ফুটবল বিশ্বকাপ
কানাডার বিদায়, শীর্ষে ক্রোয়েশিয়া
স্পোর্টস ডেস্ক
২৮ নভেম্বর ২০২২, সোমবার
খেলার আগে বাজে মন্তব্য করে তোলপাড় তুলেছিলেন কানাডার কোচ জন হার্ডম্যান। আর ক্রোয়েশিয়ার কোচ জøাতকো দালিচ বলেছিলেন মাঠেই জবাব দেবেন তারা। মাঠে কানাডার জন্য শুরুটা এর চেয়ে ভালো হতে পারতো না। ম্যাচের মাত্র ৬৮ সেকেন্ডের মাথায় বিশ্বকাপে নিজেদের ইতিহাসের প্রথম গোল পেয়ে যায় কানাডা। কিন্তু এরপর পেরিসিচ-মদরিচরা দেখালেন অভিজ্ঞতা ও পরিপক্ক ফুটবল। গতকাল বিশ্বকাপের ‘এফ’ গ্রুপে কানাডাকে ৪-১ গোলে হারায় ক্রোয়েশিয়া। এতে গ্রুপের শীর্ষে পৌঁছে দালিচের দল। আর বিদায় নিশ্চিত হয় হার্ডম্যানের শিষ্যদের।
আল রাইয়ান খলিফা ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে ম্যাচের শুরুতেই কানাডাকে এগিয়ে নেন বায়ার্ন মিউনিখ তারকা আলফোনসো ডেভিস। প্রথমার্ধে ওটাই ছিল তাদের একমাত্র শট! প্রথম ভালো আক্রমণেই এগিয়ে যায় কানাডা। তাহোন বুখাননের চমৎকার ক্রস দুর্দান্ত হেডে জালে পাঠান ডেভিস।
গতকাল ৮ মিনিটের মধ্যে দুই গোল আদায় করে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেয় ক্রোয়াটরা। ৩৬তম মিনিটে সমতা ফেরান আন্দ্রে ক্রামানিচ। ইভান পেরিসিচের চমৎকার রিভার্স পাসে দূরের পোস্ট দিয়ে জাল খুঁজে নেন জার্মান ক্লাব হফেনহাইমের এ স্ট্রাইকার। ৪৪তম মিনিটে এগিয়ে যায় ক্রোয়েশিয়া। ডি-বক্সের মাথায় বল পেয়ে বুলেট গতির শটে কানাডার গোলরক্ষক বোরিয়ানকে পরাস্ত করেন মার্কো লিভাইয়া। এই গোলে দারুণ অবদান ইয়োসিপ ইউরানোভিচের। মাঝ মাঠ থেকে অনেকটা এগিয়ে যান তিনি। শেষ দিকে এক পর্যায়ে বল হারিয়েও ফেলেন। পরে ফেরত পেয়ে কোনোমতে পা বাড়িয়ে খুঁজে নেন লিভাইয়াকে। বাকিটা সারেন কানাডার রক্ষণে ভীতি ছড়ানো এই ফরোয়ার্ড। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই সুযোগ তৈরি করে কানাডা। ৪৮তম মিনিটে জোনাথন ওসোরিওর শট দূরের পোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যায়। ডেভিসের গোলের পর এটাই ছিল তাদের প্রথম চেষ্টা!
৭০তম মিনিটে ক্রামারিচের দ্বিতীয় গোলে ৩-১ ব্যবধানে এগিয়ে যায় ক্রোয়েশিয়া। পেরিসিচের কাছ থেকে পেনাল্টি স্পটের কাছে বল পেয়ে আলতো টোকায় জায়গা করে নেন ক্রামারিচ। পরে দূরের পোস্ট দিয়ে খুঁজে নেন ঠিকানা। আর ইন্টার মিলান-বায়ার্ন মিউনিখ ঘুরে চলতি মৌসুমে টটেনহ্যাম হটস্পারে যোগ দেয়া পেরিসিচের নাম ওঠে গর্বের রেকর্ডে। বিশ্বকাপের এক ম্যাচে ম্যাচে জোড়া অ্যাসিস্টের কৃতিত্ব দেখানো তৃতীয় বয়স্ক খেলোয়াড় পেরিসিচ (৩৩ বছর ২৯৮ দিন)। তার আগে রয়েছেন ডেনমার্কের মাইকেল লাউড্রপ (৩৪ বছর ১৩ দিন, প্রতিপক্ষ নাইজেরিয়া ১৯৯৮) এবং হাঙ্গেরির লাজলো ফাসেকাস (৩৪ বছর ২৪৩ দিন, প্রতিপক্ষ এল সালভাদর ১৯৮২)।
ম্যাচের যোগ করা সময়ে গোল করে ক্রোয়েশিয়ার বড় জয় নিশ্চিত করেন লভরো মাইয়ের। মিসলাভ অরসিচ বল পায়ে যখন এগিয়ে যান, সামনে তখন কেবল গোলরক্ষক। উপায় না দেখে বেরিয়ে আসেন বোরিয়ান। তাকে এড়িয়ে শট না নিয়ে অরিসিচ পাস দেন পাশাপাশি উঠে আসা মাইয়েরকে। একটু আগেই মাঠে আসা এই মিডফিল্ডার বাকিটা সারেন অনায়াসে। ম্যাচে বল দখল (৫২%-৪৮%) এবং পাস (৪৭২-৪৪২) আদান-প্রদানে এগিয়ে ছিল কানাডা। তবে ক্রোয়াটদের ফুটবল ছিল অপেক্ষাকৃত নিখুত। পুরো ম্যাচে ১৩টি শট নেয় তারা যার ১০টিই ছিল গোলপোস্ট বরাবর। পক্ষান্তরে কানাডার ৮ শটের মাত্র দুটি অনটার্গেটে ছিল।