শেষের পাতা
কামরানের বিকল্প মিললো বিলেতে!
ওয়েছ খছরু, সিলেট থেকে
২৭ জানুয়ারি ২০২৩, শুক্রবারএকসময় সিলেটের মেয়র ছিলেন বদরউদ্দিন আহমদ কামরান। ঢাকার মেয়র হানিফ ও চট্টগ্রামের মহীউদ্দিন। তিন জনই ছিলেন আওয়ামী লীগের কাছে ব্রান্ড। আওয়ামী লীগ বিরোধী দলে থাকা অবস্থায় তারা মেয়রের পাশাপাশি দলীয় কর্মকাণ্ডে ছিলেন সক্রিয়। এখন তারা কেউ জীবিত নেই। বিকল্পও গড়ে উঠেনি। তিন জনের মধ্যে সবশেষে মারা যান কামরান। করোনাকালে মৃত্যু হয় তার। নিজ দলের অন্তর্দ্বন্দ্বে কামরান পর পর দু’বার সিটি করপোরেশন নির্বাচনে পরাজিত হন। সিলেটের প্রচলিত সামাজিকতায় মানুষের কাছাকাছি ছিলেন তিনি।
সেখানেও তাকে নিয়ে অনেক উদ্দীপনা। এরপর আনোয়ারুজ্জামান দেশে এসেছেন। গতকাল দেখা করেছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে। দলের হাইকমান্ডের সঙ্গে দেখা করতে তিনি এখন ঢাকায় অবস্থান করছেন। তাকে নিয়ে সিলেটের অনুসারীদের উৎসাহের কমতি নেই। ক্ষণে ক্ষণে আনোয়ারুজ্জামানকে ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরব হচ্ছেন নেতাকর্মীরা। সিলেটে আনোয়ারকে নিয়ে অনেক প্রশ্ন-তবে কী কামরানের বিকল্প হচ্ছেন বিলেতের আনোয়ারুজ্জামান। সামাজিকতায় আনোয়ার পিছিয়ে নেই। সিলেট নগরের সঙ্গেও রয়েছে তার সম্পৃক্ততা। আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী মানবজমিনকে জানিয়েছেন, সিলেট-১ আসনে জাতীয় নির্বাচন ও সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে তিনি একাধিকবার প্রচারনায় অংশ নিয়েছেন। নেতাকর্মীদের সঙ্গে তার আন্তরিকতা রয়েছে। সবার সঙ্গে সখ্যতাও রয়েছে। ফলে দলীয় সভানেত্রী তাকে যেখানেই কাজ করার নির্দেশ দেবেন সেখানেই কাজ করতে প্রস্তুত রয়েছেন। দলের সিদ্বান্তের ওপর তার আস্থা রয়েছে বলে জানান। এদিকে, সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে ঘিরে দলীয় মনোনয়নের অপেক্ষায় রয়েছেন সিলেট আওয়ামী লীগের অনেক নেতা। আনোয়ারুজ্জামানের শোডাউনে তারা এখন চুপসে গেছে। কেউ কোনো মন্তব্য করছেন না। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। তবে দলীয় ফোরামের মেয়র পদে প্রার্থী হওয়ার জন্য তারা প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সিলেট আওয়ামী লীগের নেতারা জানিয়েছেন, দলের মনোনয়নপ্রাপ্তির বিষয়টি একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। নির্বাচনের আগে দলীয় বোর্ডের কাছে মনোনয়ন চাইতে হবে। এরপর যে প্রার্থী হবেন তার পক্ষে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে থাকবেন। যেমনটি তারা বিগত নির্বাচনগুলোতে ঐক্যবদ্ধ ছিলেন। আসন্ন সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে সামনে রেখে সিলেটে একাধিক প্রার্থী মাঠে রয়েছেন। এরমধ্যে রয়েছেন মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আসাদ উদ্দিন আহমদ, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন, মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আজাদুর রহমান আজাদ, সাংগঠনিক সম্পাদক ও কামরানপুত্র ডা. আরমান আহমদ শিপলু।
এর বাইরে আওয়ামী লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ ও বর্তমান সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরীর নামও শোনা যাচ্ছে। তবে নির্বাচনী মাঠে বছরখানেক আগে থেকেই মাঠে সক্রিয় রয়েছেন আসাদ, জাকির, আজাদ ও শিপলু। তারা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দলীয় বলয়ের যোগাযোগ বাড়ানোসহ সাধারণ মানুষের কাছাকাছি যাচ্ছেন। দলীয় ফোরামে তারা মেয়র পদে দলের মনোনয়ন চাইবেন বলেও জানিয়েছেন। তবে আনোয়ারুজ্জামানের শোডাউনের পর তারা এ ব্যাপারে নীরবতা পালন করছেন। তবে সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদের মতে; সিলেট আওয়ামী লীগ নেতারা দলীয় সভানেত্রী ও নৌকার পক্ষে ঐক্যবদ্ধ। আমাদের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড দলকে শক্তিশালী করার জন্য। সিটি নির্বাচনে দলের সিদ্বান্তে যে প্রার্থী হবেন তার পক্ষে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে কাজ করবেন বলে জানান তিনি।