ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

শেষের পাতা

যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণে ৬ দফা সুপারিশ

শনাক্তের বাইরে ১৫ শতাংশ যক্ষ্মা রোগী

স্টাফ রিপোর্টার
৬ ডিসেম্বর ২০২২, মঙ্গলবার

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাম্প্রতিক হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় ৩ লাখ ৬০ হাজার মানুষ যক্ষ্মায় নতুন করে আক্রান্ত হন। এর মধ্যে প্রায় ১৫ শতাংশ যক্ষ্মা রোগী শনাক্ত করা সম্ভব হয় না। অথচ দেশে যক্ষ্মা চিকিৎসায় সাফল্যের হার ৯৭ শতাংশ। উন্নত ও বিনামূল্যে যক্ষ্মা রোগের চিকিৎসা থাকা সত্ত্বেও জনসচেতনতার অভাব ও সামাজিক কুসংস্কারের কারণে এই বিপুল সংখ্যক রোগী শনাক্তের বাইরে থেকে যাচ্ছে। গতকাল রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত ‘যক্ষ্মা এবং কোভিড-১৯ সম্পর্কিত অ্যাডভোকেসি এবং নেটওয়ার্কিং’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে এই তথ্য তুলে ধরা হয়। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা নারী মৈত্রী আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির লাইন ডিরেক্টর ডা. খুরশীদ আলম।

নারী মৈত্রীর নির্বাহী পরিচালক শাহীন আক্তার ডলির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জোবায়দুর রহমান, জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির (এনটিপি) সহকারী পরিচালক আফজালুর রহমান, ব্র্যাকের সংক্রামক রোগ কর্মসূচির প্রধান ডা. শায়লা ইসলাম প্রমুখ। এতে ব্র্যাক, আইসিডিডিআর,বি’, পার্টনারস ইন হেলথ ইন ডেভেলপমেন্ট (পিএইচডি), এ আর কে ফাউন্ডেশন ,খুলনা মুক্তিসেবা সংস্থা (কেএমএসএস), নাটাব, বিজিএমইএ,  পায়াকট বাংলাদেশ সহ বিভিন্ন  সহযোগী সংগঠনের কর্মকর্তাসহ মোট ৫০ জনেরও বেশি প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, দেশে প্রতিদিন অন্তত ৯৭৮ জন যক্ষ্মায় আক্রান্ত হচ্ছেন এবং এর মধ্যে ১৬ জন ওষুধ প্রতিরোধী (এমডিআর) যক্ষ্মায় আক্রান্ত। এই পরিস্থিতিতে যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণে অ্যাডভোকেসি কার্যক্রম জোরদার, জনসচেতনতা সৃষ্টি, সংশ্লিষ্ট সকল বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও স্টেকহোল্ডারদের সমন্বিতভাবে কাজ করা, দাতা সংস্থাগুলোর অর্থায়ন বাড়ানো, সঠিকভাবে শিশু যক্ষ্মা রোগী শনাক্তকরণ, কোভিড-১৯ পরিস্থিতি বিবেচনায় যক্ষ্মা চিকিৎসাকে আরও অগ্রাধিকার দেয়া জরুরি।

এতে ‘যক্ষ্মা বিষয়ক’ উপস্থাপনা তুলে ধরেন নারী মৈত্রীর স্বাস্থ্য ও পুষ্টি বিভাগের পরিচালক মাসুদা বেগম। মূল প্রবন্ধে বলা হয়, যক্ষ্মা বিশ্বের ১০টি প্রধান মরণব্যাধির একটি। বাংলাদেশের জন্য এটি বড় জনস্বাস্থ্য সমস্যা।

বিজ্ঞাপন
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বিশ্বের যে ৩০টি দেশে যক্ষ্মা রোগীর সংখ্যা সর্বাধিক, তার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ১.২ মিলিয়ন মানুষের জীবন বাঁচাতে বাংলাদেশ আন্তরিকভাবে কাজ করছে। এই লক্ষ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, অর্থায়ন প্রতিষ্ঠান- স্টপ টিবি পার্টনারশিপ এবং অন্যান্য সহযোগীদের সঙ্গে বাংলাদেশ যৌথভাবে কাজ করছে। প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. খুরশীদ আলম বলেন, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অধীনে জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি যক্ষ্মা নির্মূলে দীর্ঘদিন থেকে কাজ করে আসছে। যা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। তিনি ঢাকার ঘনবসতি এলাকার মানুষের মধ্যে যক্ষ্মা বিষয়ক সচেতনতা তৈরিতে কাজ করার জন্য নারী মৈত্রীকে ধন্যবাদ জানান। শাহীন আক্তার ডলি বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশে যক্ষ্মা কীভাবে নির্মূল করা যায় সে ব্যাপারে আমরা সবাই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির যক্ষ্মা প্রতিরোধ কর্মসূচি সফল করতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিশেষ অনুদানের মাধ্যমে আরও শক্তিশালী করতে সরকারের কাছে অনুরোধ করেন।  

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে জাতিসংঘে (United Nations High Level Meeting-UNHLM) বিভিন্ন দেশের বিশ্বনেতারা যক্ষ্মা মহামারি অবসানের লক্ষ্যে একটি বৈঠক করেন। যক্ষ্মা মোকাবিলা করার আন্তর্জাতিক কৌশল নির্ধারণ করতে এটাই ছিল বিশ্বনেতাদের প্রথম বৈঠক। তারই ধারাবাহিকতায় ২০২৩ সালে আরও একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

যেখানে কমিউনিটি অ্যাডভোকেসির গুরুত্ব ও যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশের ভূমিকা বিশেষভাবে প্রাধান্য দেয়ার কথা বলা হয়। এই ব্যাপারে সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রধানকে অবহিত করার ব্যাপারে সভায় অভিমত তুলে ধরা হয়।

 

শেষের পাতা থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

শেষের পাতা সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status