শরীর ও মন
ক্যান্সারের অস্পষ্ট উপসর্গসমূহের ব্যাপারে সচেতন হতে হবে
মাহমুদুল হাসান সরদার
১২ নভেম্বর ২০২২, শনিবারদেখা যায় অনেক ক্যান্সারের উপসর্গ প্রকাশ পেতে দেরি হয়। যদি পেটে ব্যথা, কাশি-অনেকদিনের চিকিৎসার পরেও সেরে না ওঠে, তাহলে সেটা ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে। সচেতনতার সহিত এসব বিষয়গুলোকে অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।
শুরুতে ক্যান্সার শরীরে বাসা বেঁধেছে তা নির্ণয় করতে পারলে রোগী ভালো হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আর দেখা গেছে শুধু উপসর্গ উপেক্ষা করে চিকিৎসা গ্রহণে বিলম্ব করার কারণে হাজার হাজার মানুষের ক্যান্সার শরীরে ছড়িয়ে পড়ার কারণে জীবন ঝুঁকির মুখে পড়ছে।
কোনো ব্যক্তি হয়তো সুস্থ জীবনযাপন করছেন, কিন্তু হঠাৎ করেই দেখা গেল যে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। পরে পরীক্ষা করে দেখা গেল তার ক্যান্সার হয়েছে। এরমধ্যে তার কিছু লক্ষণও হয়তো শরীরে দেখা দিয়েছিল কিন্তু সেগুলো তিনি বুঝতে পারেননি, অথবা গুরুত্ব দেননি। পরে দেখা গেল বিলম্ব করার কারণে ক্যান্সার ইতিমধ্যে তার শরীরে অনেক বেশি ছড়িয়ে পড়েছে। তখন চিকিৎসার মাধ্যমে তাকে সারিয়ে তোলা অনেক বেশি কঠিন হয়ে পড়ে।
উপসর্গসমূহ
কোনো কারণ ছাড়াই ওজন কমে যাওয়া, অনেকদিন ধরে খাওয়ায় অরুচি ইত্যাদি। সব পেটের ক্যান্সারের বেলায় একটা সাধারণ উপসর্গ হচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে পেটে ব্যথা। বাওল ক্যান্সারের ক্ষেত্রে ৩ থেকে ৪ সপ্তাহ ধরে ডায়রিয়া।
- কয়েক সপ্তাহ বা তারও বেশি সময় ধরে পেটের ভেতরে অস্বস্তি
- অনবরত ডায়রিয়া
- সবসময় অসুস্থ বোধ করা
- প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত
এসব উপসর্গের কোনো একটি ৩ সপ্তাহ কিম্বা তার চেয়েও বেশি সময় স্থায়ী হলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
এ ছাড়াও আরও কিছু অস্বাভাবিক পরিবর্তন- যেমন পেটে বাড়তি কোনো মাংসপিণ্ড বা লাম্প অথবা মেনোপোজের পরেও রক্ত যাওয়া, বিনা কারণে ওজন কমে যাওয়া- এসবও ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে।
ছবির উৎস, GETTY IMAGES
অনেক সময় ফুসফুসের ক্যান্সারের ক্ষেত্রে যেসব উপসর্গকে রোগীরা তেমন একটা গুরুত্ব দেয় না তার মধ্যে রয়েছে:
- তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে কাশি, কোভিড ছাড়া
- বারবার চেস্ট ইনফেকশন বা বুকে সংক্রমণ
- কাশির সঙ্গে রক্ত
- ক্লান্ত বোধ করা, শক্তি না পাওয়া কিম্বা সবসময় দুর্বল বোধ করা
অনেক উপসর্গ আছে অস্পষ্ট, যেগুলো থেকে বোঝার কোনো উপায় নেই। এ কারণে এসব লক্ষণের ব্যাপারে সতর্ক হওয়া আরও বেশি জরুরি।
কাশি হলে আমরা তেমন একটা গুরুত্ব দেই না। কিন্তু কাশিটা যদি ২-৩ সপ্তাহ ধরে থাকে, অথবা বার বার ফিরে ফিরে সংক্রমণ হচ্ছে, তাহলে সেটা লাঞ্চ ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে।
ক্যান্সারের একটি সাধারণ লক্ষণ- কাশি।
কিছু ক্যান্সার আছে যেগুলোর লক্ষণ দ্রুত দেখা যায় না। অনেক বেশি ছড়িয়ে পড়ার পরেই কেবল উপসর্গগুলো প্রকাশ পেতে শুরু করে। এমন একটি ক্যান্সার হলো প্যাংক্রিয়াটিক ক্যান্সার। এই ক্যান্সার প্রাথমিক স্তরে ধরা পড়ার ঘটনা খুবই কম।
দেখা যায় এই ক্যান্সারটি অন্য কোনো কারণে সিটি স্ক্যান করার সময় হয়তো ধরা পড়লো এবং এটি যখন ধরা পড়ছে তখন সেটি অনেক এডভান্সড স্টেজে চলে গেছে। কিছু কিছু ক্যান্সার যেমন বাওল ক্যান্সার, ব্লাডার ক্যান্সার, লাঞ্চ ক্যান্সার এগুলো একটুখানি সতর্ক হলে আগেভাগেই শনাক্ত করা সম্ভব।
কখন সতর্ক হওয়া প্রয়োজন
কিছু কিছু লক্ষণ বা উপসর্গ আছে সাধারণ অসুখ-বিসুখের ক্ষেত্রেও যেগুলো প্রকাশ পেয়ে থাকে। যার মধ্যে রয়েছে কাশি বা জ্বর।