ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

প্রথম পাতা

আত্মহত্যা প্রতিরোধে পূর্ব সচেতনতা জরুরি

স্টাফ রিপোর্টার
২৮ জানুয়ারি ২০২৩, শনিবার

২০২২ সালে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৩২ শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে। প্রতি মাসে আত্মহত্যাকারী শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৪৪ জন। এদের মধ্যে ৬৩ দশমিক ৯ শতাংশই নারী শিক্ষার্থী। বেশির ভাগেরই আত্মহত্যার কারণ মান-অভিমান। এছাড়াও প্রেমঘটিত কারণেও অনেকে আত্মহত্যা করছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আত্মহত্যা প্রতিরোধে প্রয়োজন পূর্ব-সচেতনতা। যে শিক্ষার্থী আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে আগে থেকেই। তার বেশকিছু আলামত দেখা যায়। সেখান থেকেই আশপাশে যারা আছেন তাদের বুঝে নিতে হবে। আর ওই শিক্ষার্থীকে আত্মহত্যার পথ থেকে ফিরিয়ে আনতে হবে।

বিজ্ঞাপন
তাহলেই আত্মহত্যা রোধ করা সম্ভব হবে। একই সঙ্গে যারা আত্মহত্যা করেন তাদেরও প্রতিকূল পরিস্থিতি মানিয়ে নেয়ার মনমানসিকতা থাকতে হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মো. কামাল উদ্দিন মানবজমিনকে বলেন, কী কারণে আত্মহত্যা করে সেটি খুঁজতে গেলে আমরা দেখি মূলত পাস্ট্রেশন-ডিপ্রেশনের কারণেই মানুষ আত্মহত্যা করে। এর জন্য আমাদের পরিবার ও স্কুলের সিস্টেমও জড়িত। এসব জায়গায় কী ধরনের সাপোর্ট আছে তাও গুরুত্বপূর্ণ। এসব সিস্টেম ডেভেলপ হচ্ছে তা ঠিক। কিন্তু এর পরিমাণ বাড়াতে হবে। হঠাৎ করে তো কেউ আত্মহত্যা করে না। এর আগে প্রত্যেকের একটা মানসিক অবস্থা থাকে। 

সেটি পাশের জন বুঝতে পারে। সে হিসেবে আশপাশে যারা আছেন তারা কী ব্যবস্থা নিচ্ছেন সেটি গুরুত্বপূর্ণ। তখনই তাদের বুঝিয়ে আনতে হবে। তাহলে এটি রোধ করা সম্ভব। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের এসিস্ট্যান্ট প্রফেসর ড. তৌহিদুল হক মানবজমিনকে বলেন, বাংলাদেশে আত্মহত্যার চিত্র দেখলে আমাদের হতাশ হতে হয়। আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়ে গেলে বুঝতে হবে সকল দিক থেকে আমাদের যে প্রস্তুতি সেটি নেই। সেটি আর্থিক, সামাজিক কিংবা ভালোবাসারও হতে পারে। যখন এসব জায়গায় ঘাটতি থাকে ভুল বোঝাবুঝির তৈরি হয় তখনই মানুষ নিজের যুদ্ধে নিজে অংশ নেয়। বেশি প্রতিকূল মনে হলে সে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। একই সঙ্গে আমাদের চারপাশের দৃষ্টিভঙ্গিও আত্মহত্যার কারণ। অনেক সময় দেখা যায়, গ্র্যাজুয়েশন শেষ করার পর চাকরি পেতে বিলম্ব হলে কিংবা ভালো মানের চাকরি না পেলে আশপাশের আত্মীয়-স্বজনের কটু কথা শুনতে হয়। যা অনেকে নিতে পারে না। এছাড়া প্রেমঘটিত কারণেও অনেকে সেগুলো সহজভাবে নিতে পারেন না। 

হয়তো পরিবার মেনে নেয় না। অথবা নিজেদের মধ্যে মনোমালিন্য তৈরি হয়। তখন নিজেই নিজেকে হত্যা করে। তিনি বলেন, এ ধরনের পারসেপশন থেকে বের হয়ে আসতে হবে। এছাড়াও ব্যক্তি যখন এমন পরিস্থিতিতে থাকেন তখন এটা শেয়ার করার লোকও পান না। কার সঙ্গে শেয়ার করবেন। আমাদের দেশে রাজধানীকেন্দ্রিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও মনোবিদ থাকলেও সারা দেশে নেই। তাই সে কারো সঙ্গে যখন শেয়ার করতে পারে না। তখন সে নিজেই একাকিত্ব, হতাশা ও পীড়ায় ভোগে। এক পর্যায়ে নিজেই নিজেকে হত্যা করে। এ সমাজ ও অপরাধ বিশ্লেষক মনে করেন, শত প্রতিকূলতার মধ্যেও নিজেকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা থাকতে হবে। নিজের প্রতি আস্থাশীল হতে হবে।

প্রথম পাতা থেকে আরও পড়ুন

   

প্রথম পাতা সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status