ঢাকা, ২৯ মার্চ ২০২৪, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিঃ

বাংলারজমিন

আরমিনাকে ফেরত আনতে পিতা-মাতার আকুতি

ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
২২ মার্চ ২০২৩, বুধবার

ফুলবাড়ী উপজেলার শিবনগর ইউপি’র সমশেরনগর গ্রামের অসুস্থ মেয়ে আরমিনাকে সৌদি আরব থেকে ফেরত আনতে আকুতি জানিয়েছেন তার মা-বাবা। আরমিনার বাবা উপজেলার শিবনগর ইউপি’র সমশেরনগর গ্রামের মো. আজিজার রহমানের লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, শিবনগর ইউপি’র পাঠকপাড়া গ্রামের মৃত সফিমত শাহ্‌’র  ছেলে মো. সেকেন্দার হাসান সৌদি আরবে ভালো চাকরি দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে তার মেয়ে মোছা. আরমিনা (৩০) কে ২০২২ সালে সৌদিতে পাঠান দালালের মাধ্যমে। ইতিমধ্যে ৯ মাস পার হলেও এখন পর্যন্ত একটি টাকাও বাড়িতে পাঠাতে পারেনি আরমিনা বেগম। বর্তমান তিনি সৌদি আরবের রিয়াদে কফিলের বাড়িতে রয়েছেন। সেখানে তার মেয়ে আরমিনা প্রতিদিন মারধর ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। বর্তমান চরম অসুস্থতায় ভুগছে। তাকে সেখান থেকে বের হতে দেয়া হচ্ছে না। অসুস্থ অবস্থায় মারপিটসহ নানা রকম নির্যাতনের ছবি তার মায়ের কাছে পাঠিয়ে উদ্ধারের জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন। এই ঘটনায় দালালচক্র সেকেন্দার হাসানের বিরুদ্ধে আরমিনার বাবা মো. আজিজার রহমান গত বছরের ২৭শে ডিসেম্বর একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। এই ঘটনায় জড়িত দালাল মো. সেকেন্দার হাসান জানান, আমি চেষ্টা করছি, কিন্তু আমার কথা কোম্পানির এজেন্সি কোনোভাবে শুনছে না।

বিজ্ঞাপন
ফলে আমি চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছি। এ ব্যাপারে সৌদি প্রেরণকারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স নেপ এয়ার ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী মো. আবুল কালাম পাটোয়ারীর নাম্বারে ফোন দিলে জনৈক ব্যক্তি বলেন, তাকে উদ্ধারের জন্য প্রক্রিয়া চলছে। কিছু ঝামেলা আছে তা সমাধান করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। মেয়েকে উদ্ধারের জন্য বারবার কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও গড়িমসি করছে বলে তার পরিবার জানান। এ ব্যাপারে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা।   বালু উত্তোলনে নদীগর্ভে বিলীনের পথে ৩৫ পরিবার এসএম জাকির হোসেন, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) থেকে: পুকুর খননের অজুহাতে গ্রামের মাঝে দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীর উপর চলছে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন। নদী থেকে বালু উত্তোলনের পর সেই বালু রাখার জন্য নদীর পাশেই ৩ বছরের জন্য লিজ নেয়া হয়েছে অন্যের জমি। গত ২০২১ সাল থেকে  তোলা হচ্ছে এই বালু। ৩ বছর গড়িয়ে গেল তবে শেষ হলো না নেতার বালু উত্তোলন। হলো না পুকুর খনন। দীর্ঘদিন থেকে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট পৌর এলাকার লালমাটি গ্রামের উপর দিয়ে বয়ে চলা মহিলা নদীতে এই বালু উত্তোলনের মহোৎসবে মেতে আছেন স্থানীয় সামসুজ্জামান মানিক। এদিকে নদী থেকে টানা বালু উত্তোলনের কারণে ৩৫টি বসতবাড়িসহ তাদের আবাদি জমি ও ফলের বাগান নদীগর্ভে তলিয়ে যেতে পারে। গত ফেব্রুয়ারি মাসের ৫ তারিখে দিনাজপুর জেলা প্রশাসক বরাবর এমন একটি অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী ৩ পরিবার। সেই অভিযোগে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেন দিনাজপুর-৬ আসনের সংসদ সদস্য শিবলী সাদিক। অভিযোগে অসহায় পরিবারগুলো দাবি করেন, মানিক ও এতাউল নামের দু’জন ব্যক্তি দীর্ঘদিন আগে নদীর পাড়ে কিছু জমি কিনে নেয়। এরপর তারা ব্যক্তিগত জমিতে পুকুর খননের নামে সেখানে দুটি ভারী ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন শুরু করে। গত বছরের জুলাই মাসে স্থানীয়রা লিখিত অভিযোগ দিলে ওই মাসে স্থানীয় এমপির নির্দেশে সেখানে অভিযান চালিয়ে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ করে উপজেলা প্রশাসন। এরপর আবারও গত বছরের ডিসেম্বর মাস থেকে বালু উত্তোলন শুরু করে এই নেতা বলে নতুন করে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। গত শনিবার দুপুরে সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, নদীর পানিতে একটি ড্রেজার মেশিন রাখা আছে। নদীর পাড়েই হিন্দু সম্প্রদায়ের আবাদি জমি ও ফলের বাগানসহ তাদের বসবাসের ঘরবাড়ি। নদীর পাশেই বিশাল একটি জায়গায় কয়েক হাজার ট্রাক বালু স্তূপ করে রাখা আছে। সেখানে বিশেষ যন্ত্র এস্কেভেটরের (ভেকু) সাহায্য ৫ থেকে ৭টি ছোট ছোট ট্রাকে বালু উঠানো হচ্ছে। এসব ট্রাকে বালু যাচ্ছে আশপাশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায়। বালুবোঝাই এসব ট্রাক গ্রামের রাস্তা দিয়ে যাওয়ার ফলে রাস্তায় লালমাটির বালুর সৃষ্টি হচ্ছে। এতে যাতায়াতে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে গ্রামবাসীদের। এ ছাড়াও রাস্তার এসব লাল বালু বাতাসে উড়ে রাস্তার পাশের আম ও লিচুর গাছ লাল হয়ে যাচ্ছে। মরে যাচ্ছে আম-লিচুর মুকুল। ফলে লোকসানের শঙ্কায় বাগান মালিকরা। নদীগর্ভে বিলীন হবার শঙ্কায় প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়া বিশ্বনাথ রায় বলেন, ‘নদীর পাড়ের কিছু আবাদি জমি ও বসতভিটা ছাড়া আমাদের কিছু নেই। নদীর গভীর থেকে নিয়মিত বালু তোলা হচ্ছে। বর্ষাকালে আমাদের বাড়িঘরসহ সবকিছু নদীতে তলিয়ে যাবে। আমরা একাধিকবার অভিযোগ দিয়েছি। প্রশাসন এসে বন্ধও করে দিয়েছে। কিন্তু ক্ষমতার জোরে মানিক আবারো বালু উত্তোলন শুরু করে। আমাদের শেষ সম্বল ভিটেমাটি রক্ষা করতে আমরা সংখ্যালঘু লোকজন প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করছি।’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নেতা বলেন, ‘মানিক কোনো সময় আওয়ামী লীগ করতো না। তাকে কোনোদিন দলীয় মিছিল-মিটিং এ দেখা যায়নি।  ঘোড়াঘাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং বুলাকীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সদের আলী খন্দকার বলেন, ‘আমি মানিককে কোনোদিন কোনো দলীয় প্রোগামে দেখিনি। আওয়ামী লীগের কোনো পদপদবিতেও তিনি নেই।’ অভিযুক্ত সামসুজ্জামান মানিক বলেন, ‘আমি আমার নিজের জমিতে পুকুর খনন করছি। উপজেলা প্রশাসন থেকে আমি পুকুর খননের লিখিত আদেশ নিয়ে এসেছি। হিন্দু পরিবারের দু’একজন আমাকে নিয়ে চক্রান্ত করছে।’ ঘোড়াঘাট পৌরসভার মেয়র আব্দুস সাত্তার মিলন বলেন, ‘এরআগে আমার কাছে অভিযোগ এসেছিল। প্রশাসনের সহযোগিতায় বালু উত্তোলন আমি বন্ধ করে দিয়েছিলাম। নতুন করে অভিযোগ পেলে আবারো ব্যবস্থা নেবো।’ এদিকে ঘোড়াঘাট উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘পুকুর খননের বা শ্রেণি পরিবর্তনের অনুমতি দেয়ার ক্ষমতা আমাদের নেই। এটি কেবলমাত্র জেলা প্রশাসক দিতে পারে। তবে এই বালু উত্তোলনের বিষয়ে আমি জানি না। তিনি যদি অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করেন, তবে আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’

বাংলারজমিন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

বাংলারজমিন সর্বাধিক পঠিত

ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক/ এবারো ভোগাতে পারে ১৩ কিলোমিটার

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status