শেষের পাতা
ইমরানের চ্যালেঞ্জ
মানবজমিন ডেস্ক
২৫ মে ২০২২, বুধবারপাকিস্তানে আজ ইমরান খানের লংমার্চ। কিন্তু ‘ফিতনা’ ও ‘ফ্যাসাদ’ এড়ানোর উদ্দেশ্যে ক্ষমতাসীন জোট সরকার তাকে লংমার্চের অনুমতি দেবে না। এ বিষয়ে গতকাল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিপরিষদে সিদ্ধান্ত হয়েছে। রাজধানী ইসলামাবাদে দুই মাসের জন্য জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা। এর জবাবে চ্যালেঞ্জ ঘোষণা করেছেন ক্ষমতা হারানো ইমরান খান। তিনি বলেছেন, সরকারের সিদ্ধান্ত সত্ত্বেও তিনি আজকের লংমার্চে নেতৃত্ব দেবেন এবং তা হবে পাকিস্তানের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় লংমার্চ। ইমরান খান অভিযোগ করেছেন, আজকের লংমার্চকে সামনে রেখে তার দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে ধরপাকড় চালিয়েছে পুলিশ। দৃশ্যত মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে জোট সরকার ও ইমরান খান। অনলাইন জিও নিউজ বলছে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ মঙ্গলবার ঘোষণা করেছেন, ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিকে ইনসাফের (পিটিআই) লংমার্চ গণতান্ত্রিক নয়। এ থেকে ফিতনা ও ফ্যাসাদ ছড়ানো হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, পিটিআইয়ের নেতারা তাদের বাসভবন থেকে অদৃশ্য হয়ে গেছেন। তারা জমায়েত হয়েছেন খাইবার পখতুনখাওয়া প্রদেশে। তারা সেখানকার সম্পদ ও ব্যক্তিদের ব্যবহার করে ইসলামাবাদে আসতে চায় এবং হামলা চালাতে চান। তারা দাঙ্গার রূপ ধরে আসতে চায়। এমন আন্দোলনের কোনো আইনগত অথবা সাংবিধানিক মর্যাদা নেই। তাই এটাকে অনুমোদন দেয়া যায় না। তিনি আরও অভিযোগ করেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পিটিআই চেয়ারম্যান ইমরান খান দেশকে বিভক্ত করতে চান। পিটিআই সমর্থকদের সতর্ক করে তিনি বলেন, ইমরান খানের দ্বারা বিভ্রান্ত হবেন না। ইমরান খান তার দলের সদস্যদের প্রতি নির্দেশনা দিয়েছেন। বলেছেন, অন্য দলের লোকজনকে দস্যু প্রকৃতির লোক ও বিশ্বাসঘাতকদের নিয়ে রাজধানীমুখী হতে। এভাবেই তিনি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চান। সবারই মতপ্রকাশ ও শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ করার অধিকার আছে। কিন্তু পিটিআই শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ করতে চায়নি। যদি তারা ‘ব্লাডি মার্চ’ আহ্বান না করতো, তাহলে সরকার তাদেরকে থামাতো না। ওদিকে গতকাল বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে, রাজধানী ইসলামাবাদে অবস্থিত রেড জোনের নিরাপত্তায় পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে তলব করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। সূত্র অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী হাউজে, প্রধানমন্ত্রীর অফিসে, সুপ্রিম কোর্টে এবং স্পর্শকাতর সরকারি অন্য ভবনগুলোতে তাদেরকে মোতায়েন করা হবে। সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্ব দেয়া হবে সেনাবাহিনীর হাতে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এমন ঘোষণা দেয়ার পর জবাব দিয়েছেন ইমরান খান। পিএমএলএন নেতৃত্বাধীন সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেছেন, ১৯৮৫ সাল থেকে সামরিক স্বৈরাচার যে কৌশল অবলম্বন করে আসছে, শরীফ পরিবারও একই কৌশল নিয়েছে বলে দেখতে পাচ্ছেন তিনি। সরকারকে উদ্দেশ্য করে ইমরান খান বলেন, যখন তারা ক্ষমতা হারায় তখনই দ্রুততার সঙ্গে তারা গণতন্ত্রের বিষয়কে স্মরণ করেন। এ সময় তিনি জিজ্ঞাসা করেন পিটিআই সরকারের সময়ে তারা রাজপথে কতবার বিক্ষোভ করেছেন। তারা জনগণের বাড়িতে বাড়িতে প্রবেশ করেছে। নারীদের প্রাইভেসির কোনো তোয়াক্কাই করেনি। তখনকার বিরোধীদলীয় নেতাদেরকে তাদের সভা-সমাবেশ ও প্রতিবাদ বিক্ষোভ করা থেকে বিরত রাখার চেষ্টা পিটিআই সরকার কখনো করেনি। ইমরান খান আরও বলেন, যদি পিটিআই সরকার কাউকে গ্রেপ্তার করতো, তখন পিপিপি চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি, জেইউআইএফ প্রধান মাওলানা ফজলুর রেহমান ইসলামাবাদমুখী মার্চ করতেন। একজন সাবেক মেজরের বাসভবনে পুলিশ প্রবেশের নিন্দা জানান ইমরান খান। তিনি প্রশ্ন রাখেন আপনারা কি কায়েদে আজমের পাকিস্তান বানাতে চান নাকি এসব চোর, ডাকাতের পাকিস্তান বানাতে চান? তিনি আরও বলেন, বর্তমান কেন্দ্রীয় মন্ত্রিপরিষদে যারা আছেন তার মধ্যে শতকরা ৬০ ভাগই ক্রিমিনাল। তারা জামিন নিয়ে মুক্তভাবে চলাফেরা করছেন। অন্যদিকে তাদের বিরুদ্ধে ২৪০০ কোটি রুপি দুর্নীতির মামলা আছে।