শেষের পাতা
এক সময়ে সব মুসলমান হিন্দু ছিল: আসামের মুখ্যমন্ত্রী
মানবজমিন ডেস্ক
২৪ মে ২০২২, মঙ্গলবারআসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেছেন, স্কুলগুলোকে আধুনিক শিক্ষা দেয়া উচিত যাতে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতে কিছু করার প্রবণতা বৃদ্ধি পায়। বাড়িতে ধর্মীয় শিক্ষা দেয়া যেতে পারে। মাদ্রাসা শিক্ষা রাখাই উচিত নয়। শিশুরা কিছুই শিখতে পারে না এই শিক্ষা থেকে। তাই তার দাবি অবলুপ্ত করে দেয়া হোক মাদ্রাসাগুলোকে। মাদ্রাসা ধর্ম শিক্ষা দিতে পারে, কিন্তু আধুনিক শিক্ষা কখনই একটি মাদ্রাসা দিতে পারবে না বলেই মত তার।
রোববার দিল্লিতে আরএসএস-এর একটি মিডিয়া কনক্লেভে বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেন, বাচ্চারা মাদ্রাসায় যেতে ইচ্ছুক হবে না যদি তাদের বলা হয় যে, তারা সেখানে পড়াশোনা করার পরে ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হতে পারবে না। তাদের এ ধরনের ধর্মীয় বিদ্যালয়ে পাঠানো মানবাধিকারের লঙ্ঘন করার শামিল। মুখ্যমন্ত্রী বলেন ‘মাদ্রাসা, শব্দটির অবলুপ্তি ঘটানো উচিত। যতক্ষণ না এই মাদ্রাসা শব্দটি মনে থাকবে, শিশুরা কখনই ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হতে পারে না।
ইভেন্টের পরে, মুখ্যমন্ত্রী তার মন্তব্যে বিশদভাবে বলেন যে মাদ্রাসাগুলোতে শিক্ষা ব্যবস্থা এমন হওয়া উচিত যাতে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতে যেকোনো কিছু করার অপশন থাকে। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘যেকোনো ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ এমন বয়সে হওয়া উচিত যেখানে তারা নিজেদের সিদ্ধান্ত নিতে পারে। আমি সবসময় মাদ্রাসার অস্তিত্বহীনতার পক্ষে কথা বলি যেখানে আনুষ্ঠানিক শিক্ষার চেয়ে ধর্মীয় শিক্ষাকে প্রাধান্য দেয়া হয়। প্রতিটি শিশুকে বিজ্ঞান, গণিত এবং আধুনিক শিক্ষার অন্যান্য শাখার জ্ঞানের কাছে উন্মুক্ত করার চেষ্টা করা উচিত।”
অনুষ্ঠানে বক্তৃতায় তিনি বলেন, প্রতিটি শিশুই প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা লাভের যোগ্য। ‘আপনি চাইলে বাড়িতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কোরআন শেখান, কিন্তু স্কুলে একটি শিশুকে বিজ্ঞান এবং গণিত শেখানো হোক। প্রতিটি শিশুকে বিজ্ঞান, গণিত এবং আধুনিক শিক্ষার অন্যান্য শাখার জ্ঞানের সঙ্গে পরিচিত করতে হবে’। মাদ্রাসাগুলোকে শিক্ষা প্রদানের জন্য কীভাবে উন্নত করা যায় যাতে এই স্কুলগুলো থেকে আরও পেশাজীবী বেরিয়ে আসতে পারে- এমন প্রশ্নের জবাবে শর্মা এসব মন্তব্য করেন। মাদ্রাসায় যাওয়া শিক্ষার্থীরা কোরআন মুখস্থ করার কারণে মেধাবী বলে উল্লেখ করা হলে, মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘...মাদ্রাসায় পড়া কোনো শিশু যদি মেধাবী হয়, তবে তা তার হিন্দু ঐতিহ্যের কারণে...এক সময়ে সব মুসলমান হিন্দু ছিল।’
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, আসামের ৩৬ শতাংশ মুসলিম জনসংখ্যা রয়েছে, যা তিনটি বিভাগে বিভক্ত: আদিবাসী মুসলমান, যাদের সংস্কৃতি আমাদের মতো, ধর্মান্তরিত মুসলমান- আমরা তাদের দেশি মুসলমান বলে ডাকি, তারা এখনো তাদের উঠোনে তুলসী গাছ রাখে এবং অভিবাসী মুসলমান যারা নিজেদের মিয়া মুসলিম বলে পরিচয় দেয়। বেশ কয়েকটি বিজেপি-শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা- (হরিয়ানা) মনোহর লাল খাট্টার, (হিমাচল প্রদেশ) জয়রাম ঠাকুর, (গোয়া) প্রমোদ সাওয়ান্ত এবং (মণিপুর) এন বীরেন সিংও কনক্লেভে অংশগ্রহণ করেন। সম্মেলনে ভার্চ্যুয়ালি উপস্থিত ছিলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।