ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

অনলাইন

বাংলাদেশসহ নিরপেক্ষ দেশগুলোকে রুশবিরোধী অবস্থান নিতে বাধ্য করছে যুক্তরাষ্ট্র: বিবৃতিতে মস্কোর মুখপাত্র

কূটনৈতিক রিপোর্টার

(১ বছর আগে) ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, মঙ্গলবার, ১০:১৩ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ১২:৫৮ পূর্বাহ্ন

mzamin

বাংলাদেশসহ নিরপেক্ষ দেশগুলোকে রাশিয়া বিরোধী অবস্থান নিতে বাধ্য করছে যুক্তরাষ্ট্র- এমন অভিযোগ করেছে মস্কো। রাশিয়ান ফেডারেশনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা এক বিবৃতিতে এ দাবি করেন। রুশ ভাষায় প্রচারিত ১লা জানুয়ারির ওই বিবৃতির ইংরেজি ট্রান্সক্রিপ্ট সোমবার ঢাকাস্থ রাশিয়ান দূতাবাসের ফেসবুক পেজে প্রকাশ করা হয়। তাতে কিভাবে তৃতীয় দেশগুলোকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে দেয়া যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা মানতে বাধ্য করা হচ্ছে তা তুলে ধরেন রুশ মুখপাত্র। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সরঞ্জাম বহনকারী রুশ জাহাজ ‘উরসা মেজর’কে মোংলা বন্দরে ভিড়তে না দেওয়ার উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, এভাবে চাপ দিয়ে নিরপেক্ষ রাষ্ট্রগুলোকে রাশিয়াবিরোধী অবস্থান নিতে বাধ্য করার চেষ্টা চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটনকে এ ধরনের তৎপরতা অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। বিবৃতিতে জাখারোভা বলেন, রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্রের জন্য সরঞ্জাম নিয়ে বাংলাদেশে বন্দরে ভিড়তে চেয়েছিল রুশ জাহাজ উরসা মেজর। বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষ জাহাজটি মোংলা বন্দরে নোঙ্গর করার অনুমতিও দিয়েছিল। কিন্ত যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে জাহাজটি ভিড়তে না দেওয়ার চাপ দেওয়ায় বাংলাদেশ পরে সেই অনুমতি প্রত্যাহার করে নেয়। এতে করে এক মাসের বেশি সময় ধরে জাহাজটি থেকে পণ্য খালাসে বিলম্ব ঘটেছে।

বিজ্ঞাপন
এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের স্বার্থের পক্ষে যায়নি।
রাশিয়া থেকে পণ্য নিয়ে আসা উরসা মেজর জাহাজটি মোংলা বন্দরে ভিড়তে না দিতে যুক্তরাষ্ট্রের এ তৎপরতা ‘সম্পূর্ণ আইন-বহির্ভূত’ বলে দাবি করেন মারিয়া জাখারোভা।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশে পণ্য খালাসে ব্যর্থ হওয়ার পর বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে ভারতে পণ্য খালাসের চেষ্টা করে উরসা মেজর। তবে ভারতেও জাহাজটি পণ্য খালাসে ব্যর্থ হয়। এ প্রসঙ্গে গত জানুয়ারিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্র জানায়, রুশ জাহাজটি এখন চীনের পথে রয়েছে। জাহাজটি শেষ পর্যন্ত চীনের কোনো বন্দরে রূপপুরের সরঞ্জাম খালাস করতে পারে। চীন থেকে এসব সরঞ্জাম পরে বাংলাদেশে আনা হতে পারে বলেও জানায় মন্ত্রণালয়ের এসব সূত্র।

#মুখপাত্রের বিবৃতিতে পশ্চিমাদের সমালোচনা#

এদিকে নিরপেক্ষ দেশগুলিকে রাশিয়া বিরোধী নিষেধাজ্ঞায় যোগ দেওয়ার মার্কিন অনুশীলন শীর্ষক  মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভার বিবৃতিতে বলা হয়, পশ্চিমারা প্রায়শই বলে থাকে যে তারা 'সংহতি' বা ঐক্যমতের ভিত্তিতে কাজ করছে। তাদের এই দাবির প্রেক্ষিতে রাশিয়ার বক্তব্য  হচ্ছে, আদতে তারা (পশ্চিমারা) 'সংহতি' কী তা বোঝে না। মুখপাত্র বলেন, আমি এজন্য একটি নতুন শব্দ ব্যবহার করছি, তা হলো- ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ন্যাটো সদস্যদের মধ্যে যা দেখছি সেটাকে আমরা বলি 'বলপূর্বক সংহতি'। এটি অবশ্যই একটি অক্সিমোরন। নিজস্ব বিচার-বিশ্লেষণে আন্তরিকতার সঙ্গে কোন কিছুর প্রতি সহমত পোষণ করাকেই বলে সংহতি। সম্পূর্ণ স্বেচ্ছায় এবং স্বাধীনভাবে কোন বিষয়ের সঙ্গে একমত হওয়া হলো সলিডারিটি বা সংহতি। কিন্তু পশ্চিমে যা দেখছি তা হল 'জোরপূর্বক সংহতি'। রাশিয়ার সম্ভাব্য ক্ষতির জন্য এটি করা হচ্ছে এমন অভিযোগ তুলে মুখপাত্র বলেন, নিরপেক্ষ রাষ্ট্রগুলোকে রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতে বাধ্য করার জন্য দ্বিতীয় স্তরের নিষেধাজ্ঞার হুমকির আশ্রয় নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। অব্যাহতভাবে তারা এ নিয়ে তৎপর। যুক্তরাষ্ট্র দেখানোর চেষ্টা করে ওমুক দেশ তাদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করছে কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় ভিন্ন চিত্র। দেখা যায় যে দেশকে তারা রাশিয়ার বিরোধী ব্লকে এবং রাশিয়া বিরোধী মার্কিন সিদ্ধান্তের প্রতি সংহতি প্রকাশকারী বলে দাবি করছে, তারা একটি মনস্তাত্ত্বিক আক্রমণের শিকার। যার মধ্যে ছিল বিভিন্ন ধরণের চাপ বা হুমকি, যেমন অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ বা অর্থ আটকে দেয়া। এমন অমানবিক চাপ অনেকেই সহ্য করতে পারে না বলেও মন্তব্য করে মুখপাত্র। বলেন, যারা রাশিয়ার বিরুদ্ধের অবস্থান নিতে বিব্রত বোধ করতো তাদেরকে 'সংহতি প্রকাশকারী' বলে প্রচার করছে যুক্তরাষ্ট্র, কিন্তু না, এটা সংহতি নয় বরং ব্ল্যাকমেইল। মূখপাত্র বলেন, মস্কোর অংশীদারদের সবাই সব সময় এমন ব্ল্যাকমেইল প্রতিরোধে সক্ষম হয় না।

অনলাইন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

অনলাইন সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status