ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

প্রথম পাতা

ছাত্রলীগের সম্মেলন

শেষ মুহূর্তে বেড়েছে প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপ

হাসনাত মাহমুদ
৩০ নভেম্বর ২০২২, বুধবার

বেশ কয়েকবার সময় বদলের পর আগামী ৬ই ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ছাত্রলীগের ৩০তম জাতীয় সম্মেলন। প্রায় সাড়ে চার বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এই সম্মেলনে পদপ্রত্যাশী রয়েছেন শতাধিক নেতা। এরই মধ্যে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন তারা। এদের মধ্যে বাছাই করা হবে দু’জন। পদপ্রত্যাশীদের অনেকেই দীর্ঘদিন ধরে কাজ করেছেন। বিভিন্ন দুর্যোগ এবং মহামারিতে সাধারণ মানুষের কাছে গিয়ে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। এর বাইরেও বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা ব্যতিক্রমধর্মী কর্মকাণ্ডেও জড়িত ছিলেন। ছাত্রলীগের দায়িত্বে থাকা আওয়ামী লীগের নেতারা জানান, ছাত্রলীগের কমিটিতে যারা ত্যাগী এবং বিভিন্ন সময় শিক্ষার্থী এবং দেশের  মানুষের জন্য কাজ করেছেন তাদেরকেই বেশি গুরুত্ব দেওয়া হবে। এরমধ্যে যারা আওয়ামী লীগ পরিবারের সন্তান এবং বিতর্কমুক্ত তাদেরকেই বেছে নেওয়া হবে।  ছাত্রলীগের শীর্ষ দুই পদে আসতে আগ্রহী  পদপ্রত্যাশীদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে রাজনীতির আঁতুড়ঘরখ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিন।

বিজ্ঞাপন
নিজ নিজ সমর্থকদের নিয়ে তারা সারা দিন সরগরম রাখছেন মধুর ক্যান্টিন। এছাড়াও আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে পদচারণার পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়ার পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে কথা বলে নিজেদের অবদানের কথা প্রচার করার চেষ্টা করছেন।

   শীর্ষ নেতৃত্ব বাছাইয়ের ক্ষেত্রে এবার মূল ব্যবধান গড়ে দিতে পারে বয়সসীমা। ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্রে ২৭ বছরের কথা উল্লেখ থাকলেও মূলত এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তই হবে চূড়ান্ত। গতবারের সম্মেলনে তিনি বয়সসীমা ২৮ নির্ধারণ করেছিলেন। অনেক পদপ্রার্থীদের প্রত্যাশা করোনা, সেশনজটসহ নানাদিক বিবেচনায় এবারের বয়সসীমা অন্তত ৩০ বছর করবেন। যদিও বিভিন্ন সূত্র বলছে, এবার বয়সসীমা হতে পারে ২৯ বছর। সেটি হলে নেতৃত্বের দৌড় থেকে ছিটকে যাবেন অনেক হেভিওয়েট প্রার্থী। ৬ই ডিসেম্বর সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে সম্মেলনের উদ্বোধন করার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার।  এদিকে, বিগত কয়েকটি কমিটির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের পরিচয় বিবেচনা করে দেখা যায়, অধিকাংশ কমিটিতে মাদারীপুর, বরিশাল এবং খুলনা অঞ্চল প্রাধান্য পেয়েছে। এবারো এইসব অঞ্চল থেকে নেতৃত্বে আসার সম্ভাবনা বেশি বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে, যোগ্যতা বিবেচনায় অন্য অঞ্চলের প্রার্থীদেরও প্রাধান্য দেয়া হবে। এর বাইরে প্রার্থী বিবেচনায় উত্তরবঙ্গ, চট্টগ্রাম এবং ময়মনসিংহ অঞ্চলেরও প্রাধান্য থাকবে।

 সেই হিসেবে এবারের সম্মেলনে বরিশাল অঞ্চল থেকে আলোচনায় আছেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ (ইনান), উপ-বিজ্ঞান সম্পাদক সবুর খান কলিন্স, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরিফুজ্জামান আল ইমরান, কর্মসংস্থান বিষয়ক উপ-সম্পাদক খাদিমুল বাশার জয় এবং গণশিক্ষা বিষয়ক উপ-সম্পাদক সোলাইমান ইসলাম মুন্না, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক সম্পাদক ইমরান জমাদ্দার। এদের প্রায় সবাই দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে সক্রিয়ভাবে জড়িত আছেন। বয়সের কারণে বাদ না পড়লে এদের মধ্যে যে কেউ চলে আসতে পারেন সংগঠনটির শীর্ষ নেতৃত্বে। ফরিদপুর অঞ্চল থেকে আলোচনায় আছেন আইনবিষয়ক সম্পাদক ফুয়াদ হোসেন শাহাদাত এবং কর্মসংস্থান সম্পাদক রনি মুহাম্মদ। যদিও তারা উভয়ই ৩০ বছরে পদার্পণ করেছেন। এছাড়া, বুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এবং কেন্দ্রীয় কমিটির তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক খন্দকার জামি উস সানী, সহ-সভাপতি রাকিব হোসেন আলোচনায় আছেন। চট্টগ্রাম অঞ্চল থেকে নেতৃত্ব পাওয়ার দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন বর্তমান ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সাদ বিন কাদের চৌধুরী। 

তিনি করোনা মহামারির সময় থেকে শুরু করে এখনো পর্যন্ত অক্সিজেন সেবা দেয়ার মাধ্যমে প্রশংসা কুড়িয়েছেন এ ছাড়াও আছেন উপ-সমাজসেবা সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত। করোনার সময় কঠোর লকডাউনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অসহায়দের মাঝে খাবার বিতরণ করে জাতিসংঘের রিয়েল হিরো পদে ভূষিত হন। এই অঞ্চলে আরও আলোচনায় আছেন সহ-সভাপতি ইফতেখার আহমেদ সজীব, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক তাহসান আহমেদ রাসেল, শিক্ষা ও পাঠচক্র সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মাসুদ লিমন, সহ-সভাপতি মাজহারুল ইসলাম শামীম এবং উপ-সাহিত্য সম্পাদক জয়জিৎ দত্ত।   উত্তরবঙ্গ থেকে আলোচনায় রয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন, ক্রীড়া সম্পাদক আল আমিন সিদ্দিকী সুজন এবং প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক হায়দার মোহাম্মদ জিতু। যদিও তাদের তিনজনের বয়সই ৩০ ঊর্ধ্ব। এর বাইরে রয়েছেন- উপদপ্তর সম্পাদক আহসান হাবিব এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম সবুজ, সরুপ মিয়া সোহাগ। খুলনা বিভাগ থেকে রয়েছেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক বরিকুল ইসলাম বাঁধন ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক নাহিদ হাসান শাহিন, উপ-বিজ্ঞান বিষয়ক সম্পাদক খন্দকার আহসান হাবিব। 

ময়মনসিংহ থেকে আলোচনায় আছেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মেহেদী হাসান তাপস, তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক উপ-সম্পাদক রাশিদ শাহরিয়ার উদয় এবং সহ-সম্পাদক শাকের আহমেদ আল আমিন। যদিও মেহেদী হাসানের বয়স ইতিমধ্যে ৩০ বছর পার হয়েছে। সার্বিক বিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় বলেন, ছাত্রলীগের নেতৃত্ব গঠনের ক্ষেত্রে যোগ্য, বিতর্কমুক্ত এবং যারা আওয়ামী লীগ পরিবারের সন্তান তাদেরকেই বিবেচনা করা হবে। বয়সের ব্যাপারে গঠনতন্ত্রে অনূর্ধ্ব ২৭ বছর আছে। এটাকেই বিবেচনা করা হবে। তবে, এই ব্যাপারটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা-ই সিদ্ধান্ত নেন। এবারো তার সিদ্ধান্ত অনুযায়ীই নেতৃত্ব নির্বাচন করা হবে।

প্রথম পাতা থেকে আরও পড়ুন

   

প্রথম পাতা সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status