দেশ বিদেশ
দৃশ্যমান উন্নয়ন হয়েছে তবে বৈষম্যও গভীর হয়েছে- ড. দেবপ্রিয়
অর্থনৈতিক রিপোর্টার
২ ডিসেম্বর ২০২২, শুক্রবারবাংলাদেশের নাগরিক প্ল্যাটফরম ফর এসডিজি’র আহ্বায়ক ও সিপিডি বিশেষ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, সামপ্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশে উচ্চ আয় ও জীবনযাত্রার মান উন্নত হওয়ার ক্ষেত্রে দৃশ্যমান উন্নয়ন হয়েছে। কিন্তু বৈষম্যও গভীর হয়েছে। ফলে প্রান্তিক মানুষ উন্নয়নের সুফল পায়নি। বুধবার রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টার ইন-এ এক সংবাদ সম্মেলনে বেশ কয়েকটি উপ-আঞ্চলিক পরামর্শ সভা থেকে প্রাপ্ত স্থানীয় মতামত জানাতে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। এতে সভাপতিত্ব করেন নাগরিক প্ল্যাটফরমের কোর গ্রুপ সদস্য এবং সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান। ব্রিফিংয়ের শুরুতে তিনি বলেন, নাগরিক প্ল্যাটফরম স্থানীয় নাগরিক সভাগুলো থেকে মূলত স্থানীয় পর্যায়ে উন্নয়নের আখ্যান বোঝার চেষ্টা করেছে যেখানে নৈতিক, অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক- এই তিনটি বিষয়ের উপর গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। নাগরিক প্ল্যাটফরম চলতি বছরের জুন থেকে অক্টোবরের মধ্যে সাতটি পরামর্শ সভার আয়োজন করেছিল।
এই নাগরিক পরামর্শ সভাগুলোর উদ্দেশ্য ছিল স্থানীয় পরামর্শের ভিত্তিতে একটি বিভাজিত স্তরে উন্নয়ন আখ্যানের বাস্তবতা যাচাই করা এবং এলডিসি উত্তরণকালে স্থানীয় পর্যায়ে উন্নয়ন চ্যালেঞ্জগুলোকে চিহ্নিত করা। বাংলাদেশের ২৫টি জেলার ৫০০ জনেরও বেশি নিয়োজিত নাগরিক সভায় অংশগ্রহণ করেন এবং তাদের মতামত ব্যক্ত করেন। দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, উন্নয়নের এই সময়কালে, সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো দুর্বল হয়ে পড়েছে। এই সংস্থাগুলোর অদক্ষতার কারণে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে অরক্ষিত করে রেখেছে।
কর্মসংস্থানের অভাব, উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি এবং আয় হ্রাসের কারণে মধ্যবিত্তরাও চাপের মধ্যে রয়েছে। ড. দেবপ্রিয় তার উপস্থাপনায় খাতওয়ারি আলোচনা তুলে ধরেন যেখানে তিনি পাঁচটি বিষয়ের উপর গুরুত্ব দেন। তিনি বলেন, দেশব্যাপী প্রাথমিক শিক্ষা বেড়েছে কিন্তু শিক্ষার গুণগত মানের পতন হচ্ছে। এ ছাড়া স্থানীয় পর্যায়ে অনেকেই আর্থিক সঙ্গতির অভাবে শিক্ষা থেকে ঝরে পড়ছে। যে উপবৃত্তি দেয়া হচ্ছে তা দিয়ে সমগ্র শিক্ষার খরচ বহন করা সম্ভব হচ্ছে না। অন্যদিকে স্বাস্থ্য খাতে মানের উন্নয়ন হচ্ছে না। যদিও বড় বড় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হচ্ছে, হাসপাতাল হচ্ছে কিন্তু সেখানে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা হচ্ছে না। স্থানীয় পর্যায়ে বিভিন্ন জায়গায় সুপেয় পানির অভাব এবং পয়ঃনিষ্কাশনের জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে যা স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রেও ঝুঁকির সৃষ্টি করছে। এ ছাড়া সামাজিক সুরক্ষার পরিমাণ পর্যাপ্ত নয়। এ ছাড়া রয়েছে সড়ক নিরাপত্তার অভাবের কথা। সঠিক পরিবহন ব্যবস্থার অভাবের ফলে সড়ক দুর্ঘটনার পরিমাণও ক্রমাগত বেড়ে যাচ্ছে। স্থানীয় পর্যায় থেকে কর্মক্ষেত্র বিষয়ে তিনটি পেশাজীবীদের কথা এসেছে বলে মন্তব্য করেন ড. দেবপ্রিয়। তিনি প্রথমে বলেন- কৃষকদের অর্থনৈতিক ক্ষতি, সীমাবদ্ধ ব্যাংক ঋণ, বীজ ও পণ্যের বাজারে প্রবেশাধিকারে প্রতিবন্ধকতার কথা।