ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

ফুটবল বিশ্বকাপ

নির্ভার ফ্রান্স, শেষ ষোলোয় যাওয়ার লড়াই ‘ডি’ গ্রুপের বাকি তিন দলের

স্পোর্টস ডেস্ক
৩০ নভেম্বর ২০২২, বুধবার
mzamin

টানা দুই জয়ে বিশ্বকাপের শেষ ষোলোর টিকিট পেয়েছে ফ্রান্স। নক আউট পর্বের টিকিট পাওয়ার সুযোগ রয়েছে ‘ডি’ গ্রুপের বাকি তিন দল- অস্ট্রেলিয়া, ডেনমার্ক ও তিউনিসিয়ার। কঠিন সমীকরণ মেলানোর লড়াইয়ে আজ মাঠে নামছে দলগুলো। আজ রাত ৯টায় গ্রুপপর্বে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে শক্তিশালী ফ্রান্সের মুখোমুখি হবে তিউনিসিয়া। একই সময়ে আল জানুস স্টেডিয়ামে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে লড়বে ডেনমার্ক। অস্ট্রেলিয়াকে ৪-১ গোলে হারিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করে ফ্রান্স। নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে ডেনমার্ককে ২-১ গোলে হারায় ফরাসিরা। ফ্রান্সের কাছে হেরে বিশ্বকাপ শুরুর পর নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে তিউনিসিয়াকে ১-০ গোলে হারায় অস্ট্রেলিয়া। নিজেদের প্রথম ম্যাচে ডেনমার্কের সঙ্গে ড্র করে তিউনিসিয়া।   দুই জয়ে ৬ পয়েন্ট নিয়ে ‘ডি’ গ্রুপের শীর্ষে ফ্রান্স।

বিজ্ঞাপন
৩ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে অস্ট্রেলিয়া। সমান এক পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় ডেনমার্ক এবং চতুর্থ তিউনিসিয়া। গোলপার্থক্যে এগিয়ে ডেনিশরা।  শেষ ষোলোর লড়াইয়ে টিকে থাকতে হলে ফ্রান্সের বিপক্ষে জয়ের বিকল্প নেই তিউনিসিয়ার।

 জয় পেলেও অস্ট্রেলিয়া ও ডেনমার্ক ম্যাচের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে আফ্রিকান দলটিকে। অস্ট্রেলিয়া হারলে ডেনমার্ক ও ডেনমার্কের পয়েন্ট হবে সমান ৪। তিন পয়েন্ট নিয়ে বাদ পড়বে অস্ট্রেলিয়া। সেক্ষেত্রে ডেনমার্ক ও তিউনিসিয়ার মধ্যে যে দল গোল ব্যবধানে এগিয়ে থাকবে, সে দল পাবে শেষ ষোলোর টিকিট। অস্ট্রেলিয়া-ডেনমার্ক ম্যাচ ড্র হলেও সুযোগ থাকবে তিউনিসিয়ার। সেক্ষেত্রে ২ পয়েন্ট নিয়ে বিদায় নেবে ডেনিশরা। তিউনিসিয়া ও অস্ট্রেলিয়ার পয়েন্ট হবে সমান ৪। তখন গোলের হিসেবে এক দল পাবে নক আউট পর্বের টিকিট। আর অস্ট্রেলিয়া জিতে গেলে ডেনমার্ক ও তিউনিসিয়া বাদ। অস্ট্রেলিয়ার জয়ের রাতে ফ্রান্স যদি হেরে যায় তখন দুই দলেরই পয়েন্ট হবে ৬। সেক্ষেত্রে গোল পার্থক্যে এগিয়ে থাকা দল হবে গ্রুপচ্যাম্পিয়ন। তিউনিসিয়ার বিপক্ষে নিঃসন্দেহে ফেভারিট দল ফ্রান্স। কিলিয়ান এমবাপ্পে, অলিভিয়ের জিরু, কামাভিঙ্গাদের নিয়ে তারার মেলা দিদিয়ের দেশমের স্কোয়াডে। বিপরীতে তিউনিসিয়া দলে নেই খ্যাতনামা কোনো ফুটবলার।

  ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে চোখ বুলালেও দুই দলের শক্তি-সামর্থ্যের পার্থক্য আঁচ করা যায়। র‌্যাঙ্কিংয়ের চতুর্থ দল ফরাসিরা। ২৬ ধাপ পিছিয়ে ৩০তম দল তিউনিসিয়া। সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সেও দারুণ ছন্দে রয়েছে ফ্রান্স। নিজেদের সবশেষ ৫ ম্যাচের ৪টিই জিতেছে দিদিয়ের দেশমের দল। নিজেদের সবশেষ ৫ ম্যাচের ৩টি হেরেছে তিউনিসিয়া। বিশ্বকাপে টানা দুই ম্যাচে জয়শূন্য দলটি আসর শুরুর আগে ব্রাজিলের কাছে ৫-১ গোলে বিধ্বস্ত হয়েছিল। আন্তর্জাতিক ফুটবলে মোট ৯ বার দেখা হয়েছে ফ্রান্স ও তিউনিসিয়ার। ৩টি ম্যাচ ফ্রান্স জিতেছে। ২ জয় তিউনিসিয়ার। বাকি ৪ ম্যাচ ড্র হয়েছে।  বিশ্বকাপে তিউনিসিয়ার চেয়ে ফ্রান্সের ইতিহাস অনেক সমৃদ্ধ। ২০১৮ বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়নরা তাদের প্রথম শিরোপা জিতেছিল ১৯৯৮ আসরে। বিশ্বকাপে মোট তিনবার সেমিফাইনাল খেলেছে ফ্রান্স। কোয়ার্টার ফাইনাল খেলেছে দু’টি। কাতারের আগে বিশ্বকাপের ২১ আসরের মধ্যে ১৫টি বিশ্বকাপ খেলেছে ফ্রান্স। কাতারের আগে মোট ৫ বার বিশ্বকাপে অংশ নিয়েছে তিউনিসিয়া। কখনো গ্রুপপর্বের বাধা টপকাতে পারেনি আফ্রিকান দলটি। টানা দুই জয়ে শেষ ষোলো নিশ্চিত করায় স্বস্তির হাওয়া বইছে ফ্রান্স শিবিরে। ফরাসি টিভি চ্যানেল ‘টিএফ১’ জানিয়েছে, নক আউট  পর্ব নিশ্চিত হওয়ায় তিউনিসিয়ার বিপক্ষে খেলোয়াড়দের বিশ্রাম দিতে পারেন দিদিয়ের দেশম। টিএফ১-কে ফ্রান্স কোচ বলেন, ‘দুই জয়ে আমরা শেষ ষোলো নিশ্চিত করেছি। এটা আমাদের মানসিক শান্তি দিচ্ছে। গ্রুপচ্যাম্পিয়ন হয়ে পরের ধাপে যাওয়ার জোর সম্ভাবনা রয়েছে আমাদের। কেননা অস্ট্রেলিয়ার চেয়ে আমাদের গোল অনেক বেশি।’

 ফ্রান্সকে হারিয়ে শেষ ষোলোর সম্ভাবনা জিইয়ে রাখতে নিজেদের উজাড় করে দেবে তিউনিসিয়ার খেলোয়াড়রা। দলটির কোচ জলিল কাদরি বলেন, ‘আমরা (অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে) একটা ম্যাচ হেরেছি। শেষ ম্যাচে (ফ্রান্সের বিপক্ষে) নিজেদের সর্বোচ্চটা দিয়ে লড়াই করব আমরা।’ আগের ম্যাচের ভুলগুলো শুধরে ফ্রান্সের বিপক্ষে লড়াইয়ে নামার কথা জানান জলিল কাদরি। তিউনিসিয়ার কোচ বলেন, ‘পারফরম্যান্সে বদল  আনার জন্য দলে কোনো পরিবর্তন আনবো না আমরা। তবে প্রতিপক্ষ দল যেভাবে খেলে তার আদলে স্কোয়াড সমন্বয় করার চেষ্টা করব। আমাদের পারফরম্যান্স বিশ্লেষণ করে ভুলগুলো শুধরানোর চেষ্টা করব।’ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ফেভারিট ডেনমার্ক। ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ের দশম দল ডেনিশরা। ২৮ ধাপ পিছিয়ে অস্ট্রেলিয়ার অবস্থান ৩৮তম। সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স অবশ্য কথা বলছে সকারুদের পক্ষে। নিজেদের সবশেষ ৫ ম্যাচের ৪টিই জিতেছে অস্ট্রেলিয়া। বিপরীতে নিজেদের সবশেষ ৫ ম্যাচে ২ জয় ডেনমার্কের। আন্তর্জাতিক ফুটবলে এর আগে ৪ বার দেখা হয়েছে দুই দলের। এরমধ্যে দুই ম্যাচে জয় পেয়েছে ডেনমার্ক। একটি জিতেছে অস্ট্রেলিয়া।

 সবশেষ ২০১৮ বিশ্বকাপে দেখা হয়েছিল দুই দলের। সেই ম্যাচটি ১-১ গোলে ড্র হয়। কাতার বিশ্বকাপের আগে সমান ৫টি করে আসরে অংশ নিয়েছে ডেনমার্ক ও অস্ট্রেলিয়া। তবে  অস্ট্রেলিয়ার চেয়ে বিশ্বকাপ ইতিহাস সমৃদ্ধ ডেনমার্কের। ২০০৬ সালে বিশ্বকাপে নিজেদের সেরা সাফল্য পেয়েছে সকারুরা। সেবার শেষ ষোলোতে খেলেছিল অস্ট্রেলিয়া। ১৯৯৮ সালে সেরা সাফল্য পায় ডেনমার্ক। সেবার কোয়ার্টার ফাইনাল খেলেছিল দলটি। বাকি ৪ আসরের তিনটিতেই শেষ ষোলো নিশ্চিত করেছে ডেনমার্ক। শুধু ২০১০ সালে গ্রুপপর্ব থেকে বিদায় নেয় ইউরোপিয়ান দলটি। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে আত্মবিশ্বাসী ডেনিশ মিডফিল্ডার জেস্পার লিন্ডস্টর্ম। তিনি বলেন, ‘আমরা আত্মবিশ্বাসী। নিজেদের ওপর ভরসা রয়েছে সবার। আমাদের (জয়ের) মানসিকতা রয়েছে।’

ফুটবল বিশ্বকাপ থেকে আরও পড়ুন

   

ফুটবল বিশ্বকাপ সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status