অর্থ-বাণিজ্য
যেখানে হাত দিচ্ছি, সেখানেই অনিয়ম পাচ্ছি: ভোক্তা অধিদপ্তরের ডিজি
অর্থনৈতিক রিপোর্টার
(১ বছর আগে) ১৯ মে ২০২২, বৃহস্পতিবার, ৫:৪৩ অপরাহ্ন
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেছেন, সব জায়গায়ই অনিয়ম রয়েছে। যেখানেই হাত দিচ্ছি, সেখানেই অনিয়ম পাচ্ছি। তবে ভোক্তা অধিদপ্তরের সবচেয়ে বড় দূর্বলতা হচ্ছে সঠিক তথ্যের অভাব। এই সংস্থার তথ্যের বৈধ উৎস নেই। এজন্য ভোক্তা অধিদপ্তর সকল গোয়েন্দা সংস্থা ও আইন শৃংখলা বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে যৌথভাবে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ভোক্তারা প্রতারিত হতে হতে এমন পর্যায়ে চলে গেছে যে, এখন অধিকার খর্ব হচ্ছে সেটাই আর বুঝতে পারে না।
বৃহস্পতিবার জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও ইকোনোমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) যৌথভাবে আয়োজিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ‘অর্থনৈতিক সাংবাদিকদের অংশগ্রহণে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন-২০০৯’ বিষয়ক সেমিনারটি রাজধানীর পুরানা পল্টনে ইআরএফ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ভোক্তা অধিদপ্তরের কার্যক্রম ও আইন নিয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রজবী নাহার রজনী। ইআরএফের সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন ইআরএফ সভাপতি শারমিন রিনভী, এএফপির ব্যুরো চিপ ও ইআরএফের সহ-সভাপতি শফিকুল আলম, ক্যাবের উপদেষ্টা কাজী আব্দুল হান্নান।
চিকিৎসকদের চেম্বারের সামনে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা দাঁড়িয়ে থাকছে। তা থেকে ধারণা করা যায় চিকিৎসকরা কোম্পানির সুপারিশে ওষুধ লিখছেন। আবার ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা রোগীর প্রেসক্রিপশনের ছবি তুলে নিচ্ছে। এতে রোগীর ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ক্ষুন্ন হচ্ছে।
মহাপরিচালক বলেন, ভোক্তারা প্রতারিত হতে হতে এমন পর্যায়ে চলে গেছে যে, এখন অধিকার খর্ব হচ্ছে সেটাই আর বুঝতে পারে না।
তিনি বলেন, ভোক্তা অধিদপ্তরের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা হচ্ছে সঠিক তথ্যের অভাব। এই সংস্থার তথ্যের বৈধ উৎস নেই। ভোক্তা বা ব্যক্তিগত উৎস থেকে যে তথ্য পাওয়া যায়, সেগুলোর সঠিকতা যাচাই করারও সুযোগ নেই। এজন্য ভোক্তা অধিদপ্তর সকল গোয়েন্দা সংস্থা ও আইন শৃংখলা বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে যৌথভাবে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে বেশি আলোচিত ইস্যু ভোজ্য তেলের সংকট প্রসঙ্গে সফিকুজ্জামান বলেন, তথ্য অনুযায়ী তেলের সংকট হওয়ার কথা নয়। কিন্তু সংকট হয়েছে। কোম্পানিগুলো উৎপাদন কমিয়েছে। ব্যবসায়ীরা সরবরাহ আদেশ ধরে রাখছে। এক কথায় এই বাজারে এক ধরনের মনোপলি বা সিন্ডিকেট হয়ে গেছে। এসব জেনে বুঝেও কিছু করার থাকছে না। কারণ এক বা দুটি বড় কোম্পানি কোনো অজুহাতে উৎপাদন বন্ধ রাখলে যে সংকট হয়েছে, তার চেয়ে বড় ধরনের সংকটের আশংকা রয়েছে। সরকার চায় পণ্যের সরবরাহ ঠিক রাখতে।
অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) মনজুর মোহাম্মাদ শাহরিয়ার বলেন, উন্নত দেশে উন্নয়ন সাবলীল করতে ভোক্তা অধিকার আইনকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। অধিদপ্তরকে জনবলসহ অন্যান্য সহায়তা দিয়ে শক্তিশালী করতে হবে। ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোকেও শক্তিশালী করা দরকার। তিনি বলেন, প্রতিটি জায়গায় অনিয়ম রয়েছে। নামকরা প্রতিষ্ঠানগুলোতেও প্রচুর অনিয়ম রয়েছে। ভোক্তা অধিদপ্তর ঠিকমত কাজ করতে পারলে এমন কোনো জায়গা নেই যেখানে জরিমানা বা শাস্তি হবে না। তিনি ভোক্তা অধিকার রক্ষায় গণমাধ্যমের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন।
শফিকুল আলম বলেন, দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির ফলে ব্যবসার ধরন পাল্টাচ্ছে। আবার ভোক্তাদের ক্রয় ক্ষমতাও বেড়েছে। ফলে ভোক্তা অধিকার আইনটি সংশোধন করতে হবে। আইন ভঙ্গের শাস্তি আরও কঠোর করতে হবে। এ সময় ভোক্তা অধিদপ্তরের গবেষণা ও গোয়েন্দা কার্যক্রম বাড়ানোর সুপারিশ করেন তিনি।