দেশ বিদেশ
বেড়েছে ক্রীড়া সামগ্রীর দাম আছে সংকটও
নাজমুল হুদা
২৫ নভেম্বর ২০২২, শুক্রবারবিশ্বকাপ মৌসুম এলেই চাহিদা বাড়ে ক্রীড়া সামগ্রীর। এবার সেই চাহিদা নেই। বিক্রেতাদের বেচাকেনাও কমেছে অনেক। দেশের স্টেডিয়াম মার্কেটগুলোতে যেসব ক্রীড়া সামগ্রী বিক্রি হয় তার অধিকাংশই আমদানিনির্ভর। এলসি জটিলতায় আমদানিতেও ব্যাঘাত ঘটেছে। এতে কিছুটা সংকট তৈরি হয়েছে। দামও বেড়েছে। বিশ্বকাপ ফুটবল উপলক্ষে জার্সি বিক্রি হলেও ফুটবল, গ্লাভস, নেট কিংবা বুটের মতো উপকরণের চাহিদা তলানিতে। বিশ্বকাপ ফুটবলে জমজমাট বিক্রির আশায় ছিলেন স্টেডিয়ামের ব্যবসায়ীরা। তারা জানান, বিশ্বকাপ এলে মানুষের খেলাধুলার প্রতি আগ্রহ বাড়ে।
ব্যবসায়ীরা জানান, ডলারের মূল্যবৃদ্ধি ও সংকটের কারণে এসব সামগ্রীর দাম বেড়েছে ২০-২৫ শতাংশ। এতে ক্রেতাদের ওপর যেমন চাপ পড়েছে তেমন ব্যবসায়ীদের বিক্রিও কমেছে। এখন যাদের কেবল প্রয়োজন তারাই এসব সামগ্রী কিনছেন। শখ করে কেউ এখন কিনতে আসছেন না। গুলিস্তান স্টেডিয়াম মার্কেটের অন্তর স্পোর্টসের স্বত্বাধিকারী এমডি বাবুল জানান, এখন ডলারের দাম বেশি। ব্যাংকে এলসি নিচ্ছে না। খেলাধুলার জন্য যা যা লাগে সবই আমদানি করা হয়। বাংলাদেশে শুধু কিছু ফেব্রিকস তৈরি হয়। তাই এখন সবকিছুর দামই বাড়ছে। তিনি বলেন, আমরা আশা করছিলাম বিশ্বকাপে ব্যবসা ভালো হবে। কিন্তু তা হচ্ছে না। স্বাভাবিক সময়ে যা বিক্রি হয় তাই হচ্ছে। শীতে চাহিদা থাকে ব্যাডমিন্টন খেলার। বিশ্বকাপের কারণে ব্যাডমিন্টন খেলার চাহিদাও কমেছে। ফলে র্যাকেট, ফেদার, নেট কিংবা বাল্বের বিক্রিও আশানুরূপ হচ্ছে না। রয়াল স্পোর্টসের মালিক জাকির হোসেন বলেন, একটা ফুটবল দিয়ে ২২ জন খেলে। আর ২২ জন ব্যাডমিন্টন খেললে ২২টা ব্যাট বিক্রি হতো আমাদের। ফুটবল খেলা চলার জন্য তা হচ্ছে না। সবাই রাতে খেলা দেখে। কেউ ব্যাডমিন্টন খেলছে না।
আগে প্রতিদিন ২০-৩০টা ব্যাট বিক্রি করতাম। এ বছর ৫টাও হচ্ছে না। এখন বাজারে পণ্যের দাম বেড়েছে। সংকটও রয়েছে। দুই মাস আগেও ডিআর ফুটবলের দাম ৪৫০ টাকা দিয়ে কিনেছি কিন্তু এখন তা ৬০০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। সব কিছুতেই ২৫ শতাংশ বাড়ছে। গত বিশ্বকাপে একটা প্লেয়ার জার্সি কিনেছি ৬০০-৭০০ টাকায় আর এবার তা ১০০০ টাকা লাগে কিনতে। আমদানি করা বুটের দামও ৪০০-৫০০ টাকা করে বাড়ছে। দেশে কিছু হয় তার দামও বাড়ছে। ব্যবসায়ীরা জানান, করোনার পর থেকে ক্রিকেট পণ্যের চাহিদাও কমেছে। যারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে খেলাধুলা করেন শুধু তারাই প্রয়োজনে ক্রিক্রেট সামগ্রী কিনতে আসেন। সাধারণ মানুষ কিংবা শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্রিকেট খেলার প্রবণতা কম। স্পোর্টস হাউজের মো. রুবেল বলেন, এখন খেলার মাঠ কম। আগের মতো পাড়া মহল্লায় টুর্নামেন্ট হয় না। এজন্য ব্যাট-বলের চাহিদা কমেছে। যারা মাঝেমধ্যে খেলে তারাও খুব প্রয়োজন না হলে কিনতে আসে না। ব্যাডমিন্টনের চাহিদাও কমেছে। শুধু ফুটবলের জার্সি বিক্রি হচ্ছে। বল কেনার ক্রেতাও দেখছি না আমরা। রফিকুল ইসলাম নামের এক বিক্রেতা বলেন, আগে একটা ভালো মানের ব্যাডমিন্টন ১৫০০ টাকায় কিনতাম। কিন্তু এখন তা ২২০০ টাকায় কিনতে হয়। এক সপ্তাহ আগে ৫০০ টাকায় জার্সি কিনছি। এখন তা ৮০০ টাকা হয়েছে। কয়জনের পক্ষে সম্ভব এত দাম দিয়ে খেলার সামগ্রী কিনে দেয়া। ওকে স্পোর্টসের মেহেদী হাসান বলেন, এখন স্পোর্টস সামগ্রীর ব্যবসা খুব খারাপ যাচ্ছে। ব্যাংকে এতদিন এলসি না নেয়ায় সংকট তৈরি হয়েছে। দাম বাড়ছে সবকিছুর।