসেবক দল, জাতীয়তাবাদী মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম দলসহ বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকে স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক দলের সদস্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, এনজিও প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক সামাজিক ও সেচ্ছাসেবী সংগঠন। নানা বয়সের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ মহান স্বাধীনতা দিবসে বিভিন্ন ব্যানার ও ফেস্টুন হাতে নিয়ে স্মৃতিসৌধের শহীদ বেদীতে শ্রদ্ধা জানান।