শেষের পাতা
২৫ তালেবানকে হত্যা
আফগানিস্তানে যেভাবে যুদ্ধ করেছেন প্রিন্স হ্যারি
মানবজমিন ডেস্ক
৩০ জানুয়ারি ২০২৩, সোমবারনিজের আত্মজীবনী স্পেয়ারে ২৫ তালেবানকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন প্রিন্স হ্যারি। ডিউক অব সাসেক্স খ্যাত হ্যারি বৃটিশ সেনাবাহিনীর হয়ে ১০ বছর কাজ করেছেন। সে সময়ই তাকে আফগানিস্তানে তালেবানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে যেতে হয়েছিল। প্রিন্স হ্যারি সেখানে অ্যাপাচি হেলিকপ্টারের পাইলট ছিলেন। পাইলট হিসেবে ছয়টি অভিযান পরিচালনা করেছিলেন তিনি। স্পেয়ার বইতে হ্যারি বলেছেন, তিনি মোট ২৫ তালেবানকে হত্যা করেছেন আফগানিস্তানে। লিখেছেন, বেশির ভাগ সেনারাই নিশ্চিতভাবে বলতে পারে না যে, তিনি কতোজনকে হত্যা করেছেন। প্রায়ই নির্বিচারে গুলি চালানো হয়। তবে অ্যাপাচি হেলিকপ্টার এবং ল্যাপটপের যুগে আমি যা যা করেছি তার সবই রেকর্ড করা হয়েছিল। ফলে আমি বলতেই পারি কতোজনকে আমি হত্যা করেছি।
তারা ছিল দাবার বোর্ড থেকে সরিয়ে দেয়া ঘুঁটির মতো, কিছু খারাপ লোককে সরিয়ে দেয়া- যাতে তারা ভালো লোকদের হত্যা করতে না পারে। আমি তাদেরকে মানুষ হিসেবে না দেখার জন্য প্রশিক্ষিত ছিলাম, ভালোভাবেই। কখনো কখনো এটিকে সমস্যা মনে হয়েছে আমার জন্য। কিন্তু আমি দেখেছি, এই প্রশিক্ষণ সৈনিক হওয়ার অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি আরেকটি বাস্তবতা যা এড়ানো যায় না। হ্যারি লিখেছেন, অ্যাপাচি হেলিকপ্টার এত দ্রুত চলে যে, এটি থেকে টার্গেটে গুলি করা বেশ কঠিন ছিল। তবে তিনি নিজেকে সেভাবেই প্রশিক্ষিত করেছিলেন। তার জন্য এটি কঠিন কিছু ছিল না। তার ভাষায়, আমার টার্গেটগুলো যদিও বেশ দ্রুত ছুটতো। আমি যেসব টার্গেট ধ্বংস করেছি তারমধ্যে ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার গতিতে ছোটা মোটরসাইকেলও ছিল। এক তালেবান কমান্ডারকে গ্রামের পর গ্রাম তাড়া করতে হয়েছে আমাদের। তিনি ইচ্ছা করেই গ্রামগুলোর মধ্যদিয়ে ছুটছিলেন যাতে বেসামরিক মানুষদের কাভার হিসেবে ব্যবহার করা যায়। বৃদ্ধ মানুষ, শিশুরা ছিল তার কাছে সামান্য প্রপসের মতো। এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামের মাঝে থাকা সময়টুকুই ছিল আমাদের সুযোগ। আর এই ফাঁকা স্থান ছিল ২০০ মিটারেরও কম। অর্থাৎ, এটুকু সময়ের মধ্যে ওই তালেবান কমান্ডারের কোনো শিশুর পেছনে লুকানোর সুযোগ নেই। হ্যারি তার বইতে লেখেন, এমনই এক সুযোগে আমি গুলি শুরু করি। এতে মোটরসাইকেলটি রীতিমতো উড়ে গিয়ে গাছের মধ্যে পড়ে। সেখান থেকে আমরা আগুনের গোলা দেখতে পাই। কিন্তু সেখানে কোনো মরদেহ ছিল না। আমরা অনেক খুঁজেও সেখানে কোনো মরদেহ না পেয়ে ভয় পেয়ে যাই। ওই তালেবান কমান্ডার কি পালিয়ে গেল? কিন্তু না, সেখান থেকে ৫০ ফিট দূরেই তার মরদেহ পাওয়া গেল। নিশ্চিত হওয়ার পর আমরা সেখান থেকে চলে আসলাম।