খেলা
সাকিবের পারফরম্যান্সে বিস্মিত নন আতহার
স্পোর্টস রিপোর্টার, চট্টগ্রাম থেকে
১৭ মে ২০২২, মঙ্গলবারচট্টগ্রাম টেস্টের ৫দিন আগে দল থেকে ছিটকে গিয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। ১০ই মে করোনা আক্রান্ত সাকিব শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম টেস্ট খেলতে পারছেন না এমনটা জানিয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিও দেয় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। কিন্তু হঠাৎ নাটকীয়তা, করোনা নেগেটিভ হয়ে চট্টগ্রামে উড়ে আসেন সাকিব। ফের বদলে যায় দলের পরিকল্পনা। মাত্র একদিন ৩০ মিনিট ব্যাটিং অনুশীলন করেই মাঠে নেমে পড়েন। শঙ্কা ছিল তার বোলিং সক্ষমতা নিয়ে। কিন্তু সব উড়িয়ে টসে হেরে বল করতে নামা বাংলাদেশকে উপহার দেন ৩ উইকেট। দুইদিনে সবমিলিয়ে করেছেন ৩৯ ওভার বোলিং। সেখানে ১২ ওভার লঙ্কান ব্যাটাররা কোন রানই দিনে পারেননি। সবমিলিয়ে খরচ করেছেন ৬০ রান।
বিজ্ঞাপন
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে ১০ উইকেট নিয়েছে স্পিনাররা। দুই পেসার শরীফুল ইসলাম ও খালিদ আহমেদ একেবারে খারাপ বল করেনি। কিন্তু অফ স্পিনার নাঈম নিয়েছেন ৬ উইকেট। তাইজুল ইসলাম একটি ও সাকিব নিয়েছেন তিন উইকেট। স্পিনারদের এমন সাফল্য সাকিবের কারণেই বলে মনে করেন আতহার। তিনি বলেন, ‘সে (সাকিব) যেভাবে বল করেছে তা সত্যি অসাধারণ। প্রথমদিন ১৯ ওভারে মাত্র ২৭ রান খরচ করেছে। আজও (গতকাল) তিনি হ্যাটট্রিক করতে পারতেন। আমরা দেখেছি নাঈম হাসান ৬ উইকেট নিয়েছে। তার এই সাফল্যের পিছনে অন্যতম ভূমিকা সাকিবই রেখেছে। অন্যপ্রান্তে সাকিব চাপ প্রয়োগ করেছে বলেই নাঈমের কাজটা সহজ হয়েছে।’
সাকিবের দলে ফেরাটা দারুণ প্রভাব ফেলেছে বলে মনে করেন আতহার আলী। তিনি বলেন, ‘দেখেন সাকিব যদি দলে না থাকে তাহলে আমাদের তার পরিবর্তে দু’জনকে খেলাতে হতো। একজন ব্যাট্যার একজন বোলার। ও ফিরে আসাতে আমাদের রণ পরিকল্পনাই বদলে গেছে। তার জন্য আমার দোয়া থাকলো সে যেন সুস্থ থাকে ভালো থাকে। আর দলের জন্য সব সময় প্রস্তুত থাকে।’
এছাড়াও চট্টগ্রামে বাংলাদেশের স্পিনারদের পারফরম্যান্স নিয়ে দারুণ খুশি আতহার আলী খান। কারণ সাগরিকায় টেস্ট উইকেট সব সময়ই ব্যাটিং স্বর্গ। তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রামের যে উইকেট বিশেষ করে টেস্টে তা ব্যাটারদের জন্য দারুণ। এখানে টেস্টে এখন পর্যন্ত সব মিলিয়ে ৪৫টা সেঞ্চুরি হয়েছে। তার মানে এখানে বল করা এত সহজ নয়। কিন্তু সাকিব, নাঈমরা দারুণ বল করেছে। তারা লাইন লেন্থ ঠিক রেখেছে, সময়মতো উইকেট তুলে নিয়েছে। নাঈম দু’দিনই প্রথম সেশনে সাফল্য এনেছে। সাকিব আজতো (গতকাল) হ্যাটট্টিকের সুযোগ তৈরি করেছিল। দেখেন এখানে অ্যাঞ্জেলো দারুণ একটি ইনিংস খেলেছে। শেষ দিকেও ওদের ব্যাটাররা জুটি গড়েছে। কিন্তু আমাদের স্পিনাররা দারুণ বোলিংয়েই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে রুখে দাঁড়াতে পেরেছে। ম্যাচে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশের স্পিনাররা যেমন সফল তেমন শ্রীলঙ্কা দলেও আছে। সবশেষ দক্ষিণ আফ্রিকাতে স্পিানের বিপক্ষে টাইগার ব্যাটারদের ব্যর্থতা ছিল চোখে পড়ার মতো। তবে আতহার আলী মনে করেন দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে সাগরিকার উইকেটে অনেক পার্থক্য। তাই এখানে ধৈর্য্য ধরলে বড় ইনিংস খেলা সম্ভব। তিনি বলেন, ‘দক্ষিণ আফ্রিকাতে যে উইকেট এখানে তার চেয়ে ভালো। আমি মনে করি না আমাদের চিন্তার মতো বড় কোনো কারণ আছে। তামিম ইকবাল, মাহমুদুল হাসান জয়, লিটন দাসরা ফর্মে আছে। তারা ধৈর্য ধরে খেললে আশা করি আমাদেরও বড় ইনিংস খেলা সম্ভব। আমার চিন্তা শুধু মুমিনুল ও মুশফিককে নিয়ে। ওরা ফর্মে নেই। তবে মুমিনুল ও মুশফিবের কিন্তু এখানে ব্যাটিং রেকর্ড দারুণ ভালো। তারা চাইলে বড় ইনিংস খেলতে পারবে কারণ অতীতেও মুমিনুল এখানে বড় ইনিংস খেলেছে। তার অনেকগুলো সেঞ্চুরি আছে। আমি বিশ্বাস করি আমরা ভালো করবো।’