ঢাকা, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

বাংলারজমিন

শখের কবুতরে স্বাবলম্বী ফাহিম

এ. জে লাভলু, বড়লেখা (মৌলভীবাজার) থেকে
১৮ মে ২০২২, বুধবার
mzamin

পড়ালেখার পাশাপাশি ২০১২ সালে মো. শাহরিয়ার ফাহিম শখের বসে কয়েক জোড়া কবুতর কিনে আনেন। এরপর সেগুলো লালন-পালন করেন। কয়েকদিন পর কবুতরগুলো ডিম দেয়। পরে তা থেকে ফুটে বাচ্চা হয়। এরপর বাণিজ্যিকভাবে কবুতর পালনের চিন্তা আসে ফাহিমের। বর্তমানে ফাহিমের খামারে ২০ জাতের কবুতর ও বিভিন্ন প্রজাতির ৮ জাতের পাখি রয়েছে। কবুতর পালনের পাশাপাশি বার্ডস কেয়ার নামে তার একটি পাখির খাদ্যের দোকানও রয়েছে। সেখানে পাখি বিক্রির পাশাপাশি পশু-পাখির ওষুধও বিক্রি করা হয়। পাখি ও খাদ্য বিক্রি করে ফাহিম প্রতি মাসে ৬০-৭০ হাজার টাকা আয় করছেন। 
অবশ্য ফাহিমকে শুরতেই পরিবারের বাধার মুখে পড়তে হয়েছে। তবে সব বাধা ডিঙিয়ে তিনি আজ সফল।

বিজ্ঞাপন
ফাহিমকে দেখেই উপজেলার অনেকে অনুপ্রাণিত হচ্ছেন। তারাও এখন কবুতর পালনে ঝুঁকছেন। ফাহিম বড়লেখা পৌরসভার পাখিয়ালা এলাকার মৃত মো. আব্দুল মতিনের ছেলে। তিনি ভাই-বোনের মধ্যে সবার বড়। বড়লেখা সরকারি কলেজ থেকে তিনি স্নাতক ডিগ্রি শেষ করেছেন। 
সরজমিন ফাহিমের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, দ্বিতল বাড়ির ছাদের দুইপাশে টিনের ছাউনির ঘর। ঘরের চারপাশ কাঠ ও তারের নেট দিয়ে ঘেরা। খামারের ভেতর কবুতরের পাশাপাশি বিভিন্ন জাতের পাখি রয়েছে। পাখিদের ডাকে বাড়িটি সবসময় মুখরিত থাকে। ফাহিম পাখিগুলোকে খাবার দিচ্ছিলেন। যত্ন নিচ্ছিলেন। ফাহিম জানান, তার খামারে বর্তমানে ২০ জাতের কবুতর ও বিভিন্ন প্রজাতির ৮ জাতের পাখি রয়েছে। এরমধ্যে ফেন্সি, রেসার, গিরিবাজ কবুতরের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। অন্য পাখিগুলোর মধ্যে বাজরিগর, ককাটিয়েল, অস্ট্রেলিয়ান ঘুঘু পাখির চাহিদাও আছে। একজোড়া কবুতর ১৫শ’ থেকে সর্বোচ্চ ৩০ হাজার টাকা দাম। এরমধ্যে রেসার কবুতর সর্বোচ্চ ২০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়। ফাহিম ২০২০ ও ২০২১ সালের সিলেট বিভাগীয় পর্যায়ে কবুতর রেসে ঢাকা ভৈরব থেকে ১৫০ কিলোমিটার আকাশ পথে রেসে অংশগ্রহণ করে পুরস্কার পেয়েছেন। মো. শাহরিয়ার ফাহিম বলেন, অনেক পরিশ্রম করে তিনি কবুতর খামারটি গড়েছেন। প্রথমে পরিবারের কেউ চাইতো না যে কবুতর পালন করি। কিন্তু এখন কেউ আর বাধা দেন না। তিনি বলেন, এখন আমাকে দেখেই অনেকে পাখি পালনে আগ্রহী হচ্ছেন। তাদের অনেকে আমার কাছ থেকে পাখি নিচ্ছেন। বিভিন্ন পরামর্শ নিচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, পরিশ্রম করলে যে কেউ সফলতা অর্জন করতে পারবেন। আমাদের সমাজের অনেকে আছেন যারা সব সময় চাকরির পেছনে ছুটছেন। তাদের উচিত চাকরির পেছনে না ছুটে ভালো কোনো কাজে লেগে থাকা। তাহলে সফলতা আসবেই।  পাথারিয়া গাংকুল মনসুরিয়া ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসার আইসিটি প্রভাষক পানিধার গ্রামের বাসিন্দা সঞ্জীব সরকার বলেন, এক বছর ধরে আমি বাড়ির ছাদে কবুতর পালন শুরু করেছি। মূলত  ফাহিমের খামার দেখে কবুতর পালনে উদ্বুদ্ধ হয়েছি। আর আমারও শখ ছিল। যে কারণে তা সম্ভব হয়েছে। বর্তমানে আমার কাছে ৩০-৩৫ জোড়া দেশি ও ফেন্সি কবুতর আছে। আমি ফাহিমের দোকান থেকে পাখির খাদ্য ক্রয় করি।  বড়লেখা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মুহাম্মদ তাজউদ্দিন বলেন, লেখাপড়ার পাশাপাশি কবুতর পালন করে ফাহিম স্বাবলম্বী হয়েছেন। ফাহিমের মতো এখনকার তরুণরা যদি লেখাপড়ার পাশাপাশি এভাবে গবাদিপশু-পাখি পালন শুরু করেন। তাহলে দেশে বেকারত্ব কমবে। অপরাধ কমবে। দেশ এগিয়ে যাবে।

 

বাংলারজমিন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

বাংলারজমিন সর্বাধিক পঠিত

সিন্ডিকেট চক্রের ঈদ বাণিজ্য/ ট্রেনের ১০৫৩ টাকার এসি চেয়ার ২৫০০

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status