দেশ বিদেশ
এডিপি অনুমোদন
পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ
স্টাফ রিপোর্টার
১৮ মে ২০২২, বুধবার
- এডিপি’র আকার ২,৪৬,০৬৬ টাকা - বৈদেশিক উৎস থেকে ৯৩ হাজার কোটি টাকা
-কর্মসূচির আওতায় মোট প্রকল্প ১,৪৩৫টি
পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ দিয়ে ২০২২-২৩ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) অনুমোদন করেছে সরকার। এ খাতে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৭০ হাজার ৬৯৬ কোটি টাকা। যা মোট বরাদ্দের ২৮ দশমিক ৭৩ শতাংশ। গত অর্থবছরেও এ খাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল।
অন্যদিকে আগামী অর্থবছরের জন্য বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার দুই লাখ ৪৬ হাজার ৬৬ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। যার মধ্যে অভ্যন্তরীণ উৎস হতে অর্থায়ন ১ লাখ ৫৩ হাজার ৬৬ কোটি ৯ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক উৎস হতে অর্থায়ন ৯৩ হাজার কোটি টাকা। এ ছাড়া স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান বা করপোরেশনের ৯ হাজার ৯৩৭ কোটি ১৮ লাখ টাকার এডিপিও অনুমোদিত হয়েছে। যার মধ্যে অভ্যন্তরীণ উৎস হতে অর্থায়ন ৭ হাজার ১০৪ কোটি ২ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক উৎস হতে অর্থায়ন ২ হাজার ৮৩৩ কোটি ১৬ লাখ টাকা। সুতরাং স্বায়ত্তশাসিত বা করপোরেশনের প্রকল্পসহ এডিপি’র সর্বমোট আকার দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৫৬ হাজার ৩ কোটি টাকা।
২০২২-২০২৩ অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় মোট প্রকল্প ১,৪৩৫টি। এর মধ্যে বিনিয়োগ প্রকল্প ১,২৪৪টি, কারিগরি সহায়তা প্রকল্প ১০৬টি এবং স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা/করপোরেশনের নিজস্ব অর্থায়নে ৮৫টি প্রকল্প। এ ছাড়া আগামী অর্থবছরে প্রস্তাবিত এডিপিতে বরাদ্দবিহীন অননুমোদিত নতুন প্রকল্প ও বৈদেশিক সাহায্য প্রাপ্তির সুবিধার্থে বরাদ্দবিহীন অননুমোদিত নতুন প্রকল্প সংখ্যা ৮০৯টি।
খাতভিত্তিক সর্বোচ্চ বরাদ্দ পাওয়া ১০ প্রকল্প: আগামী অর্থবছরে খাতভিত্তিক সর্বোচ্চ বরাদ্দ পেয়েছে পরিবহন ও যোগাযোগ খাত। এ খাতে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে প্রায় ৭০ হাজার ৬৯৬ কোটি টাকা। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত। এ খাতে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে প্রায় ৩৯ হাজার ৪১২ কোটি টাকা। এর পরের অবস্থান শিক্ষা খাতের। আগামী অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে প্রায় ২৯ হাজার ৮১ কোটি টাকা। যা মোট বরাদ্দের ১১ দশমিক ৮২ শতাংশ। এ ছাড়া গৃহায়ন ও কমিউনিটি সুবিধাবলী খাতে প্রায় ২৪ হাজার ৪৯৭ কোটি টাকা (৯.৯৬%); স্বাস্থ্য খাতে প্রায় ১৯ হাজার ২৭৮ কোটি টাকা (৭,৮৩%); স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন খাতে প্রায় ১৬ হাজার ৪৬৫ কোটি টাকা (৬.৬৯%); কৃষি খাতে প্রায় ১০ হাজার ১৪৪ কোটি টাকা (৪.১২%); পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ খাতে প্রায় ৯ হাজার ৮৫৯ কোটি টাকা (৪.০১%); শিল্প ও অর্থনৈতিক সেবা খাতে প্রায় ৫ হাজার ৪০৭ কোটি টাকা (২,২০%); এবং বিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তি খাতে প্রায় ৪ হাজার ১৬৮ কোটি টাকা (১.৬৯%) বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এই ১০টি খাতে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে প্রায় ২ লাখ ২৯ হাজার ৭ কোটি টাকা বা ৯৩.০৭%।
মন্ত্রণালয়/বিভাগভিত্তিক সর্বোচ্চ বরাদ্দ (১০টি): এবার সর্বোচ্চ বরাদ্দ পাওয়া বিভাগ হলো স্থানীয় সরকার বিভাগ। স্থানীয় সরকার বিভাগে প্রায় ৩৫ হাজার ৮৪২ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এর পরেই রয়েছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ। এ বিভাগে প্রায় ৩১ হাজার ২৯৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া বিদ্যুৎ বিভাগে প্রায় ২৪ হাজার ১৩৯ কোটি টাকা; বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে প্রায় ১৬ হাজার ১১ কোটি টাকা; স্বাস্থ্য সেবা বিভাগে প্রায় ১৫ হাজার ৮৫১ কোটি টাকা; রেলপথ মন্ত্রণালয়ে প্রায় ১৪ হাজার ৯২৯ কোটি টাকা; মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগে প্রায় ১৪ হাজার ১ কোটি টাকা; প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রায় ৯ হাজার ২৯০ কোটি টাকা এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে প্রায় ৭ হাজার ৯৩৮ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
সর্বোচ্চ বরাদ্দপ্রাপ্ত ১০টি প্রকল্প: এদিকে প্রকল্প খাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ পেয়েছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প। এ প্রকল্পে প্রায় ১৩ হাজার ৩৯৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচি প্রকল্পে (পিইডিপি-৪) প্রায় ৮ হাজার ৭৫৯ কোটি টাকা; মাতারবাড়ি ২৬০০ মেঃ ও আন্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কোল ফায়ার্ড পাওয়ার প্রজেক্টে প্রায় ৬ হাজার ৫৫৪ কোটি টাকা; হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সমপ্রসারণ (১ম পর্যায়) প্রকল্পে প্রায় ৬ হাজার ১৯ কোটি টাকা; পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পে প্রায় ৫ হাজার ৮০৯ কোটি টাকা; কোভিড-১৯ ইমার্জেন্সি রেসপন্স অ্যান্ড প্যানডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস (ডব্লিউবি-জিওবি) প্রকল্পে প্রায় ৪ হাজার ২৫৪ কোটি টাকা; বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু নির্মাণ প্রকল্পে প্রায় ৩ হাজার ৮৫১ কোটি টাকা; ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ প্রকল্পে প্রায় ৩ হাজার ৭০৩ কোটি টাকা; এক্সপানশন অ্যান্ড স্ট্রেংদেনিং অব পাওয়ার সিস্টেম নেটওয়ার্ক আন্ডার ডিপিডিসি এরিয়া প্রকল্পে প্রায় ৩ হাজার ৫৯ কোটি টাকা এবং ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (লাইন-৬) প্রকল্পে প্রায় ২ হাজার ৮৮৩ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।