ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

প্রথম পাতা

ফের বাড়ানোর ঘোষণা, চিনির দামে রেকর্ড

স্টাফ রিপোর্টার
২৭ জানুয়ারি ২০২৩, শুক্রবার

ফের চিনির দাম রেকর্ড বেড়ে ১২০ টাকায় দাঁড়িয়েছে। বিভিন্ন বাজার ঘুরে ও রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্যে এমন চিত্র দেখা গেছে। এদিকে নতুন করে আবারো পণ্যটির দাম বাড়ানোর ঘোষণা   দিয়েছে চিনি পরিশোধনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ সুগার রিফাইনার্স এসোসিয়েশন। সংস্থাটি প্রতি কেজি চিনির দাম পাঁচ টাকা বাড়িয়ে খোলা চিনি ১০৭ টাকা ও প্যাকেটজাত চিনি ১১২ টাকা করার ঘোষণা দিয়েছে। নতুন এ দাম আগামী পহেলা ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকর হবে। যদিও নতুন নির্ধারিত দামের চেয়ে বাজারে এখন ৫ থেকে ১০ টাকা বেশি দামে চিনি বিক্রি হচ্ছে। 
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্যাকেটজাত চিনি বাজারে নেই বললেই চলে। এমনকি ডিলার পর্যায়েও মিলছে না কাঙ্ক্ষিত চিনি। আবার যাও পাওয়া যাচ্ছে, তাও সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। বাজারে এখন এক কেজি চিনি ১১৫ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ওদিকে টিসিবি’র তথ্যও বলছে বাজারে চিনির কেজি এখন ১১৫ থেকে ১২০ টাকা।

বিজ্ঞাপন
ফলে এক বছরে চিনির দাম বেড়েছে প্রায় ৫১ শতাংশ। 

বিএনপি বাজারের সাত্তার স্টোরের স্বত্বাধিকারী বলেন, কোম্পানিগুলো চিনি দিচ্ছে না। চিনি নিতে হলে শর্ত হিসেবে কোম্পানিগুলো লবণ নিতে বলছে। অর্থাৎ চিনি নিতে হলে একই পরিমাণ লবণ নিতে হবে। এজন্য কম করে চিনি নেয়া হচ্ছে। কোম্পানি থেকে আমাদের বলা হচ্ছে বর্তমান মূল্যে চিনি বিক্রি করা লস। 

আগারগাঁও বাজারে চিনি কিনতে আসা আফরোজা খাতুন বলেন, ৭০ টাকার চিনি ১১৫ টাকা হয়ে গেছে। এটা ভাবতেও অবাক লাগে। ওদিকে অন্যান্য জিনিসের দাম তো আগেই বেড়েছে। এভাবে সবকিছুর দাম বাড়তেই থাকলে কীভাবে চলবো বুঝতে পারছি না। সরকারের কাছে অনুরোধ থাকবে, আপনারা সাধারণ মানুষের কথা কিছুটা হলেও ভাবেন। 

এদিকে বাংলাদেশ সুগার রিফাইনার্স এসোসিয়েশন বলছে, আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত চিনির ঊর্ধ্বমুখী দাম, ডলারের বাড়তি বিনিময় হার এবং স্থানীয় পরিশোধনকারী মিলগুলোর উৎপাদন ব্যয় বিবেচনা করে দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। 
ওদিকে ব্যবসায়ীদের চাপে পাঁচ মাসের ব্যবধানে চার দফায় চিনির দাম ৩৭ টাকা বাড়িয়েছে সরকার। গত ২১শে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সরকার নির্ধারিত প্রতি কেজি খোলা চিনি ৭৪ টাকা এবং প্যাকেটজাত চিনির দাম ৭৫ টাকা ছিল। যদিও সে সময় এর চেয়ে ৫ থেকে ১০ টাকা বেশি দামে চিনি বিক্রি হচ্ছিল। পরে চিনি আমদানি ও পরিশোধনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ সুগার রিফাইনার্স এসোসিয়েশনের দাবির মুখে সরকার ২২শে সেপ্টেম্বর দাম বাড়িয়ে খোলা চিনির কেজি ৮৪ এবং প্যাকেটজাত চিনি ৮৯ টাকা নির্ধারণ করে। দুই সপ্তাহের মাথায় গত ৬ই অক্টোবর কেজিতে আরও ৬ টাকা বাড়িয়ে খোলা চিনি ৯০ এবং প্যাকেটজাত চিনির কেজি ৯৫ টাকা করা হয়। দুই দফায় দাম বাড়ালেও বাজারে চিনির সরবরাহ কমেছে। চিনির ঘাটতি প্রকট হয়ে এক পর্যায়ে বাজার থেকে চিনি প্রায় উধাও হয়ে যায়। ব্যবসায়ীদের চাপে গত ১৭ই নভেম্বর থেকে চিনির দাম আরও এক দফা বাড়ায় সরকার। এ দফায় কেজিতে ১৩ টাকা বাড়িয়ে প্যাকেটজাত চিনির দাম নির্ধারণ করা হয় ১০৮ টাকা। আর খোলা চিনির কেজি ধরা হয় ১০২ টাকা। গতকাল আবারো প্রতি কেজি চিনির দাম পাঁচ টাকা করে বাড়িয়ে খোলা চিনি ১০৭ টাকা ও প্যাকেটজাত চিনি ১১২ টাকা করার ঘোষণা দিয়েছে। সেই হিসাবে গত পাঁচ মাসে সরকার চিনির দাম কেজিতে ৩৭ টাকা বাড়িয়েছে। 

বাড়তি দামে চিনি বিক্রি বন্ধ না করে নতুন করে আবারো চিনির দাম বাড়ানো ঠিক হয়নি জানিয়ে কনজ্যুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহ-সভাপতি এস এম নাজের হোসেন মানবজমিনকে বলেন, ব্যবসায়ীদের চাপে সরকার দফায় দফায় চিনির দাম বাড়াচ্ছে। এতে মানুষের কষ্টের মাত্রা বেড়েই চলেছে। বাংলাদেশে গুটিকয়েক প্রতিষ্ঠান চিনি আমদানি করে। এ জন্য তারা যে দাম নির্ধারণ করে সরকারকে সেটাই মানতে হচ্ছে। এখানে সরকারকে অনেক কাজ করতে হবে। ‘প্রতিযোগিতা’ কমিশনের ভূমিকা নিতে হবে-যাতে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান বাড়ানো যায়।

প্রথম পাতা থেকে আরও পড়ুন

   

প্রথম পাতা সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status