বাংলারজমিন
উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় মুন্নু ফেব্রিক্স
রিপন আনাসারী, মানিকগঞ্জ থেকে
১৭ মে ২০২২, মঙ্গলবারমুনু্ন ফেব্রিক্স লিমিটেড। মানিকগঞ্জের বুকে স্থাপিত উপ-মহাদেশের একটি নেতৃস্থানীয় কম্পোজিট টেক্সটাইল শিল্প। শিল্পবিপ্লবের অগ্রদূত ও সাবেক মন্ত্রী মরহুম হারুনার রশিদ খান মুন্নুর হাতে গড়া স্বনামধন্য এই প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় মুন্নু গ্রুপের বর্তমান চেয়ারম্যান আফরোজা খান রিতার দিকনিদের্শনায় সফলতার সঙ্গে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন তারই মেজ পুত্র উপ-বাবস্থাপনা পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার রাশীদ সামিউল ইসলাম। ১৯৯৪ সালে ১,১৫০.০০ মিলিয়ন টাকা পরিশোধিত মূলধনসহ একটি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এখানে রয়েছে স্পিনিং, উইভিং, ইয়ার্ন ডাইং, প্রিন্টিং, ফিনিশিং এবং গার্মেন্ট ওয়াশিং।
জানা গেছে, মুনু্ন ফেব্রিক্স লিমিটেড-এর স্পিনিং সেকশনে স্পিন্ডেল ও রোটর দিয়ে ১০০% তুলা উৎপন্ন হয়। উইভিং সেকশনে রয়েছে সুদাকোমা এয়ার-জেট সোমেট এবং সুমিত রেপিয়ারের মতো অত্যাধুনিক অসংখ্য তাঁত। ফলে বিভিন্ন ধরনের পপলিন, চেক, স্টাইপ, টুইল্স এবং ডবি বুনতে সক্ষম। ওভেন ডাইং, প্রিন্টিং এবং ফিনিশিং সেকশনে নিজস্ব ল্যাব ও ডিজাইন স্টুডিওতে যেকোনো কালার কম্বিনেশনের সমন্বয়ে প্রিন্ট করা হয়। এ ছাড়া ফিনিশিং ইউনিক ইজিকেয়ার, রিংকল-ফ্রি, ওয়াটার রিপেলেন্ট, পিচ ফিনিশ, ওয়াক্স কোটেড, পেপার টাচ এবং অন্যান্য জিনিস দিয়ে কাপড় তৈরি করা হয়। এ সকল কাপড়ের এক সময় প্রধান ক্রেতা ছিল যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ এবং জাপান।
মুনু্ন ফেব্রিক্স লিমিটেড কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, মুন্নু গ্রুপের চেয়ারম্যান আফরোজা খান রিতার মেজ পুত্র ইঞ্জিনিয়র রাশীদ সামিউল ইসলাম ২০২১ সালে ২৮শে এপ্রিল উপ-বাবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি র্যাঙ্কিং-এর দিক থেকে বিশ্বের ৮ম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজ থেকে মাস্টার্স ইন ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি অর্জন করেন এবং ইম্পেরিয়াল বিজনেস স্কুল থেকে মাস্টার্স ইন ম্যানেজমেন্ট ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি মুনু্ন ফেব্রিক্স লিমিটেড-এর দায়িত্ব নেয়ার পূর্বে জাপানের নিশান মটরস করপোরেশন এবং যুক্তরাজ্যে অবস্থিত রোলস্-রয়েল এ কর্মরত ছিলেন। তার অর্জিত গবেষণা বর্তমানে কোম্পানির কাজে সম্পূর্ণরূপে নিয়োজিত করেছেন। তার অক্লান্ত পরিশ্রম ও গতিশীল প্রচেষ্টায় স্বল্প সময়ের মধ্যে কোম্পানিটি সফলতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১২ বছরের তৃতীয় প্রান্তিকের তুলনায় এবারই তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ ২০২২) সর্বোচ্চ বিক্রয় ছিল টাকা ৩৪০.৭০ মিলিয়ন এবং ইপিএস ছিল ০.০৫ টাকা। এই তিন প্রান্তিকে (জুলাই-মার্চ ২০২২) মোট বিক্রয় ছিল টাকা ১,০৮৫.৩০ মিলিয়ন এবং ইপিএস দাঁড়ায় ০.১০ টাকা যেখানে গত তিন প্রান্তিকে (জুলাই-মার্চ ২০২১) মোট বিক্রয় ছিল টাকা ৮৭০.৫৯ মিলিয়ন এবং ইপিএস ছিল ০.০৪ টাকা অর্থাৎ গত তিন প্রান্তিকের তুলনায় এবার দ্বিগুণ-এরও বেশি লাভ হয়েছে। নতুন প্রজন্মের বাবস্থাপনায় গতিশীল নেতৃত্বাধীন, বিচক্ষণতা ও দক্ষকর্মী বাহিনীর সম্মিলিত অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে অচিরেই কোম্পানি তার সাফল্যের শীর্ষে পৌঁছাতে পারবে এবং হারানো গৌরব ফিরে পাবে বলে বাজার বিশ্লেষকরা মনে করেন। উল্লেখ্য, বিগত ৫ অর্থ বছরের পরিসংখ্যানে মুনু্ন ফেব্রিক্স লিমিটেড-এর বিক্রয়মাত্রা ক্রমশ বেড়েই চলছে। ২০১৬-২০১৭ সালে বিক্রয় ছিল টাকা ৪৭৪.৩৯ মিলিয়ন, ২০১৭-১৮ সালে বিক্রয় ছিল টাকা ৫৯৭.১৯ মিলিয়ন, ২০১৮-১৯ সালে বিক্রয় ছিল টাকা ৯৮৮.২১ মিলিয়ন, ২০১৯-২০ সালে বিক্রয় ছিল টাকা ১,০৭১.০৭ মিলিয়ন এবং ২০২০-২১ সালে বিক্রয় ছিল টাকা ১,২৬৪.০২ মিলিয়ন। অর্থাৎ ২০১৭-১৮ সালের তুলনায় ২০২০-২১ সালের বিক্রয় বেড়েছে ১১২ শতাংশ।