ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

বাংলারজমিন

পদ্মা নদী ভাঙন

গৃহহীন হওয়ার শঙ্কায় হাজারো মানুষ

ফারুক আহমেদ চৌধুরী, চাঁপাই নবাবগঞ্জ থেকে
২৪ মার্চ ২০২৩, শুক্রবার
mzamin

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চাঁপাই নবাবগঞ্জকে ভূমি-গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করেছেন গতকাল বুধবার। একই সময়ে পদ্মা নদীর ভাঙনের কারণে নতুন করে গৃহহীন হওয়ার শঙ্কায় চাঁপাই নবাবগঞ্জ সদর উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের হাজারো মানুষ। পদ্মায় সামান্য পানি বাড়তেই দেড় কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ভাঙন শুরু হয়েছে। গত তিনদিনে নদীগর্ভে চলে গেছে ১০০ বিঘার বেশি আবাদি জমি। পদ্মার ভাঙনে  মানচিত্র থেকে ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে নদীর চরে গড়ে ওঠা এ জনপদ।  জানা গেছে, পদ্মা নদীভাঙন ও বন্যাকে মোকাবিলা করে টিকে থাকতে হয় এ ইউনিয়নের মানুষকে। বিশেষ করে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বন্যায় নদীপাড়ের মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ না থাকায় প্রতিবছরই এখানে ভাঙন দেখা দেয়। এতে নদীগর্ভে বিলীন হয় ফসলী জমি, বাড়িঘরসহ নানা স্থাপনা। পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রতিবেদন বলছে, নারায়ণপুর ইউনিয়নটি পদ্মা নদীর ডানতীরে অবস্থিত।

বিজ্ঞাপন
এখানে পশ্চিমে ভারতের সীমানা ও পূর্ব দিকে পদ্মা নদী অবস্থিত। ৪৬ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের এ ইউনিয়নটির জনসংখ্যা ১৭ হাজারের বেশি। মোট জমির পরিমাণ প্রায় ৩ হাজার ২৭৪ হেক্টর যার মধ্যে আবাদি জমির পরিমাণ ৩ হাজার ২৪৪ হেক্টর। এই ইউনিয়নে একটি কলেজ, ৩টি মাদ্রাসা, একটি উচ্চবিদ্যালয়, ৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৭৭টি মসজিদ, ৪টি হাট-বাজার, একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র, দু’টি কমিউনিটি ক্লিনিক, একটি সাইক্লোন উপকেন্দ্র, একটি সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র ও দু’টি বিওপি, নারায়ণপুর ইউনিয়ন পরিষদ, সাধারণ মানুষের বসতভিটাসহ অন্যান্য স্থাপনা ও ফসলী জমি রয়েছে। প্রতিবেদন বলছে, নারায়ণপুর ইউনিয়নের চরটিতে প্রতিবছরই বিভিন্ন স্থান ভাঙন কবলিত হয়। ভাঙন কবলিত হয়ে চরটির আবাদি জমিসহ বসতভিটা ও অন্যান্য স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। বিশেষ করে প্রতিবছর পদ্মা নদীর বন্যার পানি হ্রাস-বৃদ্ধির সময় ভাঙনের মাত্রা ভয়াবহ আকার ধারণ করে। ভাঙন হুমকিতে থাকা ওই ইউনিয়নের বাসিন্দা শরীয়ত উল্লাহ লাহু মানবজমিনকে জানান,  গত কয়েক বছর ধরে পদ্মা নদীতে ভাঙন চলছে। এ জনপদের মাটি ও স্থাপনা নদীর বুকে তলিয়ে যাচ্ছে। ভাঙন ঝুঁকিতে থাকা অনেকে ঘর সরিয়ে নিরাপদে নিয়ে যাচ্ছেন। কয়েক বছর আগে এই ইউনিয়নের ৫ ও ৭ নম্বর ওয়ার্ড নদীর ওপারে পার্শ্ববর্তী সুন্দরপুর ইউনিয়নের মাটিতে বসতি গড়েছে। অনেকে বরেন্দ্র অঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকায় বসবাস করছে। ভাঙন নিয়ন্ত্রণ না হলে ইউনিয়নটি মানচিত্র থেকে বিলীন হয়ে যেতে পারে। এজন্য ভাঙন রোধে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি।  নারায়ণপুর ইউপি চেয়ারম্যান নাজির হোসেন জানান, পদ্মার ভাঙনে ফসলী জমি নদীগর্ভে চলে যাচ্ছে। বহু স্থাপনা ভাঙন ঝুঁকিতে। এখনই সরকারিভাবে ব্যবস্থা না নিলে এলাকাবাসীকে বড় ধরনের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করা যাবে না। চাঁপাই নবাবগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোখলেছুর রহমান মানবজমিনকে বলেন, নারায়ণপুর ইউনিয়নে পদ্মা নদীর ভাঙনের বিষয়টি আমি জেনেছি। কিন্তু কাজ করার জন্য বাজেট নেই। অস্থায়ীভাবে প্রতিরক্ষার জন্য ৯ কোটি ২০ লাখ টাকার প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে। কিন্তু অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে অর্থ বরাদ্দ হয়নি। বরাদ্দ পাওয়া গেলে ভাঙন রোধে কাজ করা হবে। সেখানে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের জন্য ইন্সটিটিউট অব ওয়াটার মডেলিং (আইডব্লিউএম) একটি ভিজিবিলিটি স্টাডি করছে বলে জানান তিনি।

বাংলারজমিন থেকে আরও পড়ুন

   

বাংলারজমিন সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status