দেশ বিদেশ
দূরপাল্লার বাসে যাত্রী কম
গাবতলীর চেকপোস্টে কড়াকড়ি, সতর্ক অবস্থানে পুলিশ
স্টাফ রিপোর্টার
১০ ডিসেম্বর ২০২২, শনিবারবিএনপি’র গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে গাবতলীর চেকপোস্টে সতর্ক অবস্থানে পুলিশ। ঢাকার উদ্দেশ্যে আসা যানবাহনে চলছে তল্লাশি। সেইসঙ্গে রয়েছে বাড়তি নজরদারি। পুলিশের পাশাপাশি মোতায়েন করা হয়েছে আনসার ব্যাটালিয়নের সদস্যদের। সরজমিন দেখা যায়, গতকাল সকাল থেকেই আমিন বাজার ব্রিজ সংলগ্ন চেকপোস্টে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে দারুস সালাম থানা পুলিশ। তাদের সঙ্গে বাড়তি ফোর্স হিসেবে রয়েছে আনসার সদস্যরা। আগে থেকেই তাদের নিয়মিত চেকপোস্টের কার্যক্রম ছাড়াও আইন শৃঙ্খলা বাহিনী আরও সতর্ক ও বাড়তি নজরদারি বাড়িয়েছে। দূরপাল্লার ছেড়ে আসা পরিবহনগুলো থামিয়ে চালাচ্ছে তল্লাশি। কারও কাছে সন্দেহজনক কোনোকিছু পেলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। যাত্রীদের কাছে কোনো ধরনের অস্ত্র, মাদক ও জঙ্গি সংশ্লিষ্টতা আছে কিনা সেটি খতিয়ে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।
ভয়ে অনেকে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঢাকামুখী হচ্ছে না। গাবতলীর বাস টার্মিনাল ঘুরে দেখা যায় যাত্রীশূন্য। দূরপাল্লার ছেড়ে আসা গাড়ি কম। দু্তুএকটা বাস আসলেও সেগুলো ১০ থেকে ১২ জন যাত্রী নিয়ে ঢাকায় এসেছে। এদিকে ঢাকা থেকে বাইরে যাওয়া যাত্রীর সংখ্যাও কম। ঢাকার যাত্রী কম থাকায় অন্য যে যাত্রীরা এসেছেন তারা কেউ কেউ ৬-৭ ঘণ্টা ধরে অপেক্ষারত রয়েছেন। কয়েকটি বাসের মালিক বিএনপি’র সমাবেশকে কেন্দ্র করে কোনো অরাজকতা সৃষ্টি হয় কিনা সেজন্য আজ সকাল থেকে বাস চলাচল বন্ধ রাখার কথাও জানিয়েছেন। গাবতলী বাস টার্মিনালের জে আর পরিবহনের কাউন্টার মাস্টার মানারুল বলেন, গাড়ি খুব কম চলছে। ১২-১৩ জন যাত্রী নিয়ে ঢাকায় আসছে গাড়ি। সমাবেশকে ঘিরে লোকজন বাইরে বের হচ্ছে কম। ঢাকার ভিতর থেকে বাইরের মানুষের মধ্যে বেশি আতঙ্ক কাজ করছে। সকাল থেকে ২টা পর্যন্ত আমাদের গাড়ি থাকে ১২-১৪টি। সেখানে মাত্র গেছে ৩টি। এদিকে ঢাকায় ফিরেছে একটা মাত্র গাড়ি। এই গাড়িটিও সকালে ছাড়ার কথা ছিল। যাত্রী কম থাকায় এখন দুপুর হয়ে যায় ছাড়তে। বাইরে কাউন্টার থেকে যাত্রী না থাকার কথা আমাদের জানিয়েছে। এদিকে ঢাকার ভিতরেও যাত্রী না থাকায় আমরা গাড়ি ছাড়তে পারছি না। ভয়ভীতি এবং আতঙ্কে লোকজন ঢাকায় আসছে না। সাকুরা পরিবহনের ম্যানেজার ফারুক হোসেন বলেন, সকাল থেকে এই পর্যন্ত ৮টা গাড়ি গেছে। দূরপাল্লার গাড়ি দুই-একটা আসলেও তাতে এক-দুই জন যাত্রী আসে।
জরুরি ছাড়া এই মুহূর্তে আসছে না কেউ। এক একটি বাসে ৩৬ আসন আছে। যাওয়ার বুকিং মোটামুটি থাকলেও আসার বুকিং একদম খারাপ। এর একটাই কারণ সমাবেশকে ঘিরে। কমফোর্ট পরিবহনের কর্মচারী জুয়েল বলেন, অন্যদিনের তুলনায় গতকাল টার্মিনালে যাত্রী অনেক কম ছিল। ঢাকা থেকে বের হচ্ছে মোটামুটি কিন্তু বাইরে থেকে কম আসছে। আজ সকাল থেকে একটা কিংবা দুইটা গাড়ি যেতে পারে এরপর বন্ধ থাকবে। পরিস্থিতি বুঝে গাড়ি চালানোর সিদ্ধান্ত নেবো। কমফোর্ট লাইনের ম্যানেজার লিটন বলেন, যাত্রী কম আসছে। ৭টা ৪৫ মিনিটে একটা গাড়ি এসেছে এতে মাত্র ১৯ জন যাত্রী এসেছে গোপালগঞ্জ থেকে। কাউন্টারে ৬ ঘণ্টা ধরে অপেক্ষা করছেন শেখ সুমা। তিনি বলেন, আমরা ফরিদপুর যাবো। এই গাড়িটা ছাড়ার কথা ছিল সাড়ে ১০টায় এখন শুনেছি ৩টায় ছাড়বে। ৬ ঘণ্টা শুধু এই টার্মিনালে এসে বসে আছি। কাউন্টার থেকে বলেছে সমাবেশের কারণে যাত্রী কম, সেজন্য কিছু যাত্রী হলে ৩টার দিকে গাড়ি ছেড়ে যাবে। দারুসসালাম থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) বায়েজীদ মোল্লা মানবজমিনকে বলেন, এই চেকপোস্টে তল্লাশি আমাদের সারা বছরই থাকে। তবে এখন আমাদের সঙ্গে বাড়তি ফোর্সসহ আনসার সদস্যরা রয়েছেন। এই চেকপোস্টে বাইরে থেকে আসা সকল যানবাহনে যাত্রীদের তল্লাশি চালানো হচ্ছে। কারও কাছে অবৈধ কোনোকিছু পেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে।