ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

অনলাইন

রাশিয়া-বাংলাদেশ সম্পর্ক এবং স্যাংশন নিয়ে ইইউ রাষ্ট্রদূত যা বললেন

তারিক চয়ন

(১ বছর আগে) ২৩ জানুয়ারি ২০২৩, সোমবার, ৮:১১ অপরাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ৯:৩২ পূর্বাহ্ন

mzamin

রাশিয়ার সাথে পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র সহ বাংলাদেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিজস্ব স্বার্থের বিষয় রয়েছে উল্লেখ করে বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত ও প্রতিনিধিদলের প্রধান চার্লস হোয়াইটলি বলেছেন, অত্যাচারী রাশিয়া একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র ইউক্রেনের উপর হামলা চালিয়েছে। আজ সোমবার (২৩ জানুয়ারি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ আয়োজিত ‘ইউরোপীয়ান ইন্টিগ্রেশন এন্ড দ্য ব্রেক্সিট’ শীর্ষক এক সেমিনারে ইইউ রাষ্ট্রদূত এমন মন্তব্য করেন।

বাংলাদেশে লাখ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, "অনেক বছর হয়ে গেলেও তাদের দেশে ফেরার নাম নেই দেখে অনেকেই বলেন, পরিস্থিতি পরিবর্তনে তোমরা কি করছো? আমরা মিয়ানমারের ওপর প্রভাব খাটাতে চাচ্ছি। তাদের ওপর স্যাংশন দিয়েছি, অস্ত্রে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছি, উন্নয়ন সহযোগিতা বাতিল করে দিয়েছি। অন্যদিকে, ইউরোপে আমরা নিজেরাও শরণার্থী সংকটে রয়েছি। ইউক্রেনের ৮০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।"

রাশিয়ার সাথে, ইউরোপের সাথে, যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক নিয়ে অনেকসময়ই এখানে কথাবার্তা হয় এমন মন্তব্য করে ইইউ রাষ্ট্রদূত বলেন, "আমরা সবাই তোমাদের 'সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথে শত্রুতা নয়' বিষয়টা জানি। (রাশিয়ার সাথে) তোমাদের নিজস্ব স্বার্থের বিষয় রয়েছে, পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র...ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু, আমাদের দৃষ্টিতে মূল কথা হলো- এখানে অত্যাচারীটা কে? একটি সার্বভৌম রাষ্ট্রের উপর রাশিয়া হামলা চালিয়েছে। দেশটির হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করেছে। ৮০ লাখ মানুষকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং অন্যান্য দেশের শরণার্থী বানিয়েছে এবং পরিস্থিতি পরিবর্তনের কোনো লক্ষণও দেখা যাচ্ছে না। অনেকে আমাকে বলে, তোমরা এটাতে প্ররোচনা দিয়েছো কারণ ইউক্রেন ন্যাটোর সদস্য হতে চায়, ইউক্রেন ইইউ'র সদস্য হতে চায়...কিন্তু, কোনো সার্বভৌম রাষ্ট্র কোনো আঞ্চলিক সংস্থায় যোগ দেওয়াটা কিভাবে প্ররোচনা হয়? যেমনঃ আমি যদি বলি বাংলাদেশ সার্কে যোগ দিতে পারবে না! তাই, আমি এই ধরনের তর্ক পছন্দ করি না।

বিজ্ঞাপন
অত্যাচারীতো পরিষ্কার এবং সেজন্যই আমরা স্যাংশন দিয়েছি।"

অনেক সময় বাংলাদেশেও বৈশ্বিক অর্থনীতিতে স্যাংশনের নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে দোষারোপ করে কথা বলা হয় জানিয়ে রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি বলেন, "যুদ্ধে জড়িত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে টার্গেট করেই স্যাংশন দেওয়া হয়, যারা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনকে লংঘন করে, স্যাংশনের মাধ্যমে তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা হয় এবং তাদের উপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। তাছাড়া, রাশিয়া থেকে তেল-গ্যাস-স্টিল আমদানিতেও স্যাংশন দেওয়া হয়েছে। কারণ,আমরা রাশিয়া থেকে এগুলো নিতে চাইনা। ওরাতো অত্যাচারী। খাদ্য সহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসেতো স্যাংশন দেওয়া হয়নি!"

প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ এবং ইইউ'র মধ্যে অনুষ্ঠিত রাজনৈতিক সংলাপের কথা স্মরণ করিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, "আমাদের মধ্যে কৌশলগত ইস্যুগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা ইউক্রেন যুদ্ধ, ইন্দো-প্যাসিফিক, চীনের সাথে সম্পর্ক সবকিছু নিয়েই আলোচনা করেছি। বাংলাদেশকে আমরা উন্নয়ন অংশীদার নয়, অংশীদার হিসেবে বিবেচনা করি।" বাংলাদেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নের প্রশংসা করে তিনি বলেন, "পদ্মাসেতু এবং চট্টগ্রাম টার্মিনালের মতো অনেককিছুই হচ্ছে যেগুলো ব্যবসার জন্য ভালো। কিন্তু, অবশ্যই দুর্নীতির মতো ইস্যুগুলো রয়েছে। এগুলো বিবেচনায় নিতে হবে।"

এছাড়াও, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল ইইউ'র কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে এর রাষ্ট্রদূত বলেন, আমাদের নিজস্ব ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র‍্যাটেজি আছে। যুক্তরাজ্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে গেলেও দেশটির প্রতি ইউরোপীয় জোটটির সংহতি অব্যাহত থাকবে বলেও তিনি নিশ্চিত করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারপার্সন ড. তাসনিম সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে উক্ত সেমিনারে বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা রাষ্ট্রদূতকে বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করেন। রাষ্ট্রদূত তাদের সকলের প্রশ্নেরই খোলামেলা জবাব দেন।

অনলাইন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

অনলাইন সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status