ঢাকা, ২৯ মার্চ ২০২৪, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিঃ

শেষের পাতা

সুরমা উপচে সিলেট নগরে পানি, দুর্ভোগ

ওয়েছ খছরু, সিলেট থেকে
১৭ মে ২০২২, মঙ্গলবার
mzamin

ঘুমে ছিলেন সিলেট নগরের উপ-শহরবাসী। রাতে তেমন বৃষ্টি হয়নি। স্বস্তি ছিল। কিন্তু সকালে অন্য দৃশ্য। সড়কে হাঁটু পানি। কারও কারও ঘরে পানি ঢুকেছে। উপ-শহরের এক তৃতীয়াংশ এলাকাজুড়ে অথৈ পানি। পাশেই সুরমা। খাল দিয়ে পানি প্রবেশ করে উপ-শহরে। এ কারণে গতকাল দিনভর উপ-শহর এলাকায় দুর্ভোগ চরমে ছিল।

বিজ্ঞাপন
খোদ উপ-শহরেই ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েন। ভাসমান ছিল কেবল প্রধান সড়ক। গলিপথের সড়ক ছিল পানিতে টইটম্বুর। দক্ষিণ সুরমার নদী তীরবর্তী বিস্তীর্ণ এলাকার অবস্থাও একই। অনেক জায়গায় তীর উপচে ঢুকেছে বানের পানি। ওই এলাকায় কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। গেল কয়েক বছরের মধ্যে এমন দৃশ্য সিলেটে দেখা যায়নি। এবার দেখা দেয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে; পাহাড়ি ঢল। সিলেটের বৃষ্টি কিছুটা কমেছে। কিন্তু পানি আসা কমছে না। এ কারণে প্রতিদিনই নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। সর্বশেষ নগরের নিচু এলাকায়ও বন্যার পানি আঘাত হেনেছে। এতে করে মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। কেন ডুবছে সিলেট নগর- এমন প্রশ্নের জবাবে সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নুর আজিজুর রহমান মানবজমিনকে জানিয়েছেন- সিলেট নগরের অনেক জায়গা নদীর লেভেল থেকে নিচে। এ কারণে পানি ঢুকে পড়ে। আবার উপ-শহর, ছড়ারপাড়, শেখঘাট এলাকা দিয়ে যেসব ছড়া রয়েছে সেগুলো দিয়ে পানি প্রবেশ করে নগর ডুবে যায়। এজন্য নগর দিয়ে প্রবাহিত খালের মুখে স্লুইস গেট নির্মাণ এবং যেসব এলাকা নিচু সেসব এলাকায় পাম্পের মাধ্যমে পানি অপসারণের জন্য প্রকল্প নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে এ নিয়ে একটি স্টাডিও হয়েছে। তিনি জানান- ছড়া বা খালে বর্জ্য ফেলে ভরাট করার কারণেই পানি দ্রুতই লোকালয়ে উঠে যায়। প্রতি সপ্তাহে পরিষ্কার করেও কাজ হচ্ছে না বলে জানান তিনি। এদিকে- গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত সিলেট নগরের নিচু এলাকায় পানি বেড়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। সুরমা নদীর পানি সিলেট নগরে বিপদসীমা অতিক্রম না করলেও কাছাকাছি রয়েছে। উজানে ঢল অব্যাহত থাকায় দু’একদিনের মধ্যে সিলেট নগরেও সুরমার পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে- সুরমার পানি কানাইঘাটে বিপদসীমার প্রায় দুই মিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কানাইঘাট ও জকিগঞ্জে কয়েকটি স্থানে সুরমার ডাইক ভেঙে পানি প্রবেশ করেছে। অমলসীদে কুশিয়ারা নদীর পানি গত তিনদিন ধরে বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। সুরমা ও কুশিয়ারার পানি বেড়ে যাওয়ার কারণে কানাইঘাট ও জকিগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। দুই উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। সীমান্তবর্তী উপজেলার কমপক্ষে অর্ধশতাধিক গ্রামের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। কানাইঘাট সদরেও বন্যার পানি উঠে যাওয়ায় দুর্ভোগে রয়েছে মানুষ। সিলেটের শেরপুর পয়েন্টেও কুশিয়ারার পানি বেড়েছে। এতে করে ওই এলাকায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে গোয়াইনঘাটের উপজেলা সদরের বিভিন্ন এলাকা। বিশেষ করে উপজেলা কমপ্লেক্সেও পানি উঠে গেছে। এতে করে দাপ্তরিক কাজকর্মেও ব্যাঘাত ঘটছে। জাফলং, বিছনাকান্দিসহ কয়েকটি এলাকায় ঢল আসা কমলেও সারি নদীর পানি বিপদসীমার প্রায় ৫০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে করে জৈন্তাপুর ও গোয়াইনঘাটের বিস্তীর্ণ এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। কোম্পানীগঞ্জেও বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। নৌকা ডুবে নিখোঁজ ২:  সদর উপজেলায় খারইল বিল নামকস্থানে পানির প্রবল স্রোত আর ঝড়ের কবলে পড়ে নৌকাডুবির ঘটনায় দু’জন নিখোঁজ হয়েছেন। গতকাল সকাল থেকে ডুবুরি দল খারইল বিলের একাধিক স্থানে নিখোঁজদের সন্ধানে অভিযান পরিচালনা শুরু করে। গতকাল রাত সাড়ে ১০টার দিকে খারইল বিলের মধ্যবর্তীস্থানে নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে। নৌকায় থাকা ছয়জন সাঁতার কেটে তীরে উঠলেও নিখোঁজ রয়েছেন দুইজন। তারা রায়েরগাঁও থেকে কালারুকা যাচ্ছিলেন। নিখোঁজরা হলেন- পুটামারা গ্রামের মৃত রিফাত আলীর পুত্র আছকন্দর আলী ও রায়েরগাঁও গ্রামের ইকন্দর আলীর পুত্র রজাখ আলী।

 

শেষের পাতা থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

শেষের পাতা সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status