ঢাকা, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, বুধবার, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিঃ

প্রথম পাতা

ডলারের দাম বেড়ে ১০২

স্টাফ রিপোর্টার
১৮ মে ২০২২, বুধবার

দেশে ডলারের দাম এবার ১০০ টাকা ছাড়ালো। মঙ্গলবার খোলাবাজারে ডলার প্রতি বিক্রি হয়েছে ১০০ থেকে ১০২ টাকা পর্যন্ত। অন্যদিকে ব্যাংক ও খোলাবাজারে ডলারের দামের পার্থক্য ১২ টাকা ছাড়িয়ে গেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশে রপ্তানি আয়ের তুলনায় আমদানি বেশি হওয়ায় চাপ পড়েছে ডলারের ওপর। সেই অনুযায়ী সরবরাহ না থাকায় ডলারের সংকট দেখা দিয়েছে। এতে নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়েছে ডলারের বাজার। ক্রমেই বেড়ে চলেছে দাম। বিপরীতে কমছে টাকার মান। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাজার বিবেচনায় ডলারের দর ৮৭ টাকা ৫০ পয়সা নির্ধারণ করেছিল। তবে ব্যাংকগুলো বিক্রি করছে এর চেয়ে ১২ টাকা বেশি দরে। ব্যাংক ও খোলাবাজারে ডলারের দামের পার্থক্য আগে কখনো এত বেশি হয়নি। দাম বৃদ্ধির ফলে বিদেশগামী যাত্রী ও পর্যটকরা বিপাকে পড়েছেন। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় আমদানি অস্বাভাবিক বেড়ে গেছে। ফলে চাহিদা বাড়ায় বাজারে ডলারের সংকট দেখা দিয়েছে। আমদানির লাগাম টেনে ধরা ছাড়া ডলারের বাজার স্বাভাবিক হবে না বলেও মত দিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা। ওদিকে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করেও দামে লাগাম টানা যাচ্ছে না ডলারের দামে। বাজার স্বাভাবিক রাখতে ডলার বিক্রি অব্যাহত রেখেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
মঙ্গলবার মতিঝিল ও পল্টন এলাকার মানি চেঞ্জারসহ খোলাবাজারে মার্কিন ডলার ১০০ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ১০২ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। যা একদিন আগেও ৯৬ থেকে ৯৭ টাকায় বিক্রি হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনার কারণে দীর্ঘসময় মানুষ দেশের বাইরে যাননি। ফলে এখন করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় অনেক মানুষ চিকিৎসার প্রয়োজনে বা ঘুরতে দেশের বাইরে যাচ্ছেন। আবার আগামী মাসেই হজগামী যাত্রীরা সৌদি আরব যাবেন। ফলে ডলারের চাহিদা অনেক বেড়েছে। সেই অনুপাতে সরবরাহ কম থাকায় ডলারের দামও অনেক বেশি বেড়ে গেছে। ৯ মাসে বাংলাদেশি টাকার বিপরীতে ডলারের দর বেড়েছে ৩ দশমিক ১৮ শতাংশ। তবে খোলা বাজারে বেড়েছে আরও বেশি। আর ব্যাংকের বাইরে এখন ডলার পাওয়াই যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, বর্তমানে অনেক বেশি সংখ্যাক মানুষ দেশের বাইরে ঘুরতে বা চিকিৎসার কাজে যাচ্ছেন। ফলে ডলারের চাহিদা অনেক বেশি বেড়ে গেছে। কিন্তু সেই তুলনায় সরবরাহ অনেক কম।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে, গত বছরের ৫ই আগস্ট আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে প্রতি ডলার ৮৪ টাকা ৮০ পয়সায় বিক্রি হয়। এক বছরেরও বেশি সময় ধরে এই একই জায়গায় স্থির ছিল ডলারের দর। এরপর থেকেই শক্তিশালী হতে থাকে ডলার। এতে দুর্বল হচ্ছে টাকার মান। চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের সাড়ে ১০ মাসে গত সোমবার পর্যন্ত (২০২১ সালের ১লা জুলাই থেকে ১৬ই মে পর্যন্ত) ৫২০ কোটি (৫.২০ বিলিয়ন) ডলার বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এরপরও বাজারের অস্থিরতা কাটছে না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমাদের রপ্তানি আয়ের তুলনায় আমদানি বেশি- এ কারণে ডলারের ওপর চাপ প?ড়ে?ছে। ব্যাংকগুলোর চাহিদা অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংক ডলার সরবরাহ করছে। এখন পর্যন্ত ব্যাংকগু?লোর চাহিদার বিপরী?তে ৫ বিলিয়ন ডলার বেশি বিক্রি করা হয়েছে। যখনই প্রয়োজন হবে আরও ডলার সরবরাহ করা হবে। আশার কথা আমাদের রপ্তানি বাড়ছে। নিত্যপ্র?য়োজনীয় খাদ্যপণ্য ছাড়া অন্যান্য পণ্যের আমদানিতে গড় মার্জিনসহ আমরা বিভিন্ন বিধিনিষেধ দিয়েছি। আশা করছি, খুব শিগগিরই বাজার স্থিতিশীল হয়ে যাবে।
পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ও ব্র্যাক ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. আহসান এইচ মনসুর মনে করেন, ডলারের দাম কমাতে হলে আমদানি কমানো ছাড়া এখন আর অন্য কোনো বিকল্প নেই। যদি এটা করা না যায় তাহলে রিজার্ভের ওপর চাপ আরও বাড়বে। কয়েক মাস আগেও রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গিয়েছিল। এখন ৪২ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এসেছে।

 

প্রথম পাতা থেকে আরও পড়ুন

   

প্রথম পাতা সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status