অনলাইন
মস্কোতে স্বাধীনতা ও বঙ্গবন্ধু বিষয়ক সেমিনার, যোগ দিলেন ঢাকাস্থ রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত
কূটনৈতিক রিপোর্টার
(১ বছর আগে) ১৯ মে ২০২২, বৃহস্পতিবার, ৯:৩৮ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৯:৪২ অপরাহ্ন
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে মঙ্গলবার মস্কোর লমনসভ স্টেট ইউনিভার্সিটিতে দিনব্যাপী এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের এশিয়া ও আফ্রিকান ইন্সটিটিউটের ডিরেক্টর অধ্যাপক আলেক্সেই মাসলভের সঞ্চালনায় রাশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত কামরুল আহসানের সূচনা বক্তব্যের মধ্য দিয়ে সেমিনারটি শুরু হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, ফেলো ও রাশিয়ার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের কর্মকর্তারা বিষয়ভিত্তিক বক্তব্য উপস্থাপন করেন। সেমিনারে রাশিয়ার পররাষ্ট্র ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, রাশিয়ার পারমাণবিক শক্তি সংস্থা (রোসাটম), নেতৃস্থানীয় থিংক ট্যাংকসহ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিবৃন্দ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাজুয়েট প্রোগ্রামের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। ঢাকায় নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার মান্টিটস্কি ভার্চ্যুয়ালি সেমিনারে বক্তব্য রাখেন। মস্কোস্থ বাংলাদেশ মিশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালে রাশিয়া সফরকালে দেশটির পার্লামেন্ট ডুমা ও মস্কো স্টেট ইউনিভার্সিটিতে ভাষণ দিয়েছিলেন। দীর্ঘ পঞ্চাশ বছর পর তার জন্মশতবার্ষিকীতে সেই বিশ্ববিদ্যালয়ে সেমিনার আয়োজন ছিল সবার জন্য গৌরব ও আনন্দের।
সূচনা বক্তব্যে রাষ্ট্রদূত কামরুল আহসান স্বাধীনতা সংগ্রামের ঐতিহাসিক পটভূমি এবং স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে বঙ্গবন্ধুর সংগ্রাম এবং নেতৃত্বের ইতিহাস তুলে ধরেন। তিনি বাংলাদেশ এবং রাশিয়ার জনগণের মধ্যকার ঐতিহাসিক সম্পর্কের উপর আলোকপাত করেন এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর দু'দেশের মধ্যে ঐতিহাসিক সম্পর্ক স্থাপনে বঙ্গবন্ধুর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা তুলে ধরেন।
ইন্সিটিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক আলেক্সেই মাসলভ বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে সেমিনারটি আয়োজনের জন্য দূতাবাসের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। তিনি ১৯৭২ সালে যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের অবকাঠামো পুনর্গঠনে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের অগ্রণী ভূমিকার কথা তুলে ধরেন এবং বাংলাদেশ এবং রাশিয়ার মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপনে জাতির পিতার ভূমিকা শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন। তিনি বাংলাদেশ এবং রাশিয়ার মধ্যে চলমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এবং সহযোগিতার উপর আলোকপাত করেন।
ঢাকায় নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার মান্টিটস্কি সেমিনারে ঢাকা থেকে অনলাইনে যোগ দেন।
সেমিনারে বাংলাদেশে নিযুক্ত রাশিয়ার সাবেক রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার নিকলায়েভ এবং রাশিয়ার পারমাণবিক শক্তি প্রতিষ্ঠান রোস অ্যাটমের প্রকল্প ব্যবস্থাপক ভেরা উপিরভা রাশিয়ার অর্থনৈতিক এবং কারিগরি সহায়তায় বাংলাদেশে নির্মিতব্য রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুত প্রকল্পের নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা এবং পারমাণবিক গবেষণায় মানবসম্পদ উন্নয়নে রাশিয়ার রোসাটমের কার্যক্রমের উপর আলোকপাত করেন।
সেমিনারে অধ্যাপক বরিচ জাকারিন, অধ্যাপক লিউডামিলা খোখলোভা, অধ্যাপক বরিচ ভলখোনস্কী, অধ্যাপক আনা বোখোভস্কায়া, অধ্যাপক আলিনা ফিলিমনোভা, ও অধ্যাপক আলেকজান্ড্রা সাফ্রনোভা বাংলা ভাষা এবং সংস্কৃতি চর্চায় রাশিয়ার পণ্ডিতদের ভূমিকা, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ভূমিকা ও শিক্ষা ও সংস্কৃতি, শিল্প ও বাণিজ্য ও অবকাঠামো খাতে দুই দেশের বিভিন্ন সহযোগিতামূলক কার্যক্রম তুলে ধরেন। তাদের আলোচনায় স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যূদয়ে বঙ্গবন্ধুর দূরদর্শী নেতৃত্বের কথা উঠে আসে।