খেলা
সাগরিকায় ইতিহাসের অপেক্ষা
ইশতিয়াক পারভেজ, চট্টগ্রাম থেকে
১০ ডিসেম্বর ২০২২, শনিবার‘মিশন পূর্ণ হতে আর একটি পদক্ষেপ বাকি। চলো, করে ফেলি।’ চট্টগ্রাম আসার আগে বাংলাদেশ দলের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক লিটন দাস এমনটাই লিখেছেন নিজের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। তার নেতৃত্বেই ভারতের বিপক্ষে এক ম্যাচ বাকি থাকতে সিরিজ জিতে নিয়েছে টাইগাররা। মিরপুর শেরেবাংলা মাঠে প্রথম দুই ম্যাচে অসাধারণ খেলে ভারতকে দ্বিতীয়বারের মতো ওয়ানডে সিরিজে হারায় বাংলাদেশ। আজ শেষ ম্যাচ জিতলেই প্রথমবারের মতো ভারতকে হোয়াটওয়াশ করার কৃতিত্ব দেখাবে টাইগাররা। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে (সাগরিকা) আজ দুপুর ১২টায় মুখোমুখি হবে দুই দল। এই ম্যাচের আগে টাইগাররা যখন ফুরফুরে তখন ভারত দলে চিন্তার কালো মেঘ। নিয়মিত অধিনায়ক রোহিত শর্মা ইনজুরির কারণে ছিটকে গেছেন দল থেকে। নেই কুলদীপ সেন ও দীপক চাহারও। গতকাল লোকেশ রাহুলকে অধিনায়ক করে শেষ ওয়ানডের জন্য ১৪ সদস্যের দল ঘোষণা করেছে বিসিসিআই।
সে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ক্রিকেটার। তবে আমরা প্রতিপক্ষের চেয়ে ভালো খেলতেই মনোযোগী। আমরা যে অবস্থায় আছি আমাদের বিশ্বাস আছে যে আমরা নিজেদের যোগ্যতাতেই ভালো করবো।’ ২০১৫ তেও মিরপুরে ভারতের বিপক্ষে প্রথম দুই ম্যাচেই ওয়ানডে সিরিজ জয় নিশ্চিত করে ফেলেছিল বাংলাদেশ। সেবার শেষ ম্যাচ অবশ্য হেরে গিয়েছিল টাইগাররা। ক্রিকেট শক্তির মধ্যে পাকিস্তান, নিউজিল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হোয়াইটওয়াশ করার অভিজ্ঞতা আছে বাংলাদেশের। এছাড়া কেনিয়া, আয়ারল্যান্ড, স্কটল্যান্ড ও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেও রয়েছে এমন কৃতিত্ব। এ পর্যন্ত ৮২ ওয়ানডে সিরিজ খেলে ১৫টিতে প্রতিপক্ষ দলকে হোয়াটওয়াশ করেছে টাইগাররা। গতকাল সকাল ৯টায় বাংলাদেশ দলের অনুশীলন থাকলেও তা পিছিয়ে শুরু হয় বেলা সাড়ে ১১ টায়। প্রশ্ন হচ্ছে শেষ ম্যাচে টাইগার শিবিরে কোনো পরিবর্তন আসবে কিনা। জানা গেছে এই ম্যাচে ইয়াসির আলী চৌধুরী রাব্বির খেলার সম্ভবনা রয়েছে। তবে তাকে কার পরিবর্তে খেলানো হবে তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। গুঞ্জন রয়েছে ব্যর্থ নাজমুল হোসেন শান্ত অথবা আফিফ হোসেন ধ্রুব বাদ পড়তে পারেন। কিংবা স্পিনার নাসুমকে বাদ দিয়ে চট্টগ্রামের ছেলে ইয়াসিরকে খেলানো হতে পারে। পেসার তাসকিনের খেলার সম্ভাবনার কথা শোনা গেলেও তাকে নিয়ে হয়তো ঝুঁকি নিবে না দল।
আজ একাদশে দেখা যেতে পারে তরুণ পেসার হাসান মাহমুদকে। সিরিজে এগিয়ে থাকা বাংলাদেশ মানসিকভাবে থাকবে চনমনে। ভারতের সঙ্গে বারবার কাছে গিয়ে হেরে যাওয়ার যে মানসিক দেয়াল ছিল তা ভেঙে গেছে। এই অসম্ভব সম্ভব হয়েছে মেহেদী হাসান মিরাজের দারুণ ব্যাটিংয়ে। প্রথম ম্যাচে ১৮৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৯ উইকেট হারায় টাইগাররা ৫১ রান বাকি থাকতে। সেখান থেকে শেষ উইকেট জুটিতে মোস্তাফিজুর রহমানকে নিয়ে জয় ছিনিয়ে আনেন মিরাজ। দ্বিতীয় ম্যাচে আগে ব্যাট করতে নেমে ৬৯ রানে ৬ উইকেট হারানো দলকে খাদের কিনারা থেকে টেনে তোলেন এই অফস্পিন অলরাউন্ডার। করে ফেলেন নিজের ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরিও। তার অসাধারণ ব্যাটিংয়ে ২৭১ রানের লক্ষ্য ছুড়ে দেয় বাংলাদেশ। ম্যাচট সহজেই জিতে যাচ্ছিল টাইগাররা। কিন্তু ইনজুরি আক্রান্ত আঙুল নিয়ে ৫১ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে দলকে প্রায় জিতিয়ে দিয়েছিলেন ভারতের অধিনায়ক রোহিত। তবে শেষ বলে ৫ রানের জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ। দুটি ম্যাচে মিরাজ ম্যাজিক হলেও তা যে প্রতিটিতেই সম্ভব নয় তা ভালোভাবেই অনুমেয়। প্রথম ওয়ানডেতে বাংলাদেশ হারতে বসেছিল টপ অর্ডারের ব্যাটারদের ব্যর্থতায়। এ নিয়ে নিজের চিন্তার কথা জানিয়েছেন ফিল্ডিং কোচ ম্যাকডারমট। তিনি বলেন, ‘এটি আমাদের নিয়মিত একটি চিন্তার কারণ হয়ে আছে। তবে আশা করি এখানে (চট্টগ্রাম) ভালো উইকেট হবে, শটের জন্য দারুণ। আমাদের লক্ষ্য ৪০তম ওভার পর্যন্ত আমাদের সেরা পাঁচ ব্যাটারের মধ্যে একজন থাকা।