ঢাকা, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

খেলা

‘নেদারল্যান্ডসে নয় বাংলাদেশেই আমাকে বেশি চেনে’

ইশতিয়াক পারভেজ, চট্টগ্রাম থেকে
১৪ জানুয়ারি ২০২৩, শনিবার
mzamin

অস্ট্রেলিয়ায় সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচে আলোচনায় ছিলেন ম্যাক্স ও’ডাউড। হোবার্ট স্টেডিয়ামে টাইগারদের ছুড়ে দেয়া ১৪৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দারুণ একটি ছক্কা হাঁকালেন ডাচ মারকুটে ওপেনার। তবে হঠাৎ পাওয়া সুযোগে রান আউট করে মাত্র ৮ রানেই তাকে সাজঘরে ফেরান আফিফ হোসেন। শুরুতেই বিপদ দূর করে ম্যাচটি ৯ রানে জিতে নেয় বাংলাদেশ। হ্যাঁ, সেই ম্যাক্স এবার খেলছেন আফিফের দল চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সে। লম্বা সোনালী চুলের এই ক্রিকেটার চলতি বিপিএলে দারুণ এক ফিফটি হাঁকিয়ে জায়গা করেছেন টাইগার ক্রিকেটের ভক্তদের মনেও। বিশেষ করে তার চুল এখন ভক্তদের বড় আকর্ষণ। তাকে দেখে ‘ম্যাক্স, ম্যাক্স’ রব তোলেন ভক্তরা। ছুটে এসে সেলফিও তোলেন। কিন্তু তার নিজদেশে রাস্তায় বের হলেও তাকে সবাই চেনে না।

বিজ্ঞাপন
নিজের ক্রিকেট, আর লম্বা চুলের কারণ নিয়ে  দৈনিক মানবজমিন-এর সঙ্গে কথা বলেছেন ম্যাক্স ও’ডাউড। তার সেই একান্ত আলোচনার মূল অংশ তুলে ধরা হলো-

বাংলাদেশ  কেমন লাগছে?
ম্যাক্স: দারুণ ভালো লাগছে আমার এই দেশে এসে। ক্রিকেটকে এতে ভালোবাসে এই দেশের মানুষ তা না এলে বুঝতে পারতাম না। তারা আমাকেও চেনে তার মানে ওরা ক্রিকেটের খবরটা বেশ রাখে। এটাই আমার দারুণ লাগে।

কেন তোমার দেশে ক্রিকেটের এমন ক্রেজটা নেই!
ম্যাক্স: না, না সেখানে ফুটবল, হকি আর রাগবি প্রধান খেলা, এরপর ক্রিকেট। সারাদেশে মনে হয় ৫ হাজার মানুষ ক্রিকেট খেলে। ওরা আমাকেই রাস্তায় দেখলে চেনে না। কিন্তু আমি যখন এখানে রাস্তায় বের হই তখন আমার নাম ধরে ডাক শুনতে পাই। সেলফি তুলতে আসে অনেকে। এমনকি গ্যালারি থেকেও ম্যাক্সি ম্যাক্সি বলে ডাকে। এটাই বাংলাদেশের সঙ্গে আমার দেশের পার্থক্য।

অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপে আপনারা দারুণ  খেলেছেন, এরপরও কি আপনার দেশে ক্রিকেট নিয়ে আগ্রহ বাড়েনি?
ম্যাক্স: না, খুব একটা না! তবে ভালো খেলার মাধ্যমে আমরা চেষ্টা করছি। বিশ্বাস করি মানুষ আগ্রহী হয়ে উঠবে। বিশ্বকাপের পরে খুব বেশি খবরও হয়নি। শুধু যারা ক্রিকেট সম্পর্কে টুকটাক খোঁজখবর রাখে।

বাংলাদেশের সঙ্গে নেদারল্যান্ডস ক্রিকেটের বড় পার্থক্যটা কোথায়?
ম্যাক্স: মানুষের আবেগ। এটার সঙ্গে কিছুর তুলনা হয় না। সংবাদকর্মীরা সব সময় খেলোয়াড়দের পিছে ছুটছে, নিউজ হচ্ছে, মাঠে দর্শক, এটা অবিশ্বাস্য। উপমহাদেশে ক্রিকেটের আবেগ অবিশ্বাস্য। মানুষ খেলাটা ধর্মের মতো ভালোবাসে। বাংলাদেশের সঙ্গে এখানে আমাদের বড় পার্থক্য।

ম্যাক্স আপনি কি মনে করেন আপনার এই লম্বা-সোনালী চুলও আকর্ষণ? বিশেষ করে নারীদের জন্য!
ম্যাক্স: হা, হা, হা, হতে পারে। তবে আমার এই চুলের স্টাইলটা শুধু মাত্র আমার গার্লফ্রেন্ডের জন্য। ওর পছন্দ হলেই চলবে। অন্য কেউ যদি পছন্দ করে সেটি আমি বুঝতে চাই না।

আপনার বাবা নিউজিল্যান্ডের কিন্তু আপনি খেলছেন নেদারল্যান্ডসের হয়ে। এর পেছনের গল্পটা কী?
ম্যাক্স: আমার বাবা নিউজিল্যান্ডের আর মা ডাচ। খুব ছোট বেলায় নেদারল্যান্ডসে এসেছিলাম। আর আমি এখানেই অনূর্ধ্ব-৯, ১০, ১১ খেলেছি। তারপর নিউজিল্যান্ডে যাই। অকল্যান্ডের হয়ে অনূর্ধ্ব-১৫, ১৬, ১৭, ১৯ এবং ‘এ’ দলের হয়ে খেলেছি। এখানে আসার আগে আমি অকল্যান্ড মূল দলের হয়ে খেলেছি। প্রায় ২৫ বছর পর্যন্ত আমার ক্যারিয়ারের প্রগেস খুব ভালো ছিল না। ২৩ বছর বয়সে নেদারল্যান্ডসের হয়ে খেলা শুরু করি। সব সময় সর্বোচ্চ পর্যায়ে খেলতে চেয়েছি। আমার জন্য এটা আসলে বেছে নেওয়া ছিল না, হয়ে গেছে। আর আমি বাংলাদেশ দলকে খুব ফলো করি। ২০১৬ ধর্মশালায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ম্যাচেও ছিলাম। অবশ্য তখন খুব ইয়াং ছিলাম। এখনতো অনেক পরিণত।

বিশ্বকাপে বাংলাদেশের বিপক্ষে মাত্র ৯ রানে হার কি কষ্ট দেয়? 
ম্যাক্স: আমাদের জন্য বিশ্বকাপে সম্ভবত সবচেয়ে হতাশার ম্যাচ। এই ম্যাচটা আমরা সবচেয়ে খারাপ খেলেছি। পাওয়ার প্লেতে ৪ উইকেট হারানোর পরই আমরা ম্যাচ থেকে ছিটকে গিয়েছিলাম। আমি নিজেও এই হারের জন্য দায়ী। আমি সহ দুটো রান আউট। তারপর যতটা সম্ভব দল ম্যাচে থাকার চেষ্টা করেছে। কিন্তু আমরা জানি বাংলাদেশ কতটা ভালো দল। যেকোনো কিছুই ঘটতে পারতো। পরে যখন বাংলাদেশের সঙ্গে খেলা হবে আশা করি আমরা সেরাটা দেখাতে পারবো।

ফিফা বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে নেদারল্যান্ডসের ম্যাচেও দুঃখ পেয়েছেন?
ম্যাক্স: ফুটবলটা আমার দেশে প্রধান খেলা। আমরা আশা করেছিলাম দল জিতবে। কিন্তু হয়নি, দুঃখতো পাবোই।

বাংলাদেশে আপনার প্রিয় ক্রিকেটার কে?
ম্যাক্স: শুনলে হয়তো একটু অবাক হবেন। আমি বলবো আফিফ হোসেন। কারণ, ও অনেকটাই আমার মতো। চুপচাপ, খুব বেশি কথা বলে না মাঠেই নিজের কাজটা করে। আমিও তাই। খুব বেশি কথা না বলে মাঠেই নিজেকে প্রমাণ করার চেষ্টা করি। আর শেষ বিশ্বকাপে আফিফই আমাকে রান আউট করেছে। না হলে ম্যাচটা হয়তো আমরাই জিতে যেতাম।

 

খেলা থেকে আরও পড়ুন

   

খেলা সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status