‘সাকিব গ্রেট ক্রিকেটার বলেই....’

বাংলাদেশে তখন ভোরের আলো ফুটেছে সবে। মেলবোর্নে তখন দুপুর প্রায় ১২টা ছুঁই ছুঁই। ফাইনালের মঞ্চে নামার আগে দুই অধিনায়ক বাবর আজম ও জস বাটলার ঐতিহাসিক মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে সংবাদ সম্মেলনের জন্য অপেক্ষায়। অন্যদিকে টি-টোয়েন্টি বিশ^কাপের আয়োজক সুপার টুয়েলভ থেকে ছিটকে পড়া অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ তখন মাঠে ব্যস্ত ভিন্ন কাজে। একটি গাড়ির কোম্পানির ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে তখন ছবি তুলছেন ভক্তদের সঙ্গে। একেই বলে ভাগ্য! তাসমান পাড়ের ক্রিকেট যোদ্ধারা এখন নিজ দেশে ফাইনালে থাকবেন দর্শক। অন্যদিকে সুপার টুয়েলভ থেকে ছিটকে পড়া বাংলাদেশ দল নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার শেষ নেই। টাইগারদের টি-টোয়েন্টি অভিষ্যৎ নিয়ে আছে প্রশ্ন। তবে ফিঞ্চ জানালেন ভিন্ন কথা। তার মতে সাকিব আল হাসান গ্রেট ক্রিকেটার।

তার নেতৃত্বে বদলে যাবে বাংলাদেশ। তিনি বলেন, ‘সাকিব গ্রেট ক্রিকেটার। তার নেতৃত্বেই বদলে যাবে বাংলাদেশ। আশা করি তোমাদের দল আরও ভালো খেলবে সামনে। ও (সাকিব)  গ্রেট অধিনায়ক বলেই দল উন্নতি করছে।’ 
একদিন বাদেই অস্ট্রেলিয়া বিশ^কাপের ফাইনাল। পাকিস্তান নাকি ইংল্যান্ড চ্যাম্পিয়ন-এ নিয়ে চলছে জল্পনা-কল্পনা। মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডের বাইরে তখন দুই দলের ভক্তদের উল্লাস। বিশেষ করে পাকিস্তানের সমর্থকদের কে পায়! ফাইনালের আগেই মাঠে ভিড় করেছেন দলকে শুভ কামনা জানাতে। গুটি কয়েক ইংলিশ দর্শকও আছেন কিন্তু নীরবেই তারা হাঁটছেন পতাকা নিয়ে। কে জিতবে তার উত্তর যখন কারও জানা  নেই তখন ফিঞ্চ যা বললেন তাতে দুই দলেরই সমান সুযোগ। তিনি বলেন, ‘এটা ফাইনাল  যে কেউ জিততে পারে। অনুমান  সহজ হবে না।’ 
ভক্তদের সঙ্গে ছবি তোলার সময় তার ঠোঁটের কোনে হাসির সেই কষ্টও যেন স্পষ্ট। বাংলাদেশ নিয়ে কথা বলতে বলতে তিনি প্রথমে মৃদু হাসলেন। এমনভাবে মাথা ঝাঁকালেন যেন বলতে চাইলেন আমরাওতো ওদের চেয়ে ভালো করিনি। তবে সেটিতো আর বলতে পারবে না। তাই উত্তর দিলেন সংক্ষেপেই। দৈনিক মানবজমিনকে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ভালো খেলেছে। তবে এখান থেকেই (বাদ পড়া) তাদের আরও শিখতে হবে। যা খেলেছে যতটা দেখেছি তারা শেষটা ভালো করতে পারেনি ভারত-পাকিস্তানের বিপক্ষে।
এটাও একটা শেখার বিষয়। চাপে কেমন করতে হয়।’
দীর্ঘদিন ধরেই একটা খারাপ সময়ের মধ্যদিয়ে যাচ্ছিলেন অ্যারন ফিঞ্চ। তাকে নিয়ে সমালোচনাও কম হচ্ছিল না। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মঞ্চেও অ্যারন ফিঞ্চের ব্যাটে রানের গতি লক্ষ্য করা যাচ্ছিল না। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে জয়ে ফিঞ্চ রান পেয়েছিলেন ঠিকই, কিন্তু তার ধীরগতির ব্যাটিং নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছিলেন। অবশেষে দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান হয়। আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে ফের পুরনো ফর্মে দেখা গিয়েছে অজি অধিনায়ককে। আর তাতেই যেন স্বস্তিতে রয়েছেন। কিন্তু দলকে তিনি টিকিয়ে রাখতে পারেননি বিশ^কাপের রেসে। এর আগের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও অ্যারন ফিঞ্চের ব্যাটে বড় রানের ঝলক ছিল না। এবারো শুরু থেকই সেই চিত্রটাই দেখা  গেছে। তবে নিজেকে নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি নয় ফিঞ্চ। তিনি বলেন, ‘নিজেকে নিয়ে কিছু বলতে চাই না। খারাপ সময় ক্রিকেটেরই অংশ আসা যাওয়া করবেই।’ টি-টোয়েন্টি বিশ^কাপের আগে হুট করেই বাজে ফর্মের কারণে ওয়ানডের নেতৃত্ব ছেড়ে দেন ফিঞ্চ। দলের বোঝা হয়ে না থেকে বিদায়  নেয়াকেই সহজ পথ হিসেবে বেছে নেন তিনি।